Advertisement
০৫ নভেম্বর ২০২৪

‘ক্ষোভ’ শিক্ষক সংগঠনে, সভাপতির পদ ফাঁকা প্রাথমিকে

আপাতত ওই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন পুরুলিয়ার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়। কিন্তু এক সঙ্গে দু’টি দায়িত্ব তাঁকে সামলাতে হওয়ায় নানা কাজে অসুবিধা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে জেলার বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন।

প্রতীকী চিত্র

প্রতীকী চিত্র

শুভ্রপ্রকাশ মণ্ডল
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৪ ডিসেম্বর ২০১৯ ০১:৫২
Share: Save:

দেড় বছর পেরিয়ে গিয়েছে। পুরুলিয়া জেলা প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতির পদে কাউকে নিয়োগ করা হয়নি এখনও। আর এই নিয়ে ক্ষোভ ছড়াচ্ছে শাসকদলেরই শিক্ষক সংগঠনের অন্দরে।

আপাতত ওই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন পুরুলিয়ার জেলা বিদ্যালয় পরিদর্শক (প্রাথমিক) প্রশান্ত মুখোপাধ্যায়। কিন্তু এক সঙ্গে দু’টি দায়িত্ব তাঁকে সামলাতে হওয়ায় নানা কাজে অসুবিধা হচ্ছে বলে অভিযোগ তুলেছে জেলার বিভিন্ন শিক্ষক সংগঠন। শিক্ষক সংগঠন পশ্চিমবঙ্গ তৃণমূল প্রাথমিক শিক্ষক সমিতির পুরুলিয়ার সভাপতি বিমল মাহাতো বলছেন, ‘‘প্রাথমিক শিক্ষা সংসদের সভাপতি পদে দ্রুত নিয়োগ প্রয়োজন। আপাতত ডিআই এই দায়িত্ব সামলাচ্ছেন। কিন্তু বিভিন্ন ক্ষেত্রে সমস্যা দেখা দিচ্ছে। সংগঠনগত ভাবে আমরা শিক্ষা সংসদের সভাপতি পদে দ্রুত নিয়োগের দাবি রাজ্য নেতৃত্ব ও জেলায় দলের পর্যবেক্ষককে জানিয়েছি।”

পদ থেকে ইস্তফা দিয়ে জেলা পরিষদের একটি আসনে ভোটে দাঁড়িয়েছিলেন পুরুলিয়া জেলা শিক্ষা সংসদের আগের সভাপতি হেমন্ত রজক। তিনি নির্বাচিত হওয়ার পর থেকে ফাঁকা পড়ে রয়েছে শিক্ষা সংসদের সভাপতির পদ। তৃণমূল সূত্রের খবর, ওই পদের দাবিদার অনেকেই। দলের হুড়া ব্লকের বর্ষীয়ান এক নেতা থেকে শুরু করে জেলা পরিষদের এক প্রাক্তন শিক্ষা কর্মাধ্যক্ষের নাম শোনা যাচ্ছে দৌড়ে। উঠে আসছে আর এক কর্মাধ্যক্ষের স্বামী তথা শিক্ষক নেতার নামও। বিশ্ববিদ্যালয়ে তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের এক নেত্রী এবং তৃণমূলের বেশ কয়েকজন শিক্ষক সংগঠনের নেতা পদের দাবিদার বলে একটি সূত্রের খবর।

দলের একটি সূত্র জানাচ্ছে, অন্য দিকে আবার পূর্বতন সভাপতি হেমন্তবাবু আবার সভিপতি হোন— চাইছেন তৃণমূলেরই শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের একাংশ। ফলে সর্বসম্মত ভাবে কাউকে দলের নেতৃত্ব পদে বেছে নিতে পারছেন না। দলের বর্ষীয়ান কিছু নেতা এবং বিধায়কদের কয়েকজন ঘনিষ্ঠ মহলে জানিয়েছেন, শিক্ষা সংসদের সভাপতির পদে কাউকে নিয়োগ করার আগে দলের অন্দরে আলোচনা করতে হবে।

জেলাপরিষদের সভাধিপতি তথা তৃণমূলের সিনিয়র ভাইস প্রেসিডেন্ট সুজয় বন্দ্যোপাধ্যায় বলেন, ‘‘শিক্ষা সংসদের সভাপতি নিয়োগ জরুরি। অতীতে জেলা সভাপতি রাজ্যের সঙ্গে আলোচনা করে এই বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিয়েছেন। জানি না কেন এখনও সেই নিয়োগ থমকে আছে। আমরা এই বিষয়ে সম্পূর্ণ অন্ধকারে।’’ তবে একই পদের অনেক দাবিদার থাকায় নিয়োগ করা যাচ্ছে না— এই তত্ত্ব মানতে নারাজ জেলা তৃণমূল সভাপতি শান্তিরাম মাহাতো। তিনি বলেন, ‘‘রাজ্যের সঙ্গে এই বিষয়ে আলোচনা চলছে। দ্রুত শিক্ষা সংসদের সভাপতি পদে নিয়োগ হবে।”

‘টালবাহানা’-র জেরে পদটি দেড় বছরের মতো ফাঁকা পড়ে থাকায় ক্ষোভ দেখা দিচ্ছে শাসকদলের শিক্ষক সংগঠনের নেতাদের একাংশের মধ্যে। তাঁদের মতে, শিক্ষা সংসদের সভাপতি পদ ফাঁকা থাকায় বদলি, প্রধান শিক্ষক পদে নিয়োগের মতো কিছু বিষয় পুরোপুরি থমকে রয়েছে। গত পাঁচ বছর ধরে জেলায় প্রাথমিক শিক্ষকদের প্রায় কোনও বদলি হয়নি। বিচ্ছিন্ন ভাবে যা হয়েছে সেটাও আবার কলকাতার মাধ্যমে, ‘প্রভাব খাটিয়ে’ করা হয়েছে বলে দাবি নেতাদের একাংশের। গত দু’বছরে জেলার অনেক প্রাথমিক স্কুলেই প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়নি।

তৃণমূলের শিক্ষক সংগঠনের কিছু নেতার কথায়, ‘‘শিক্ষা সংসদের সভাপতি থাকলে তিনি রাজ্যে এই ধরনের সমস্যাগুলি নিয়ে দরবার করে সমাধান করতে পারতেন। কিন্তু সভাপতি না থাকায় আমারা সংগঠনগত ভাবে শিক্ষকদের সমস্যাগুলি নিয়ে কার্যত কিছুই করতে পারছি না।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE