পুরুলিয়া শহরে। নিজস্ব চিত্র
পঞ্চায়েত ভোটকে নজরে রেখে পুরুলিয়ায় গা ঘামাতে শুরু করল বামেরা। বুধবার বামেদের ডাকা জেলা পরিষদ অভিযান কর্মসূচি থেকে তৃণমূল ও বিজেপিকে চ্যালেঞ্চ ছোড়ার পাশাপাশি, বাম কর্মীদের চাঙ্গা করার চেষ্টার কসুর করলেন না দেবলীনা হেমব্রম, প্রদীপ রায়ের মতো সিপিএম নেতৃত্ব। শিক্ষক নিয়োগ-সহ নানা ক্ষেত্রে তৃণমূলের বিরুদ্ধে অনিয়মের অভিযোগ তোলার পাশাপাশি, দুর্নীতির প্রশ্নে ‘বিজেপিও ধোয়া তুলসি পাতা নয়’ বলে গেরুয়া শিবিরকে কটাক্ষ করেন তাঁরা।
এ দিন বামেদের কর্মসূচি ঘিরে পুরুলিয়া শহরে ছিল কড়া নিরাপত্তা ব্যবস্থা। কোনও অশান্তি অবশ্য হয়নি। পুরুলিয়া স্টেশন চত্বর থেকে শুরু হয় মিছিল। ‘চোর মুক্ত পঞ্চায়েত গড়ো, চোর ধরো জেল ভরো’— এই স্লোগান দিয়ে মিছিলে হাঁটেন বামকর্মীরা। যাত্রাপথে ছিল পুলিশের নজরদারি। পলিশের দাবি, সমাবেশে মেরেকেটে দু’হাজার লোক হয়েছিল। সিপিএমের দাবি, সংখ্যাটা অন্তত তার চার গুণ। শহরের অনেককেই অবশ্য এ দিন বলতে শোনা গিয়েছে, বহু বছর পরে বামেদের ‘এত বড়’ মিছিল দেখা গেল পুরুলিয়া শহরে। মিছিলের মুড়ো যখন জেলা পরিষদ ভবনের ফটকে পৌঁছয়, তখন তার লেজ ছিলট্যাক্সি স্ট্যান্ডের কাছে।
৩৪ বছরের বাম শাসনের সঙ্গে তৃণমূলের ১১ বছরের শাসনকালের তুলনা টেনে সিপিএমের কেন্দ্রীয় কমিটির সদস্যা দেবলীনা বলেন, ‘‘৩৪ বছরে সাদা ধুতি, সাদা জামা ও সাদা শাড়ি সাদাই ছিল। কোনও কালি লাগেনি। আর বর্তমান শাসক দলকে চোর বললে তাদের রাগ হচ্ছে। চোরকে তো আর সাধু বলা যায় না। আমাদের ভাবনা ছিল গড়ার। ওদের ভাবনা লুটের।’’ দুর্নীতি প্রশ্নে বিজেপিকে বিঁধে তিনি বলেন, ‘‘ওরা ধোয়া তুলসি পাতা নয়।’’ তৃণমূলকে কটাক্ষ করে শতরূপ বলেন, ‘‘পাঁচ বছর আগে যারা সাইকেলে হাওয়া দিতেন, তাঁরা আজ বড় গাড়ি চড়ে ঘুরে বেড়াচ্ছেন।’’
আগামী পঞ্চায়েত নির্বাচনকে অবাধ ও শান্তিপূর্ণ করার দাবি তুলেছে সিপিএম। দলের জেলা সম্পাদক প্রদীপ রায়ের দাবি, ‘‘এ বার (পঞ্চায়েত) ভোট যাতে অবাধ হয়, তার গ্যারান্টি দিতে হবে। সর্বদলীয় বৈঠকের নামে কোনও সিদ্ধান্ত চাপিয়ে দেওয়া যাবে না। ২০১৮-র পঞ্চায়েত ভোটে মনোনয়ন জমা দিতে গিয়ে প্রাক্তন সাংসদ বাসুদেব আচারিয়া-সহ আমাদের অনেককে রাস্তায় ফেলে মারা হয়েছিল।’’ তৃণমূল জেলা সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়ার প্রতিক্রিয়া, ‘‘কয়েক মাস আগেই জেলায় পুরভোট হয়েছিল। বিরোধীরা-সহ কেউই কোনও অভিযোগ তুলতে পারেনি।’’
গত মে মাসে পুরুলিয়ায় প্রশাসনিক বৈঠকে স্বয়ং মুখ্যমন্ত্রী ভূমি দফতরের কাজে অসন্তোষ প্রকাশ করেছিলেন। সে প্রসঙ্গ তুলে সিপিএমের জেলা সম্পাদক বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রীর সামনে হুড়া পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি প্রসেনজিৎ মাহাতো অভিযোগ করেছিলেন, রাজস্বের পুরো টাকা সরকারি কোষাগারে জমা পড়ে না। আমাদের দাবি, এই দুর্নীতির তদন্ত চাই। একশো দিনের কাজে যন্ত্র দিয়ে মাটি কাটা হয়েছে কিনা, তার তদন্ত করতে হবে।’’ সৌমেনের বক্তব্য, ‘‘সে দিন মুখ্যমন্ত্রী নিজেই দুর্নীতির বিরুদ্ধে অবস্থান স্পষ্ট করে দিয়েছিলেন। তাঁর নির্দেশেই ব্যবস্থা নেওয়া হয়েছে। সিপিএম কী বলতে চেয়েছে বোঝা গেল না।’’
বামেদের সভায় ভিড় নিয়ে বিজেপি জেলা সভাপতি বিবেক রঙ্গার দাবি, ‘‘সিপিএম আর রাজ্য রাজনীতিতে প্রাসঙ্গিক নয়। বিজেপিকে ঠেকাতে সিপিএমকে অক্সিজেন দিচ্ছে তৃণমূল। তাতে লাভ হবে না।’’ সৌমেনের প্রতিক্রিয়া, ‘‘এ সব কথা ভিত্তিহীন।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy