Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪
রোগীর রিপোর্ট পজিটিভ
Coronavirus in West Bengal

করোনা-ভয়ে ডায়ালিসিস ইউনিটই বন্ধ

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম থেকে গত ১২ মে এক যুবক বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে আসেন ডায়ালিসিস করাতে।

প্রতীকী ছবি।

প্রতীকী ছবি।

নিজস্ব সংবাদদাতা
বোলপুর শেষ আপডেট: ১৮ মে ২০২০ ০৫:৪১
Share: Save:

ডায়ালিসিস করতে আসা রোগীর শরীরে করোনা-সংক্রমণ মেলায় বন্ধ হয়ে গেল বোলপুর মহকুমা হাসপাতালের ডায়ালিসিস ইউনিট। কোয়রান্টিনে চলে গিয়েছেন সব টেকনিশিয়ান। এর জেরে সমস্যার আশঙ্কা করছেন বহু রোগী। হাসপাতালের ভারপ্রাপ্ত সুপার দীপ্তেন্দু দত্ত বলেন, ‘‘নতুন টেকনিশিয়ানের খোঁজ চালানো হচ্ছে। পাওয়া গেলেই ডায়ালিসিসের কাজ শুরু করা হবে।’’

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, পূর্ব বর্ধমান জেলার আউশগ্রাম থেকে গত ১২ মে এক যুবক বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে আসেন ডায়ালিসিস করাতে। রুটিন মাফিক ওই দিন ডায়ালিসিস করাতে আসা রোগীদের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয় কলকাতার নাইসেডে। যান্ত্রিক ত্রুটির কারণে ওই দিন ডায়ালিসিস সম্পূর্ণ না হওয়ায় ওই যুবক ফের ১৫ তারিখ আসেন।

হাসপাতাল সূত্রে জানা গিয়েছে, ১২ তারিখ পাঠানো রোগীদের লালারসের নমুনার রিপোর্ট শনিবার বোলপুর হাসপাতালে এসে পৌঁছয়। তাতেই দেখা যায় আউশগ্রামের ওই যুবক করোনা-আক্রান্ত। যদিও ডায়ালিসিস করতে আসার সময় ওই যুবকের কোনও উপসর্গ ছিল না। ওই রিপোর্ট হাতে পাওয়ার পরই উদ্বেগ ছড়ায় হাসপাতালে। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ ডায়ালিসিস ইউনিট আপাতত বন্ধ রাখার সিদ্ধান্ত নেন।

রবিবার হাসপাতালের ডায়ালিসিসি ইউনিট স্যানিটাইজ়ার দিয়ে জীবাণুমুক্ত করা হয়। ওই রোগীর সংস্পর্শে আসা চার টেকনিশিয়ানকে হোম কোয়রান্টিনে পাঠানোর ব্যবস্থা করা হয়। তাঁদের লালারসের নমুনাও সংগ্রহ করা হয়েছে। আরও কারা ওই রোগীর সংস্পর্শে এসেছেন তা চিহ্নিত করার চেষ্টা চলছে বলে হাসপাতাল সূত্রে খবর।

কিন্তু ওই যুবকের নমুনা কেন লাগোয়া জেলা মুর্শিদাবাদে না পাঠিয়ে কলকাতায় পাঠানো হল তা নিয়ে প্রশ্ন উঠেছে। রিপোর্ট যাতে দ্রুত আসে সে জন্যই বীরভূমের নমুনা মুর্শিদাবাদে পরীক্ষার ব্যবস্থা হয়েছিল। এ ক্ষেত্রে রিপোর্ট দ্রুত পেলে ওই টেকনিশিয়ানদের আরও অন্য রোগীদের সংস্পর্শে আসা আটকানো যেত বলে অনেকে দাবি করেছেন। হাসপাতাল কর্তৃপক্ষ জানিয়েছেন, মুর্শিদাবাদে অনেক রিপোর্ট জমে যাওয়ায় বোলপুর হাসপাতালের নমুনা কয়েকদিন ধরে নাইসেডে পাঠাতে বলা হয়েছে।

হাসপাতালের ডায়ালিসিস ইউনিট বন্ধ হয়ে যাওয়ায় চরম সমস্যায় পড়েছেন বহু রোগী। হাসপাতাল সূত্রে খবর, এ দিন ডায়ালিসিস করতে আসা অনেক রোগীকেই বাড়ি ফিরে যেতে হয়। বোলপুর মহকুমা হাসপাতালে প্রতিদিন গড়ে ২০ থেকে ২৫টি ডায়ালিসিস করা হয়। এই পরিস্থিতিতে তাঁরা কোথায় যাবেন তা নিয়ে দিশেহারা ওই রোগীরা।

ধন্দ বেধেছে আউশগ্রামের ওই যুবকের গতিবিধি নিয়েও। পুলিশের দাবি, ওই যুবক ১২ তারিখ ও ১৫ তারিখ দু’দিনই অ্যাম্বুল্যান্সে করে এসে ডায়ালিসিস করিয়ে ফিরে যান। তবে অন্য একটি সূত্রের দাবি, ওই যুবক ১২ তারিখ থেকে শান্তিনিকেতন লাগোয়া একটি গ্রামে তাঁর আত্মীয়ের বাড়িতে ছিলেন। ১৫ তারিখ তিনি ফেরেন। পুলিশের অবশ্য দাবি, মার্চ মাসে একবার ওই যুবক ওই গ্রামে এসেছিলেন। এই দফায় গ্রামে থাকেননি। এ দিন অবশ্য আক্রান্ত যুবকের আত্মীয়ের পরিবারের তিন সদস্যকে প্রশাসনের তরফে হাসপাতালে নিয়ে গিয়ে লালারসের নমুনা সংগ্রহ করে পরীক্ষার জন্য পাঠানো হয়। তাঁদের ১৪ দিন হোম কোয়রান্টিনে থাকতেও বলা হয়েছে। পুলিশের দাবি, ওই গ্রামে আতঙ্কের জেরেই ওই তিন জনের লালারসের নমুনা সংগ্রহ করা হয়েছে।

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy