বেচাকেনা। পুরুলিয়া শহরের বড়হাটে রবিবার। নিজস্ব চিত্র।
টাস্ক ফোর্সের হানা, নজরদারি চলছে। সাম্প্রতিক বৃষ্টিতে জেলায় আনাজের তেমন ক্ষয়ক্ষতি হয়নি বলেও জানাচ্ছে জেলা উদ্যানপালন দফতর। যদিও থলে হাতে বাজারে গিয়ে অন্য ছবি নজরে পড়ছে গৃহস্থের। আনাজের দামে রীতিমতো হাত পুড়ছে তাঁদের।
জেলায় নিম্নচাপের বৃষ্টি শুরু হয়েছে অগস্টের গোড়ায়। তার পরে থেকেই পুরুলিয়ার বিভিন্ন বাজারে আনাজের দাম ঊর্ধ্বমুখী। ক্রেতারা জানাচ্ছেন, ৮০ টাকা কেজি দরের নীচে কার্যত কোনও আনাজই নেই বাজারে। রবিবার পুরুলিয়া শহরের বড়হাটে বেগুনের দর ছিল কেজি প্রতি ৮০ টাকা। ঝিঙে বা কাঁকরোলও বিকিয়েছে একই দরে। রঘুনাথপুর বাজারে বেগুনের দর ছিল প্রায় ১০০ টাকা কেজি। বিনস ও ক্যাপসিকাম বিকিয়েছে ২০০ টাকা দরে। পুরুলিয়া শহরের বড়হাটে বাজার করতে আসা এক ক্রেতা বলেন, “আজ যে দামে কিনছি, কালকেই দর চড়ে যাচ্ছে। একটু-আধটু নয়, দর বাড়ছে চড় চড় করে।” রঘুনাথপুরের বাসিন্দা দুর্গাশঙ্কর মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “আনাজ তো চড়াই। মাংসের সঙ্গে একটু স্যালাডের ভাবনায় শসায় হাত দিতে গিয়েও ছ্যাঁকা খেতে হয়েছে।”
দাম চড়েছে বিভিন্ন শাকেরও। পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা পবিত্র দৈবজ্ঞ জানান, এক আঁটি পালং শাকের দাম ৩০ টাকা। যে পুনকা শাক গত সপ্তাহেও ১০ টাকা প্রতি আঁটি বিক্রি হয়েছে, তার দামও বেড়েছে। মুলো থেকে লাউ, সব কিছুর দরই গত সপ্তাহের চেয়ে বেশি। দাম বৃদ্ধি নিয়ে রঘুনাথপুর বাজারের বিক্রেতা অরূপ রজকের কথায়, “বৃষ্টিতে আনাজে ক্ষয়ক্ষতির কারণে দাম বেড়ে গিয়েছে।” একই ছবি দেখা গিয়েছে, ঝালদা পুরসভা নিয়ন্ত্রিত বাজারেও। ক্রেতাদের প্রশ্ন, দাম তো এক দিনের তফাতে চড়ছে। টাস্ক ফোর্সের কোনও ভূমিকা রয়েছে বলে তো মনে হচ্ছে না!
জেলা পরিষদের কো-মেন্টর জয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, “আনাজের দাম নিয়ে আমাদেরও লোকজনের প্রশ্নের মুখে পড়তে হচ্ছে। টাস্ক ফোর্স করছে কী! জেলা টাস্ক ফোর্সের সঙ্গে কথা বলব।” টাস্ক ফোর্সের এক সদস্যের কথায়, “জেলার বিভিন্ন বাজারে নিয়মিত নজরদারি চলছে। আনাজ কিছুটা চড়লেও আলুর দর বর্তমানে জেলার সর্বত্রই প্রায় একই রয়েছে।” এ দিকে, জেলা উদ্যানপালন দফতর জানাচ্ছে, অগস্টের গোড়া থেকে এ পর্যন্ত জেলায় যা বৃষ্টি হয়েছে, তাতে কাশীপুর ব্লকে আনাজে দশ শতাংশ ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে। ৩০ শতাংশের উপরে ক্ষয়ক্ষতি হলে তবেই তা তালিকাভুক্ত করা হয়।
আনাজের চড়া দামে নাজেহাল বাঁকুড়ার ক্রেতারাও। দু’তিন দিনের ব্যবধানেই বেশির ভাগ আনাজের দাম আকাশ ছুঁয়েছে। বাঁকুড়া ও বিষ্ণুপুর শহরে ঝিঙে বিকিয়েছে কেজি প্রতি ৬০ টাকায়। বরবটি ও বেগুনের কেজি প্রতি ৮০ টাকা। বিষ্ণুপুর শহরের বাসিন্দা সম্রাট মণ্ডল বলেন, “মাঝে কয়েক দিন দাম একটু কমেছিল। ফের আনাজের দর সীমা ছাড়িয়ে যাচ্ছে।” বড়জোড়া বাজারের আনাজ ব্যবসায়ীদেরর মতে, গত সপ্তাহের প্রবল বৃষ্টিতে অনেক আনাজ নষ্ট হয়েছে। আবার কারও মতে, বিয়েবাড়ি, অনুষ্ঠান বাড়ি থাকায় আনাজের দাম এমনিতেই একটু বেড়েছে। বড়জোড়া বাজারের এক ক্রেতা সমীর মণ্ডল বলেন, “কিছু দিন আনাজের দাম নামার পরে ফের বাড়তে শুরু করেছে। প্রশাসন নজরদারি না করলে ফের অনেক আনাজের দাম একশো টাকা ছোঁবে।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy