Advertisement
০৬ নভেম্বর ২০২৪
Crime

হোম কর্তৃপক্ষের মদতে দীর্ঘদিন ধরে যৌন নির্যাতন, নাবালিকাদের অভিযোগ ঘিরে তোলপাড় পুরুলিয়া

অভিযোগ যাচাই করে দেখতে সম্প্রতি নিজেই হোমটিতে যান পুরুলিয়া জেলা আদালতের ওই বিচারক। সব কিছু শুনে তিনি নিজেই পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন এবং পুলিশকে বিষয়টি জানান, তাতেই তদন্ত শুরু হয়।

এই হোমে ঘটে যাওয়া ঘটনা ঘিরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।

এই হোমে ঘটে যাওয়া ঘটনা ঘিরেই চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে। —নিজস্ব চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া শেষ আপডেট: ২৮ ডিসেম্বর ২০২০ ২২:৩২
Share: Save:

পুরুলিায় সরকারি হোমে যৌন নির্যাতনের অভিযোগ। পুরুলিা শহরের উপকণ্ঠে শিমুলিয়ায় আনন্দমঠ জুভেনাইল হোমের নাবালিকারা এই অভিযোগ এনেছেন। হোম কর্তৃপক্ষের মদতেই তাঁদের উপর নির্যাতন চলে বলে জানিয়েছেন তাঁরা। এ নিয়ে পুরুলিয়া জেলা আদালতের এক বিচারকের কাছে অভিযোগও জানিয়েছেন। তার ভিত্তিতে হোমের সুপারিনটেনডেন্ট-সহ তিন জনের বিরুদ্ধে পকসো ধারায় স্বতঃপ্রণোদিত হয়ে মামলা দায়ের করেছে পুরুলিয়া সদর মহিলা থানার পুলিশ। গোটা ঘটনায় চাঞ্চল্য ছড়িয়েছে এলাকায়।

অভিযোগ যাচাই করে দেখতে সম্প্রতি নিজেই হোমটিতে যান পুরুলিয়া জেলা আদালতের ওই বিচারক। সব কিছু শুনে তিনি নিজেই পুরুলিয়া জেলা প্রশাসন এবং পুলিশকে বিষয়টি জানান, তাতেই তদন্ত শুরু হয়। তবে এ নিয়ে মুখে কুলুপ এঁটেছে পুরুলিয়া প্রশাসন। হোম কর্তৃপক্ষ এবং জেলা সমাজ কল্যাণ দফতরের তরফেও কোনও মন্তব্য করা হয়নি। তবে পুরুলিয়ার এসপি এস সেলভামুরুগান বলেন, ‘‘একটি মামলা দায়ের হয়েছে। তদন্ত চলছে।’’

হোম সূত্রে জানা গিয়েছে, অভিযোগ আসার পরেই গত বৃহস্পতিবার ওই হোমে যান পুরুলিয়া জেলা আদালতের ওই বিচারক l নাবালিকা আবাসিকদের কাছ থেকে সমস্ত ঘটনা শুনে পুরুলিয়া জেলা পুলিশ সুপারকে নিরপেক্ষ তদন্তের নির্দেশ দেন তিনিl এর পরেই তদন্তে নামে পুলিশl নির্যাতিতারা পুলিশকে জানিয়েছেন, বেশ কিছু দিন ধরে ওই হোমে তাদের উপর যৌন নির্যাতন চলছেl এক বহিরাগত অজ্ঞাত পরিচয় যুবক হোমে এসে কর্তৃপক্ষের মদতে এই যৌন নির্যাতন চালান বলে অভিযোগl এই ঘটনায় ‘শিশির কাকু’ নামে একজন জড়িত রয়েছেন বলে আবাসিকরা পুলিশকে জানিয়েছেন। সোমবার ওই হোমের একাধিক নাবালিকা পুরুলিয়া আদালতে গোপন জবানবন্দিও দেয়l তাদের ডাক্তারি পরীক্ষাও হয়েছেl

তবে এই হোম নিয়ে বিতর্ক নতুন নয়। বাম আমলেও নানা কারণে খবরের শিরোনামে উঠে আসে এই হোমটি। হোমের পাঁচিল টপকে নাবালিকাদের পালিয়ে যাওয়ার ঘটনাও ঘটে। তার পর হোমের পাঁচিল উঁচু করা হয়। নজরদারি চালাতে মোতায়েন করা হয় বিপুল সংখ্যক পুলিশও। তার পরেও পরিস্থিতি বদলায়নি এতটুকু। অতীতেও এই হোমে যৌন নির্যাতনের খবর শোনা যেত বলে জানিয়েছেন স্থানীয়রা। কিন্তু আগে কখনও তা প্রকাশ্যে আসেনি। তাই এ বারের ঘটনায় কাঠগড়ায় স্থানীয় প্রশাসন। প্রশ্ন উঠছে, বাইরে বিপুল সংখ্যাক পুলিশ মোতায়েন থাকার পরেও হোমের ভিতরে কী ভাবে দিনের পর দিন সন্ধ্যার পর ওই বহিরাগত যুবক ঢুকতেন? এই বিষয়ে হোম কর্তৃপক্ষ একেবারেই নীরবl পুলিশ সূত্রে খবর, এই ঘটনায় পুরুলিয়া সদর মহিলা থানার ভারপ্রাপ্ত আধিকারিক তদন্ত করছেন। তদন্তে নজরদারির দায়িত্বে আছেন পুরুলিয়া সদর সার্কল আধিকারিকl

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE