রাস্তার দাবিতে পথে। নিজস্ব চিত্র।
রেলের ডাবল লাইন পাতার জন্য হারিয়ে যাচ্ছে রাস্তা। রাস্তা বাঁচানোর দাবিতে পুরুলিয়া-বাঁকুড়া (৬০এ) জাতীয় সড়ক অবরোধ করে চলল বিক্ষোভ। রবিবার সকালে পুরুলিয়া শহরের ২১ নম্বর ওয়ার্ড ও লাগোয়া রাঘবপুর পঞ্চায়েত এলাকার বাসিন্দাদের একাংশ স্থানীয় শান্তিপল্লি এলাকায় বিক্ষোভ শুরু করেন। যোগ দেন রঘুবরপল্লি, সুফলপল্লি ও কর্পূরবাগানের বাসিন্দাদের একাংশও।
ওই জনপদগুলি ঘেঁষে রয়েছে পুরুলিয়া-কোটশিলা রেললাইন। তার পাশে চলছে ডাবল লাইন পাতার কাজ। বিক্ষোভের জেরে এ দিন রেলের কাজ বন্ধ হয়ে যায়। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে যায় আরপিএফ। তবে বিক্ষোভ থামেনি। কিছু পরে বিক্ষোভকারীরা কয়েকশো মিটার দূরে ৬০এ জাতীয় সড়কে পৌঁছে অবরোধ শুরু করেন। ‘রাস্তা চাই, রাস্তা চাই’ স্লোগান দিয়ে রাস্তায় বসে পড়েন মহিলারা। পুরুলিয়া শহরে ঢোকার অন্যতম প্রধান সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে পড়ার আশঙ্কায় দ্রুত সেখানে পৌঁছয় পুলিশ। কিছু পরে অবরোধ ওঠে।
সমস্যা কোথায়? এলাকাবাসীর দাবি, যে দিকে ডাবল লাইন পাতা হচ্ছে, তার পাশে একটি রাস্তা রয়েছে। সেটি এলাকার অন্তত ২০-২৫ হাজার মানুষ ব্যবহার করেন। বিক্ষোভকারীদের দাবি, রেলের কাজে এত দিনের ব্যবহৃত রাস্তা হারিয়ে যেতে বসেছে। এই অবস্থা চলতে থাকলে অচিরেই তাঁরা শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন। স্থানীয় বাসিন্দা আলপনা মাহাতো, বিশ্বনাথ সহিসেরা বলেন, “বাধ্য হয়েই আমাদের পথে নেমেছি। এলাকার এত মানুষ কী ভাবে এ বার যাতায়াত করবেন!” তাঁরা আরও জানান, আগে সুফলপল্লির কাছে একটি প্রহরীবিহীন লেভেল ক্রসিং ছিল। পরে রেল সেটি বন্ধ করে দেয়। পাশে একটি রাস্তা করে দেওয়া হয়েছিল বটে। কিন্তু তা কবেই ভেঙেচুরে গিয়েছে।”
আর এক স্থানীয় বাসিন্দা শঙ্কর চট্টোপাধ্যায়ের দাবি, ডাবল লাইন হচ্ছে, ভাল কথা। কিন্তু তার জন্য এত মানুষ যে শহর থেকে বিচ্ছিন্ন হয়ে পড়বেন, সেই প্রশ্নের জবাব রেল থেকে প্রশাসনের দোরে দোরে ঘুরেও মেলেনি। তাঁর সংযোজন, “পুরুলিয়া-বরাকর রাজ্য সড়কের উপরে গোশালা লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে ও রাঘবপুর লেভেল ক্রসিংয়ের কাছে দু’টি আন্ডারপাস তৈরি হচ্ছে। কিন্তু স্থানীয় যে কয়েক হাজার মানুষ আন্ডারপাস দু’টি ব্যবহার করবেন, তার সংযোগকারী রাস্তাই তো থাকছে না। আমাদের দাবি, দু’টি আন্ডারপাসের মধ্যে একটি সংযোগকারী রাস্তা গড়ে দেওয়া হোক। সেই রাস্তার জন্য জমিও রয়েছে।”
পুরুলিয়ার বিজেপি সাংসদ জ্যোতির্ময় সিং মাহাতো বলেন, “সমস্যা নিয়ে স্থানীয় মানুষজন এসেছিলেন। কিন্তু আমার প্রশ্ন, রাজ্য সরকারের তরফে ‘নো অবজেকশন’ শংসাপত্র পাওয়ার পরেই তো রেল কাজ শুরু করেছে। বিষয়টি তো আগেই প্রশাসনের দেখা দরকার ছিল।” পুরুলিয়ার পুরপ্রধান নবেন্দু মাহালি বলেন, “সমস্যাটি নিয়ে রেলকে চিঠি দিয়েছি। রেলও পুরসভাকে চিঠি দিয়েছে। চিঠির আদান-প্রদান ছাড়া পুরসভার কাছে আর কোনও তথ্য নেই।”
দক্ষিণ-পূর্ব রেলের আদ্রা ডিভিশনের ডিভিশনাল কমার্শিয়াল ম্যানেজার বিকাশ কুমার বলেন, “ওখানে কী সমস্যা হচ্ছে, খোঁজ নিচ্ছি। তব রেল তো নিজস্ব জমিতেই লাইন পাতার কাজ করছে।” সমস্যা নিয়ে খোঁজ নেওয়া হবে বলে আশ্বাস দক্ষিণ-পূর্ব রেলের মুখ্য জনসংযোগ আধিকারিক ওমপ্রকাশ চারণেরও।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy