Advertisement
২০ নভেম্বর ২০২৪
Baluchari Sari

অনলাইনেই জমেছে বালুচরীর পুজোর বাজার

পুজোর মুখে বিষ্ণুপুরের বড়মতলা, কৃষ্ণগঞ্জ, যমুনাপাড়া, মাধবগঞ্জ, মলডাঙা, গড়গড়ান, বৈষ্ণবপাড়া, বাগানপাড়া ইত্যাদি এলাকার বালুচরী শিল্পীদের একাংশ অনলাইনে ব্যবসায় নেমে পড়েছেন।

অর্ডার আসছে মোবাইল ফোনেই। নজর সে দিকেই। নিজস্ব চিত্র

অর্ডার আসছে মোবাইল ফোনেই। নজর সে দিকেই। নিজস্ব চিত্র

অভিজিৎ অধিকারী
 বিষ্ণুপুর শেষ আপডেট: ১৬ সেপ্টেম্বর ২০২২ ০৭:২৪
Share: Save:

মহাজনদের মাধ্যমেই তাঁত শিল্পীরা নিজেদের তৈরি শাড়ি বিক্রি করতেন এতকাল। ফলে ক্রেতাকে আরও বেশি দামে সেই শাড়ি বিক্রি করে এতদিন মুনাফা পাচ্ছিলেন মহাজনেরা। এ বার সরাসরি ক্রেতাকে অনলাইনে শাড়ি বিক্রির সুযোগ পেয়ে আয় বাড়ানোর পথ খুঁজে পাচ্ছেন বিষ্ণুপুরের অনেক তাঁত শিল্পী। পুজোর মুখে বিষ্ণুপুরের বড়মতলা, কৃষ্ণগঞ্জ, যমুনাপাড়া, মাধবগঞ্জ, মলডাঙা, গড়গড়ান, বৈষ্ণবপাড়া, বাগানপাড়া ইত্যাদি এলাকার বালুচরী শিল্পীদের একাংশ অনলাইনে ব্যবসায় নেমে পড়েছেন। তাঁদের দাবি, খোলাবাজারের মতো দর কষাকষির সুযোগ না থাকায় লাভ মন্দ হচ্ছে না। তেমনই শাড়ির হাতবদল কম হওয়ায় দামও কম রাখা যাচ্ছে। তাতে ক্রেতাদের আর্থিক সুবিধাও হচ্ছে।

ইতিমধ্যেই অনলাইনে বরাত পেয়ে খুশি বিষ্ণুপুরের বালুচরী শিল্পী অরুণ দে, গোবর্ধন পাল, সুভাষ কর, বাসুদেব দত্ত মুখ্যার মতো অনেকেই। বস্তুত কোভিডের সময় থেকেই ধীরে ধীরে অনলাইনে বালুচরী বিক্রিতে হাত পাকানো শুরু করেছিলেন কেউ কেউ। তাঁদের দাবি, ওই সময়ে বিষ্ণুপুরের বালুচরী পৌঁছে গিয়েছে দিল্লি, বেঙ্গালুরু, অসম, হিমাচল প্রদেশ, ত্রিপুরা, মহারাষ্ট্রের মতো বিভিন্ন রাজ্যে। প্রবাসী ভারতীয়দের হাত ধরে সম্প্রতি বিষ্ণুপুরের বালুচরী পৌঁছে গিয়েছে আমেরিকা, লন্ডন ও দক্ষিণ আফ্রিকার বিভিন্ন শহরে।

বালুচরী শিল্পী অরুণ দে জানান, ২০১৬-’১৭ সালে দিল্লির প্রগতি ময়দানে গিয়ে বিভিন্ন রাজ্য ও বিদেশের ব্যবসায়ী, পর্যটকদের সঙ্গে তাঁর পরিচয় ঘটে। তাঁদের উৎসাহেই সমাজ-মাধ্যমের শাড়ির ছবি দিয়ে বিক্রির বিজ্ঞাপন দেন। সেই থেকে অনলাইনে শাড়ি বিক্রি শুরু। পরে জেলা প্রশাসন ও মহকুমা প্রশাসনের নিজস্ব ওয়েবসাইটের মাধ্য়মেও বিক্রি করছেন। তিনি বলেন, ‘‘তখন মাঝে মধ্যে দু’-একটা শাড়ির বরাত পেতাম। তবে করোনা-পর্বে গৃহবন্দি মানুষ অনলাইনে কেনাকাটায় জোর দেন। এতে শাড়ির দাম আমরা যেমন তুলনামূলক বেশি পাচ্ছি, তেমনই ক্রেতারাও সুবিধা পাচ্ছেন অনেকটাই। প্রতিদিন অনলাইনে গড়ে ১৫টি শাড়ি বিক্রি হচ্ছে।’’

জেলা শিল্প কেন্দ্র থেকে দু’বার হস্তশিল্পে পুরস্কার প্রাপ্ত শিল্পী গোবর্ধন পাল বলেন, “অনলাইন ব্যবসায় ৬০ শতাংশ সুবিধা হয়েছে। সরাসরি ক্রেতাদের সঙ্গে কথা বলে তাঁদের রুচি অনুযায়ী শাড়ি তৈরি করতে পারছি। সমাজ মাধ্যমে নিজেদের শাড়ির ছবি আপলোড করেও ভাল সাড়া মিলছে।”

সম্প্রতি বিষ্ণুপুর মহকুমা প্রশাসন অনলাইন ব্যবসায় আগ্রহীদের নিয়ে কর্মশালা করে। ২৯ জন শিল্পী অনলাইন ব্যবসা করার আগ্রহ প্রকাশ করেন বলে জানান এসডিও (বিষ্ণুপুর) অনুপকুমার দত্ত। তিনি বলেন, “বিষ্ণুপুরের তাঁত শিল্প ছিল পর্যটক-নির্ভর। মরসুম ছাড়া বাকি সময়ে বালুচরীর মন্দা চোখে পড়ত। সর্বত্র বালুচরীর পরিচিতি থাকলেও আরও প্রচার ও প্রসার অনলাইনেই সম্ভব। সময়ের সঙ্গে খাপ খাওয়াতে পারলেই বালুচরী ব্র্যান্ডকে প্রতিষ্ঠা করা সহজ হবে।” এই পরিস্থিতিতে বিষ্ণুপুরের ক্লাস্টার কেন্দ্রটি পুনরায় চালু করার আবেদন জানাচ্ছেন শিল্পী ফেলুরাম পাল। তিনি বলেন, “শাড়ি মজুত না থাকলে অনলাইনে ব্যবসা করা মুশকিল। তাছাড়া মোবাইলে ছবি তুলে আপলোড করা, প্যাকেটজাত করে ক্যুরিয়ারে পাঠানো ইত্যাদি বিষয়ে ক্লাস্টার থেকে মনিটর করলেভাল হয়।”

অন্য বিষয়গুলি:

Baluchari Sari Bishnupur Online Shopping
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy