সময়ে ফর্ম-ফিলাপ করেও অ্যাডমিট কার্ড পায়নি কয়েকজন মাধ্যমিক পরীক্ষার্থী। এমনই অভিযোগ বীরভূমের বেশ কয়েকটি স্কুলে। তালিকায় রেগুলার, সিসি ও কম্পার্টমেন্টাল পরীক্ষার্থীরাও রয়েছেন।
আর মাত্র সাত দিন বাকি মাধ্যমিক পরীক্ষার। ইতিমধ্যেই প্রত্যেক স্কুল থেকে পরীক্ষার্থীদের অ্যাডমিট কার্ড দেওয়া হয়ে গিয়েছে। কিন্তু এখনও পর্যন্ত অ্যাডমিট কার্ড না পেয়ে উৎকণ্ঠায় রয়েছেন অনেক পরীক্ষার্থী ও তাদের অভিভাবকেরা। কী ভাবে সমস্যা মিটবে তা নিয়ে চরম উদ্বেগে রয়েছে স্কুল কর্তৃপক্ষও। তবে ঘটনার জন্য অবশ্য স্কুলের গাফিলতির কথাই উঠছে।
জানা গিয়েছে, যে সব স্কুলে এমন ঘটনা ঘটেছে সেই তালিকায় রয়েছে বোলপুর নিচুপট্টি নীরদবরণী হাইস্কুল। ওই স্কুলে সময়ে আবেদন পূরণ করেও অ্যাডমিট কার্ড হাতে পায়নি তিন মাধ্যমিক (সিসি ও কম্পার্টমেন্টাল) পরীক্ষার্থী। ঘটনার সত্যতা স্বীকার করে নিয়েছেন বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক স্বপন হালদার। তিনি বলেন, “এ বারই প্রথম অনলাইনে মাধ্যমিকের আবেদন পূরণ করা হয়েছিল। হতে পারে সেখানে কোথাও ত্রুটি-বিচ্যুতি থেকে গিয়েছে। আমরা সর্বত ভাবে চেষ্টা করছি যাতে ওঁরা পরীক্ষায় বসতে পারে।”
তালিকায় রয়েছে সিউড়ি ২ ব্লকের পুরন্দরপুর উচ্চ বিদ্যালয়। এই স্কুলে সময়ে আবেদনপত্র পূরণ করে এবং নির্দিষ্ট রাশি দিয়েও একজন মাধ্যমিক (রেগুলার) পরীক্ষার্থী অ্যাডমিট কার্ড হাতে পায়নি। বিদ্যালয়ের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক শান্তনু আচার্য জানান, সম্ভবত কাল পোর্টাল কিছুক্ষণের জন্য খুলবে, আশা করি সমস্যা মিটবে।
অন্য দিকে, লাভপুর ব্লকের সগ্রাম পাঁচপাড়া হাই স্কুলের একজন (সিসি) পরীক্ষার্থীও অ্যাডমিট পায়নি। বিদ্যালয়ের সহশিক্ষক মেহেদি হাসান বলেন, “বোর্ডের সঙ্গে যোগাযোগ করেছিলাম। আশা করি, সমস্যা মিটবে।” ওই ব্লকের মহোদরী উচ্চ বিদ্যালয়েও একই ঘটনা।জানা গিয়েছে, সেখানেও একজন মাধ্যমিক (রেগুলার) পরীক্ষার্থীর হাতে অ্যাডমিট কার্ড তুলে দিতে পারেনি স্কুল কর্তৃপক্ষ। স্কুলের ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক অনুপ সরকারের সঙ্গে যোগাযোগ করা যায়নি।
তবে জেলার বেশ কয়েকটি স্কুলের এই সমস্যার সমাধান সূত্র কী ভাবে মিলবে তার কোনও স্পষ্ট দিশা নেই। বিষয়টি সহজে মিটবে এমনও নয়। কারণ জানা গিয়েছে, নির্দিষ্ট সময়সীমার পরেও আলাদা ভাবে সময় দিয়েছিল বোর্ড। তারপরও কেন স্কুলগুলি সতর্ক হল না সেই প্রশ্নই উঠে আসছে।
জেলা স্কুল পরিদর্শক সুজিত সামন্তের সঙ্গে কোনও ভাবেই যোগাযোগ করা যায়নি। তবে, মাধ্যমিকের যুগ্ম কনভেনর চন্দন ঘোষ বলেন, “যেটুকু জেনেছি, গাফিলতি হয়েছে স্কুলের তরফেই। তবে পরীক্ষার্থীদের স্বার্থের কথা ভেবে আমরা চেষ্টা করছি যাতে ওরা পরীক্ষা দিতে পারে।”
আরও ঝাঁঝালো তৃণমূল শিক্ষক সংগঠনের জেলা সভাপতি অভিজিৎ নন্দন। তিনি বলেন, “আমরা সমস্যা মেটানোর চেষ্টা করছি। বিদ্যালয়গুলির এই গাফিলতি হওয়া উচিত ছিল না। ভবিষ্যতে এমনটা যেন না হয় ভাবতে হবে।” শিক্ষক নেতার দাবি, “যে যে স্কুলে এমনটা হয়েছে সেই স্কুলগুলিতে ভারপ্রাপ্ত প্রধান শিক্ষক রয়েছে বলেই এমন ঘটনা।”
নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক শিক্ষা দফতরের এক কর্তার কথায়, “একজন পরীক্ষার্থী অ্যাডমিট কার্ড না পেয়ে যদি পরীক্ষা দিতে না পারে সেটি খুব খারাপ হবে। তবে ভুল হতেই পারে। সরকারি ওয়েবসাইটগুলি ঠিকমতো কাজ করে না, প্রধান শিক্ষক নিয়োগ হয়নি বহু স্কুলে। বোর্ডকে জানালে সংশোধন করা সম্ভব।”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)