Advertisement
০৪ নভেম্বর ২০২৪
wildlife

ঘরে ঢুকে কম্বল টানছে হাতি

‘হাতি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে সংগ্রামী গণমঞ্চ’ সংগঠনের শুভ্রাংশু মুখোপাধ্যায়ের দাবি, সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে।

হাতির কীর্তি। পারসিডি গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

হাতির কীর্তি। পারসিডি গ্রামে। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
বড়জোড়া শেষ আপডেট: ১৬ জানুয়ারি ২০২৩ ০৯:০৯
Share: Save:

হাতির আতঙ্কে ঘুম ছুটেছে বন দফতরের বড়জোড়ার সংগ্রামপুর বিট এলাকার কদমা, মাঝিরডাঙা, মুক্তাপুর, মুক্তাপুর কলোনির মতো গ্রামের বাসিন্দাদের। স্থানীয়দের দাবি, গত দু’দিন ধরে তাণ্ডব চালাচ্ছে সাতটি হাতির একটি দল। কয়েকটি মাটির বাড়ি ভাঙচুর করার পাশাপাশি, নষ্ট করছে ফসল। তাদের হানায় মরেছে গবাদি পশু। হাতি তাড়ানোর দাবিতে রবিবার সংগ্রামপুর বিট কার্যালয়ের সামনে বিক্ষোভ দেখান কিছু মানুষ।

গ্রামবাসীর অভিযোগ, কারও কারও ঘরের দরজা ভেঙে লেপ, কম্বলও টেনে বার করছে হাতিরা। মুক্তাপুর কলোনি গ্রামের রঞ্জিত বিশ্বাস বলেন, ‘‘শনিবার রাত ১১টা নাগাদ টিনের দরজা ভাঙার শব্দ পেয়ে উঠে বসি। বুঝতে পারি, হাতি ঢুকেছে। কিছু ক্ষণ পরে একটি হাতি বিছানার কাছে আসে। ভয়ে তক্তার নীচে লুকিয়ে পড়ি। হাতিটি বিছানা থেকে কম্বল বাইরে নিয়ে গিয়ে মাড়িয়ে নষ্ট করে। ভাগ্যের জোরে বেঁচেছি।’’ এমন ঘটনা গ্রামের আরও দু’জনের বাড়িতে ঘটেছে বলে দাবি তাঁর।

রঞ্জিত বলেন, ‘‘তার পরে হাতিগুলি গ্রামের বেশ কিছু জমির লাউ, শিম ও অন্য আনাজ নষ্ট করে।’’ হাতিরা গ্রামের একটি দোকানে ভাঙচুর চালায় বলে দাবি স্থানীয়দের। বহু জিনিস ফেলে-ছড়িয়ে নষ্ট করে। দোকানের মালিক নির্মল সমাদ্দার বলেন, ‘‘লক্ষাধিক টাকার ক্ষতি করেছে হাতির দল।’’ গত শুক্রবার রাতে গ্রামে ঢুকে গোয়াল ভেঙে একটি গরুকে মেরে ফেলে একটি হাতি।’’ গ্রামের মানুষের আরও অভিযোগ, শনিবার রাতে বন দফতরের কর্মীরা এলেও হাতিগুলিকে তাড়ানোর সাহস দেখাননি। হাতির হানা থেকে বাঁচতে তাঁদের সার্চ লাইট, হুলা ও ডিজ়েল দেওয়ার দাবি তুলেছেন গ্রামবাসী।

‘হাতি সমস্যার স্থায়ী সমাধানের লক্ষ্যে সংগ্রামী গণমঞ্চ’ সংগঠনের শুভ্রাংশু মুখোপাধ্যায়ের দাবি, সমস্যার স্থায়ী সমাধান করতে হবে। তিনি বলেন, ‘‘দ্রুত হাতিগুলিকে এলাকা থেকে সরানো হোক। গরিব মানুষের প্রচুর ক্ষতি হচ্ছে। তাঁদের শীতের কাঁথা-কম্বলও নষ্ট করছে হাতিরা।’’ শুভ্রাংশু জানান, আগে এত ক্ষতি হত না। কিন্তু এ বার যে হাতিগুলি ঢুকেছে তারা খুবই আক্রমণাত্মক। ক্ষতিও করছে প্রচুর। বন দফতরের উচিত অনেক বেশি সতর্ক থাকা।

ডিএফও (বাঁকুড়া উত্তর) উমর ইমাম বলেন, ‘‘হাতিদের নজরে রাখা হচ্ছে। গত দু’দিন ধরে খুব কুয়াশা থাকার কারণে বিশেষ কিছু করা যায়নি। দু’হাত দুরের কিছু দেখা যাচ্ছিল না। বিভিন্ন ভাবে প্রচার চালিয়ে মানুষকে ঘরে থাকতে বলা হয়েছিল। জীবনহানি আটকানোই আমাদের প্রথম লক্ষ্য। মকর সংক্রান্তি চলছে। বিভিন্ন জায়গায় প্রচুর মানুষ বাইরে থাকছেন। তাই এখন হাতি তাড়ানোয় ঝুঁকি রয়েছে। মকর সংক্রান্তি কেটে গেলে সে কাজ শুরু হবে।’’

অন্য দিকে, শনিবার রাতে বড়জোড়া রেঞ্জ-এর রাউতোড়া গ্রামে আলুচাষের ব্যাপক ক্ষতি করে ২৭টি হাতির দল। ক্ষোভে বড়জোড়ার রেঞ্জ আধিকারিক এবং বনকর্মীদের সারারাত ঘেরাও করে রাখেন গ্রামবাসী।

অন্য বিষয়গুলি:

wildlife elephant attack barjora
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE