Advertisement
০৮ নভেম্বর ২০২৪
Durga Puja 2023

অজয়ের বন্যা দেবীর ঠাঁই বদলেছে বারবার

দুবরাজপুরের লোবা গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তরডাহা গ্রাম ঘেঁষে বয়ে গিয়েছে অজয় নদ। উত্তরডাহা গ্রামের গ্রামের একমাত্র দুর্গাপুজো গত কয়েক প্রজন্ম বন্দ্যোপাধ্যায়দের হাতে।

উত্তরডাহা গ্রামে বন্দ্যোপাধ্যায়দের প্রতিমা।

উত্তরডাহা গ্রামে বন্দ্যোপাধ্যায়দের প্রতিমা। —নিজস্ব চিত্র।

দয়াল সেনগুপ্ত 
দুবরাজপুর শেষ আপডেট: ১৫ অক্টোবর ২০২৩ ০৮:৪৫
Share: Save:

প্রতিটি প্রাচীন দুর্গাপুজোর সঙ্গে জুড়ে থাকে কাহিনি। দুবরাজপুরে উত্তরডাহা গ্রামের বন্দ্যোপাধ্যায়দের পরিবারের শতাব্দী প্রাচীন দুর্গাপুজোর সঙ্গে জুড়ে তেমনই গল্প। পরিবার সূত্রে জানা গিয়েছে, একদা অন্যের পুজো তাদের পরিবারের হাতে আসার জন্য দায়ী অজয় নদ। শুধু তাই নয়, দু’কুল ছাপিয়ে বয়ে যাওয়া অজয়ের জন্যই দেবীর ঘর বদলেছে বারবার।

দুবরাজপুরের লোবা গ্রাম পঞ্চায়েতের উত্তরডাহা গ্রাম ঘেঁষে বয়ে গিয়েছে অজয় নদ। উত্তরডাহা গ্রামের গ্রামের একমাত্র দুর্গাপুজো গত কয়েক প্রজন্ম বন্দ্যোপাধ্যায়দের হাতে। বর্তমানে পালা করে পুজোর দায়িত্ব সামলান প্রয়াত স্বাধীনতা সংগ্রামী ইন্দ্রনারায়ণ বন্দ্যোপাধ্যায়ের চার ছেলে মুক্তিপদ (প্রয়াত), শক্তিপদ, সনৎ এবং দেবদুলাল ও তাঁদের পরিবারের সদস্যেরা। পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, তাঁরা শুনেছেন, এক সময় ২২ পাড়ার গ্রাম ছিল উত্তরডাহা। পুজোর দায়িত্বে ছিল গ্রামের নায়ক পরিবার (গ্রামীণ এলাকায় লায়েক নামে পরিচিত)। বহু বছর আগে অজয়ের বন্যায় গোটা গ্রাম প্লাবিত হয়েছিল। বাদ যায়নি দুর্গা মণ্ডপও। তার পরেই নায়কদের পরিবার সহ বহু লোক গ্রাম ছেড়ে অন্যত্র চলে যান। নায়ক পরিবার বর্তমানে ঝাড়খণ্ডের আম্বায় বসবাস করেন।

এ বার পুজোর দায়িত্বে থাকা সনৎ বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘পুরোটাই অজানা ছিল। পুজোর শিকড় খুঁজতে আমরা ওই পরিবারের সদস্য পরিমল নায়কের সঙ্গে দেখা করে জানতে পারি, বাংলা ১২২০ সালে বন্যার পরেই তাঁদের পরিবার এই গ্রাম থেকে সরে গিয়েছিলেন। নায়কদের বাগান, পুকুর, বাড়ি, সব ভূমি ভমি সংস্কার দফতরের নথিতে রয়েছে।’’ বন্দ্যোপাধ্যায় পরিবারের সদস্যরা জানিয়েছেন, নায়ক পরিবার চলে যাওয়ার পরে দুর্গাপুজো শুরু হয়েছিল পাশের ধ-গড়িয়া গ্রামে। এখনও ওই গ্রামে বাঁড়ুজ্যের পুজোর বেদি রয়েছে। তার পরে অজয়ের ভয়াবহ বন্যায় ফের দেবীর স্থান পরিবর্তন হয়। পুজো আসে উত্তরডাহা গ্রামে রানা পরিবারে।

আবারও সেই বন্যার কারণেই তাঁদের পরিবারে এসেছেন দেবী বলে জানালেন দেবদুলাল বন্দ্যোপাধ্যায়। তিনি বলেন, ‘‘শুনেছি বন্যায় অষ্টমীর দিন ভেসে গিয়েছিল প্রতিমা। আমাদের পরিবারের বসতভিটেয় দেবীর কাঠামো এসে লেগেছিল। বর্তমান ৫৩১ দাগে দুর্গার নামে রেকর্ড রয়েছে।’’ পরিবার সূত্রে আরও জানা গেল, আগে হেতমপুরের একটি পরিবারও এই পুজোর শরিক ছিল। যেহেতু পুজো এক সময় ধ-গ্রামে ছিল, দশমীর দিন ঘোষ পরিবারের লোকজন ভোগ নিয়ে আসেন। এ বারও আসবেন। শনিবার গ্রামে গিয়ে দেখা গেল দেবী মন্দিরের বেদিতে। যজ্ঞের প্রস্তুতি চলেছে। সনৎবাবুরা জানালেন, মহালয়ার দিনই হোম দিয়ে শুরু হয় পুজো। পুজোর অষ্টমী বাদে তিন দিন অন্নভোগ। ব্যস্ত হয়ে উঠেন পরিবারের মহিলা সদস্যরা। মেতে ওঠে ছোটরা।

অন্য বিষয়গুলি:

Ajay River dubrajpur
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE