আসছে দোল। বোলপুরের নানা কাপড়ের দোকানে বসন্ত উৎসবে বিক্রির আশায় টাঙানো হচ্ছে হলুদ শাড়ি। ছবি: বিশ্বজিৎ রায়চৌধুরী
পৌষমেলা করেনি বিশ্বভারতী। কিন্তু, রাজ্য সরকার এগিয়ে এসে ‘বিকল্প’ পৌষমেলা করেছিল। তার জেরে কিছুটা হলেও বেচাকেনা হয়েছিল বোলপুর-শান্তিকেতনের ব্যবসায়ীদের। কিন্তু, দোলের আগে ফের তাঁদের কপালে চিন্তার ভাঁজ। কারণ, এ বছরও বসন্ত উৎসবের আয়োজন করবে না বলে বিশ্বভারতী জানিয়ে দিয়েছে। তার পরিবর্তে ঘরোয়া ভাবে আয়োজিত হবে বসন্ত বন্দনা।
বিশ্বভারতী বসন্ত উৎসব না-করায় বড় রকমের আর্থিক ক্ষতির আশঙ্কা করছেন ব্যবসায়ীরা। তাঁদের অনেকেরই দাবি, “পৌষমেলা ও বসন্ত উৎসব, এই দুই উৎসবের দিকেই আমরা সারা বছর তাকিয়ে থাকি। কারণ, বছরভর পর্যটকদের আনাগোনা থাকলেও এই দুই উৎসবে বিপুল সংখ্যক পর্যটক আসেন শান্তিনিকেতনে। বিক্রিবাটাও অনেক বেশি হয়। এ বারও বিশ্বভারতী পৌষমেলা না করায় কিছুটা ক্ষতির মুখে পড়তে হয়েছে আমাদের। বসন্ত উৎসব না-হওয়ায় অনেক ক্ষতি হবে।’’
অতিমারির কারণে পরপর দু’বছর বসন্ত উৎসব বন্ধ রেখেছিল বিশ্বভারতী। গত বছরও ছাত্র আন্দোলনকে কারণ দেখিয়ে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করেনি, তার পরিবর্তে তারা নিজেদের মধ্যে বসন্ত উৎসব উদ্যাপন করেছিল। স্থানীয় ব্যবসায়ীদের অনেকেই ভেবেছিলেন, এ বার হয়তো বিশ্বভারতী স্বাভাবিক ভাবে বসন্ত উৎসবের আয়োজন করবে। বাজার ভালো হবে ভেবে মজুত করেছিলেন উৎসবের বিভিন্ন ধরনের সাজপোশাক থেকে শুরু করে খাবারের সামগ্রী। কিন্তু, দোলের কয়েক দিন আগে বিশ্বভারতীর এমন সিদ্ধান্তে সমস্ত পরিকল্পনা ভন্ডুল হয়ে গেল বলে দাবি ব্যবসায়ীরা। বোলপুর শান্তিনিকেতনের বস্ত্র ব্যবসায়ী, টোটোচালক, খাবারের দোকান মালিক থেকে রং বিক্রেতা— সকলেই এখন ক্ষতির আশঙ্কা করছেন। বস্ত্র ব্যবসায়ীদের একাংশ জানাচ্ছেন, তিন বছর বসন্ত উৎসব হয়নি। এ বার উৎসব হবে আশা নিয়ে হলুদ শাড়ি ও সাদা পাঞ্জাবি মজুত করেছিলেন। কিন্তু উৎসব না-হওয়ায় এই সমস্ত শাড়ি, পাঞ্জাবির কী হবে, তাঁরা বুঝতে পারছেন না। বস্ত্র ব্যবসায়ী বিনয় কপূর, বিশ্বরূপ পাল বলেন, “ভেবেছিলাম এ বছর বসন্ত উৎসব হবে, বেচাকেনাও ভাল হবে। কিন্তু, এখন বিশ্বভারতীর সিদ্ধান্তে আমাদের ব্যবসার অনেকখানি ক্ষতি হয়ে গেল।”
চিন্তায় পড়েছেন শহরের হোটেল ও ছোটখাটো খাবারের দোকান মালিকেরাও। হোটেল ব্যবসায়ী রাজু সাউ, সঞ্জীব ভকত বলেন, “ শান্তিনিকেতনে পৌষমেলা ও বসন্ত উৎসব আমাদের সারা বছরের অনেকটা ব্যবসা দেয়। এ বার কতটা পর্যটক হবে, কেমন বেচাকেনা হবে, তা নিয়ে আমরা সংশয়ে।’’ কবিগুরু হস্তশিল্পী উন্নয়ন সমিতির সম্পাদক আমিনুল হুদার দাবি, “এ বারও শিল্পীদের আর্থিক ক্ষতির মুখে পড়তে হবে।’’ আশঙ্কায় সোনু বীরবংশী, রাজেশ সাহাদের মতো টোটো চালকেরাও। তাঁরা বলেন, “বসন্ত উৎসব এ বারও না হওয়ায় বহু মানুষই আসবেন না। ফলে আমাদের উপার্জন কম হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy