Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Potato Price

ব্যবসায়ীদের কর্মবিরতি, বাজারে টান পড়তেই আলু চল্লিশে

ভিন্ রাজ্যে আলু বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা তোলা ও রাজ্যের সীমান্তে ব্যবসায়ীদের গাড়ি আটকে হয়রানি বন্ধের দাবিতে গত সোমবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছেন আলু ব্যবসায়ীরা।

—প্রতীকী চিত্র।

নিজস্ব সংবাদদাতা
পুরুলিয়া ও বাঁকুড়া শেষ আপডেট: ২৪ জুলাই ২০২৪ ০৭:৫৬
Share: Save:

আশঙ্কা ছিলই। জোগানে টান পড়ায় পুরুলিয়া ও বাঁকুড়ার বিভিন্ন বাজারে অনেকটাই চড়ল আলুর দাম। কোথাও তা ছুঁল ৪০ টাকা প্রতি কেজিও।

ভিন্ রাজ্যে আলু বিক্রিতে নিষেধাজ্ঞা তোলা ও রাজ্যের সীমান্তে ব্যবসায়ীদের গাড়ি আটকে হয়রানি বন্ধের দাবিতে গত সোমবার থেকে কর্মবিরতি শুরু করেছেন আলু ব্যবসায়ীরা। মঙ্গলবার বিষ্ণুপুরের জয়পুরে পশ্চিমবঙ্গ প্রগতিশীল আলু ব্যবসায়ী সমিতির বৈঠক ছিল। বৈঠক শেষে সংগঠনের রাজ্য উপদেষ্টা বিভাস দে বলেন, “সুনির্দিষ্ট ভাবে আন্দোলন তুলে নেওয়া নিয়ে কোনও সিদ্ধান্ত হয়নি। রাজ্য সরকারের তরফেও আলোচনার জন্য ডাকা হয়নি।” আজ, বুধবার আরামবাগে সংগঠনের বৈঠক রয়েছে বলে জানান তিনি।

টানা দু’দিন হিমঘর থেকে আলু বাজারে না আসায় জোগানে টান তৈরি হয়েছে। চড়ছে দরও। গত কয়েক দিনে খোলা বাজারে আলুর দর কিছুটা কমে কেজি প্রতি ৩০ টাকা হয়েছিল। এখন তা ফের ৩২-৩৫ টাকা হয়েছে। ব্যবসায়ীদের একাংশ জানান, মজুত আলুই বিক্রি করা হচ্ছে। শীঘ্র কর্মবিরতি না উঠলে বাজারে আলুর জোগান আরও কমবে। বাঁকুড়ার চকবাজারের এক আলু বিক্রেতা স্বরূপ পাল বলেন, “আলু যা মজুত রয়েছে, তাতে হয়তো আর এক দিন টানতে পারব।” শহর লাগোয়া কেশিয়াকোল, হেভিরমোড় এলাকার ব্যবসায়ীদেরও অনেকের মজুত আলু শেষের পথে।

বিষ্ণুপুর বাজারেও আলুর জোগানে টান। দু’দিনের ব্যবধানে ৩৫ টাকা প্রতি কেজি থেকে হয়েছে ৪০ টাকা। জোগান কম চকবাজারেও। আলুর মানও খারাপ বলে দাবি ক্রেতাদের একাংশের। বিষ্ণুপুরে সুফল বাংলা স্টলে তবে এ দিন আলু বিকিয়েছে ২৭ টাকা কেজি দরে। জোগান ছিল স্বাভাবিক। বাঁকুড়ার জেলাশাসক সিয়াদ এন জানান, প্রশাসন পরিস্থিতির উপরে নজর রাখছে।

একই অবস্থা পুরুলিয়াতেও। পুরুলিয়া পাইকারি বাজার সূত্রে জানা যায়, গত রবিবার থেকে শহরে আলু না ঢোকায় দাম আচমকা বেড়েছে। রবিবার পাইকারি বাজারে কুইন্টাল প্রতি আলুর দর যেখানে ছিল ২৪০০ টাকা, মঙ্গলবার তা হয়েছে ২৮০০ থেকে ৩ হাজার টাকা।

পুরুলিয়া শহরের বাসিন্দা নিলয় মুখোপাধ্যায়ের কথায়, “পরশু যেখানে ৩২ টাকা করে আলু কিনেছিলাম, আজ বলছে ৪০ টাকা কেজি। টাস্ক ফোর্সের কী যে ভূমিকা, কেন জানে!” ঝালদা ও কাশীপুর বাজারেও এ দিন আলু বিকিয়েছে ৪০ টাকা দরে।

দাম পাইকারি বাজারেই বেশি, দাবি খুচরো বিক্রেতাদের। বড়হাটের এক বিক্রেতা বলেন, “আজ দাম অনেক চড়া। খুচরো চল্লিশের কমে পোষাচ্ছে না।” ঝালদা পুরসভা নিয়ন্ত্রিত বাজারের বিক্রেতা মহাদেব কুইরিও বলেন, “আমরা পাইকারি বাজারে যেমন দামে কিনছি, সেই দামেই বেচছি।”

পুরুলিয়া শহরের কাছারি বাজারে অবশ্য এ দিন আলু বিক্রি হয়েছে ৩৫ টাকা কেজিতে। জেলাশাসকের কার্যালয়ের উল্টো দিকে সুফল বাংলা বিপণিতেও আলুর দর ছিল ৩২ টাকা দরে। বিপণির ম্যানেজার সুব্রত সেনগুপ্ত বলেন, “সোমবার আমরা ২৮ টাকা করে বিক্রি করেছি। তবে এ দিন পাইকারি বাজারে দাম চড়া থাকায় বেশি দামে কিনতে হয়েছে।”

পুরুলিয়া জেলা পরিষদের কৃষি কর্মাধ্যক্ষ অজিত বাউরির কথায়, “খুচরো বাজারে এ দিন অনেক জায়গায় আলু ৪০ টাকা করে বিক্রি হয়েছে বলে শুনেছি। কৃষি বিপণন দফতর বিষয়টি দেখছে।”

জেলা কৃষি বিপণন দফতর জানাচ্ছে, বিভিন্ন বাজারে নজরদারি অব্যাহত রয়েছে। তবে ধর্মঘটের কারণে খুচরো বাজারে আলুর দাম যে বেড়েছে, স্বীকার করছে দফতর।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE