কুড়মিদের সভায় মুল খুঁটি মূলমানতা অজিতপ্রসাদ মাহাতো। —নিজস্ব চিত্র।
নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে তৃণমূলের সর্বভারতীয় সাধারণ সম্পাদক অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের কনভয়ে হামলায় অভিযুক্ত ধৃতদের। মঙ্গলবার এই দাবিতে বিক্ষোভসভা করলেন কুড়মিরা। আর সেই প্রতিবাদ সভার জেরে কার্যত স্তব্ধ হয়ে গেল ঝাড়গ্রাম শহর। সভা থেকে কুড়মি সমাজের মুল খুঁটি মূলমানতা অজিতপ্রসাদ মাহাতোর ঘোষণা, কোনও ভাবেই আর রাজ্য সরকারকে সমর্থন নয়।
কুড়মি নেতাদের গ্রেফতারি এবং পুলিশি সন্ত্রাসের প্রতিবাদ ও কুড়মি নেতাদের নিঃশর্ত মুক্তির দাবিকে সামনে রেখে ‘প্রতিবাদী জনসভা’র হয় ঝাড়গ্রাম শহরের অফিসার্স ক্লাবের ময়দানে। জঙ্গলমহলের ৪ জেলা থেকে বাস, লরি এবং ছোট পণ্যবাহী এবং যাত্রিবাহী গাড়িতে হাজার হাজার কুড়মি সমাজের মানুষ ওই সভায় যোগ দেন। সভা দেখানোর জন্য শহরে ৩ প্রান্তে লাগানো হয়েছিল জায়ান্ট স্ক্রিন। পুরুলিয়া, বাঁকুড়া থেকে যে কুড়মি মানুষরা এসেছিলেন, তারা জামদা সার্কাস ময়দানে গাড়ি রেখে মিছিল করে অফিসার্স ক্লাবের ময়দানে পৌঁছন। ঝাড়গ্রাম শহরের ঢোকার প্রতিটি রাস্তা দিয়ে কুড়মিদের মিছিলের স্রোত দেখা যায়। অল্প কিছু ক্ষণের মধ্যেই শহরের প্রতিটি রাস্তা কুড়মিদের হলুদ পতাকা এবং ‘জয় গরাম’ ধ্বনিতে ভরে ওঠে।
অভিষেকের কনভয়ে হামলা এবং মন্ত্রী বিরবাহা হাঁসদার গাড়ি ভাঙচুরের অভিযোগে সিআইডির হাতে গ্রেফতার হয়েছেন ১১ জন কুড়মি নেতা এবং আন্দোলনকারী। ধৃতদের মধ্যে রয়েছেন কুড়মি সমাজ পশ্চিমবঙ্গের রাজ্য সভাপতি রাজেশ মাহাতো, আদিবাসী জনজাতি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি শিবাজী মাহাতো, আদিবাসী নেগাচারি কুড়মি সমাজের রাজ্য সভাপতি অনুপ মাহাতোরা। কুড়মিদের দাবি, তাঁদের অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হয়েছে। রাজ্য সরকার পুলিশ দিয়ে কুড়মিদের উপর সন্ত্রাস চালাচ্ছে। লক্ষ্য, কুড়মি আন্দোলনকে দমন করা। আদিবাসী কুড়মি সমাজের কেন্দ্রীয় সহ-সভাপতি সঞ্জয় মাহাতো সভা থেকে বলেন, ‘‘অভিষেকের কনভয়ে অনেক গাড়ি ছিল। তা হলে কেবলমাত্র আদিবাসী মন্ত্রী বীরবাহা হাঁসদার গাড়ি কেন ভাঙচুর করা হল? এর থেকে একটা জিনিস পরিষ্কার বোঝা যাচ্ছে যে, আদিবাসী এবং কুড়মির মধ্যে লড়াই লাগানোর চক্রান্ত চলছে।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আমরা আমাদের নিজস্ব দাবিতে আন্দোলন করছি। একই গ্রামের মধ্যে কুড়মি, আদিবাসী— সকলে মিলেমিশে থাকি। আমাদের মধ্যে লড়াই লাগিয়ে অন্যান্যরা রাজত্ব করতে চায়।’’
সঞ্জয় আরও বলেন, ‘‘নরেন্দ্র মোদীর জাত নিয়ে কথা বলার জন্য যদি রাহুল গান্ধীর সাংসদ পথ খারিজ হতে পারে, তা হলে কুড়মিদেরকে রাস্তায় এনে পেটানোর কথা বলে কুড়মিদের জাত তুলে হাজারও কথা বলার জন্য বিধায়ক দুলাল মুর্মুর বিধায়ক পদও খারিজ হওয়া উচিত।’’
কুড়মিদের এই সভায় পশ্চিমবঙ্গের বিভিন্ন সংগঠনের নেতৃত্ব তো বটেই ওড়িশা এবং ঝাড়খণ্ডের কুড়মি নেতারাও উপস্থিত ছিলেন। সেখান থেকে অজিত বলেন, ‘‘আদিবাসী কুড়মি সমাজ বর্তমান সময়ে রাজ্য সরকারকে আমরা কোনওমতে সমর্থন করছি না। কেন করছি না? কারণ, এই সরকার আমাদের ৭ বছর ধরে ‘কমেন্ট অ্যান্ড জাস্টিফিকেশন’ কেন্দ্র সরকারের কাছে পাঠায়নি। এর জন্যই আমাদের লড়াই।’’ সেখান থেকে রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রীকেও নিশানা করেন অজিত। তিনি বলেন, ‘‘তাঁর সংগ্রামের জন্য আমি তাঁকে খুবই ভালবাসতাম। তাই ৭ বছর কিছু বলিনি। কুড়মি গ্রামের কোনও ঘরের দেওয়ালে কোনও দলের রাজনৈতিক প্রচার আমরা করতে দেব না। কুড়মি আন্দোলনকারীদের অন্যায় ভাবে গ্রেফতার করা হচ্ছে। তাদের অবিলম্বে নিঃশর্তে মুক্তি দিতে হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy