Advertisement
২৩ নভেম্বর ২০২৪

তোলা না পেয়ে মারের নালিশ

এক ট্রাক চালককে ধাওয়া করে হেত্যাগোড়া গ্রামে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। তোলা না দেওয়াতেই মারধর বলে অভিযোগ ওঠে।

হেত্যাগোড়ায়। নিজস্ব চিত্র

হেত্যাগোড়ায়। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা 
সারেঙ্গা শেষ আপডেট: ০২ অগস্ট ২০১৯ ০১:১১
Share: Save:

ভিন্ন ভিন্ন দাবিতে একই রাস্তায় দু’টি পৃথক জায়গায় অবরোধে যান চলাচল ব্যাহত হল বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাজ্য সড়কে। বৃহস্পতিবার সকাল ৮টা থেকে বেলা ১০টা পর্যন্ত দু’টি অবরোধ চলে বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম ৯ নম্বর রাজ্য সড়কের উপরে সিমলাপালের হেত্যাগোড়া এবং সারেঙ্গার পিড়লগাড়ি মোড়ে। এর ফলে ওই রাস্তায় বহু যানবাহন আটকে যায়।

সিমলাপাল নদীঘাট থেকে পিড়লগাড়ি মোড় হয়ে সারেঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার রাস্তা সংস্কারের দাবি নিয়ে এ দিন সকাল ৯টা থেকে পিড়লগাড়ি মোড় অবরোধের ডাক দিয়েছিল সিপিএম। তার আগেই এক ট্রাক চালককে ধাওয়া করে হেত্যাগোড়া গ্রামে গাড়ি থেকে নামিয়ে মারধর করার অভিযোগ ওঠে পুলিশের বিরুদ্ধে। তোলা না দেওয়াতেই মারধর বলে অভিযোগ ওঠে। তাতে তেতে ওঠে এলাকা। প্রতিবাদে ক্ষুব্ধ গ্রামবাসী বাঁকুড়া-ঝাড়গ্রাম রাস্তায় হেত্যাগোড়া গ্রামে অবরোধ শুরু করেন। খবর পেয়ে বেলা ১০টা নাগাদ ঘটনাস্থলে যান এসডিপি (খাতড়া) বিবেক বর্মা। ঘটনার তদন্ত করে তিনি দোষীদের বিরুদ্ধে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়ার আশ্বাস দেওয়ার পরে অবরোধ উঠে যায়।

বাসিন্দারা এসডিপিও-কে কাছে পেয়ে সারেঙ্গা থানার পুলিশের বিরুদ্ধে ক্ষোভ উগরে দেন। তাঁদের অভিযোগ, দীর্ঘদিন ধরেই সারেঙ্গার পিড়লগাড়ি কলেজ সংলগ্ন জঙ্গলে বিভিন্ন গাড়ি থেকে তোলা আদায় করছে পুলিশ। কেউ তা দিতে অস্বীকার করলে, তাঁকে বিভিন্ন ভাবে হয়রান করা হয়। কেউ তোলা না দিয়ে চলে যাওয়ার চেষ্টা করলে তার পিছু ধাওয়া করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার সেই রকমই ঘটনা ঘটে কলেজ সংলগ্ন জঙ্গলে।

ওই ট্রাকের চালক বিহারের সিওয়ান জেলার মহারাজগঞ্জের বাসিন্দা লালন শা অভিযোগ করেন, ‘‘খড়্গপুর থেকে লোহার রড নিয়ে বিহারে যাচ্ছিলাম। জঙ্গলে পুলিশ আটকে টাকা চায়। দিতে না চেয়ে আমি সিমলাপালের দিকে ট্রাক ছোটাই। পুলিশ ধাওয়া করে সিমলাপালের হেত্যগোড়া গ্রামের মোড়ে আটক করে। তারপরে পুলিশ জামার কলার ধরে টেনে নামিয়ে আমাকে মারধর শুরু করে।’’ তা দেখে স্থানীয়রা ক্ষিপ্ত হয়ে পুলিশের বিরুদ্ধে তোলা আদায়ের অভিযোগে অবরোধ শুরু করেন।

সারেঙ্গা থানার আইসি সূর্যশেখর মণ্ডল বলেন, ‘‘আমি নতুন দায়িত্ব পেয়েছি। এ দিনের ঘটনাটি শুনেছি। বিষয়টি তদন্ত করে দেখা হচ্ছে।’’ এসডিপি জানান, ওই চালক পরে সিমলাপাল থানায় একটি লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। ইতিমধ্যে ঘটনার তদন্ত শুরু করা হয়েছে। তাঁর আশ্বাস, ‘‘পুলিশের বিরুদ্ধে অভিযোগ প্রমাণিত হলে আইনানুযায়ী প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে।’’

অবরোধে আটকে সিমলাপালের দুবরাজপুর এলাকার বাসিন্দা সন্দীপ সোরেন বলেন, ‘‘ঝাড়গ্রাম যাওয়ার জন্য বেরিয়েছিলাম। অবরোধে আটকে পড়ি।’’ পিড়লগাড়ি বাসিন্দা আশিস গিরি বলেন, ‘‘অবরোধ ওঠার পরেও যান চলাচল স্বাভাবিক হতে আরও সময় গড়িয়ে যায়।’’

হেত্যগোড়া গ্রামের অবরোধের জেরে পিড়লগাড়ি মোড়ে সিপিএম তাদের পূর্বঘোষিত পথ অবরোধ সংক্ষিপ্ত করে আধ ঘণ্টায় শেষ করে নেয়। সিপিএমের সারেঙ্গা উত্তর এরিয়া কমিটির সম্পাদক চিত্তরঞ্জন হাজরা বলেন, ‘‘অবরোধস্থলে সারেঙ্গা থানার পুলিশ গিয়েছিলেন। তাঁরা জানিয়েছেন, সিমলাপাল নদীঘাট থেকে সারেঙ্গা পর্যন্ত প্রায় ১৬ কিলোমিটার যে রাস্তা খারাপ রয়েছে, সেটি সংস্কারের জন্য টেন্ডার হয়েছে। খুব শীঘ্রই কাজ শুরুর আশ্বাস মিলেছে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Extortion Police
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy