সরব: পুরুলিয়া ১ ব্লক অফিসে বিজেপির বিক্ষোভ। ছবি: সুজিত মাহাতো
প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনার (প্লাস) তালিকা বাতিল করে সমীক্ষার মাধ্যমে নতুন তালিকা তৈরির দাবি তুলল বিজেপি। সোমবার দুই জেলার অন্যত্র কমবেশি শান্তিপূর্ণ ভাবে স্মারকলিপি দেওয়া হলেও পুরুলিয়া ২ ব্লকে পুলিশ ও বিজেপি কর্মীদের মধ্যে ধস্তাধস্তি বাধল। পুলিশ বাহিনী গিয়ে পরিস্থিতি সামাল দেয়। তবে কিছু জায়গায় বিজেপি কর্মীদের ভাল জমায়েত অনেক দিন পরে দেখা গিয়েছে। রাজনৈতিক পর্যবেক্ষকদের একাংশের মতে, আবাস-ক্ষোভকে হাতিয়ার করে পঞ্চায়েত ভোটের আগে ঝাঁপাতে চাইছে বিজেপি।
এ দিন মিছিল করে বিজেপি কর্মীরা পুরুলিয়া ২ ব্লক অফিসের দিকে এগোনোর চেষ্টা করলে তাঁদের ঠেকাতে পুলিশ রাস্তায় লোহার ব্যারিকেড দিয়ে দেয়। ক্ষুব্ধ বিজেপি কর্মীদের অনেকে ব্যারিকেড তুলে পাশে ফেলে দেন। এ নিয়ে পুলিশের সঙ্গে বিজেপি কর্মীদের ধস্তাধস্তি বাধে। অন্যত্র ব্লক অফিসের বাইরে বিজেপি কর্মীরা অবস্থান বিক্ষোভে বসেন।
বিজেপির পুরুলিয়া ২ ব্লকের এক মণ্ডল সভাপতি রক্ষাকর পান্ডে বলেন, ‘‘আমাদের ব্লকে যত জায়গায় গ্রামসভার মাধ্যমে আবাস প্লাসের তালিকা পাঠের চেষ্টা হয়েছে, প্রতি জায়গায় হয় সাধারণ মানুষ বিক্ষোভ দেখিয়েছেন, নয়তো পথ অবরোধ করেছেন। অধিকাংশ ক্ষেত্রে গরিব মানুষকে বঞ্চিত করে শাসকদলের নেতা-কর্মীদের নাম তালিকায় তোলা হয়েছে। আমাদের দাবি, নতুন সমীক্ষা করে শুধু প্রকৃত গরিব মানুষদের নামই তালিকায় রাখতে হবে।’’ পুরুলিয়া ১ ব্লকের এক মণ্ডল সভাপতি সত্যগোপাল মুখোপাধ্যায়ের প্রশ্ন, ‘‘কোথায় বসে এই ভুলে ভরা তালিকা তৈরি করা হয়েছে?’’
এ দিন মানবাজার ১ বিডিওকে স্মারকলিপি দিতে যাওয়ার পথে বিজেপির মিছিল থেকে আবাস যোজনাতে কারচুপি করা হচ্ছে, তৃণমূল সরকার দুর্নীতিগ্রস্ত — এই সব স্লোগান তোলা হয়। বিজেপির মানবাজার ১ মণ্ডলের সভাপতি অনিল বাউরি বলেন, ‘‘তৃণমূলের নেতাদের নির্দেশে বৈষম্যমূলক তালিকা তৈরি করা হয়েছে।’’ দলের জেলা সম্পাদক জনপ্রিয় ঘোষ বলেন, ‘‘আবাস যোজনায় প্রকৃত প্রাপকদের বঞ্চিত করে তালিকা তৈরি করা যাবে না।’’ মানবাজার ২ ব্লকেও স্মারকলিপি দেওয়া হয় বলে দল সূত্রে দাবি করা হয়েছে।
একই দাবিতে রঘুনাথপুর ১ ব্লক অফিসেও দিনভর বিক্ষোভ অবস্থান করেন রঘুনাথপুর ১ ব্লকের শাঁকা ও নতুনডি পঞ্চায়েতের কিছু বাসিন্দা। বিজেপির নেতৃত্বে এই কর্মসূচিতে ছিলেন দলের শাঁকা ও নতুনডি পঞ্চায়েতের বিজেপির প্রধান, সদস্য ও পঞ্চায়েত সমিতির সদস্যদের। তাঁদের দাবি, তালিকা সংশোধন করে শুধু যোগ্যদের নামই রাখতে হবে।বিডিও (পুরুলিয়া ১) অনিরুদ্ধ ঘোষ ও বিডিও (মানবাজার ১) মোনাজকুমার পাহাড়ি জানান, দাবিপত্র খতিয়ে দেখে প্রয়োজনীয় পদক্ষেপ করা হবে।
অন্য দিকে, বান্দোয়ানে তালিকা নিয়ে সরব হয়েছে সিপিএম। সিপিএমের বান্দোয়ান উত্তর এরিয়া কমিটির সম্পাদক শক্তিপদ দাসের অভিযোগ, বান্দোয়ান পঞ্চায়েত সমিতির এক কর্মাধ্যক্ষের মা ও তাঁর স্ত্রীর নাম তালিকায় রয়েছে। এক পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী-সহ তাঁর পরিবারের একাধিক সদস্যের নামও তালিকায় রয়েছে। অথচ ওই পরিবার অতীতে আবাস যোজনা প্রকল্পের সুবিধা পেয়েছে। তাঁরা বিডিওকে লিখিত ভাবে বিষয়টি জানিয়েছেন।
জেলা তৃণমূল সভাপতি সৌমেন বেলথরিয়া বলেন, ‘‘মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তালিকার সর্বোচ্চ পর্যায়ের স্বচ্ছতা চেয়েছেন। প্রশাসনের শীর্ষ আধিকারিকেরাও তালিকা খতিয়ে দেখতে মাঠে নামছেন। তাঁরা বলছেন, অভিযোগ থাকলে ব্লক অফিসে জমা করতে। কিন্তু বিজেপি ঘোলা জলে মাঠ ধরতে চাইছে।’’
বাঁকুড়ায় রানিবাঁধ উত্তর ও দক্ষিণ মণ্ডলের উদ্যোগে বিডিওকে (রানিবাঁধ) একই দাবিতে স্মারকলিপি দেওয়া হয়। দুই মণ্ডলের সভাপতি তপন মাহাতো ও তারকনাথ সরেনের দাবি, ‘‘গৃহহীনদের অবিলম্বে প্রধানমন্ত্রী আবাস যোজনায় বাড়ি দিতে হবে। যে সব অযোগ্য লোক আবাস যোজনায় বাড়ি পেয়েছেন, তাঁদের উপযুক্ত শাস্তি এবং পুরো টাকা ফেরত দেওয়ার দাবি জানাচ্ছি।’’ বিডিও (রানিবাঁধ) কৌশিক মাইতি জানান, তাঁদের দাবি ঊর্ধ্বতন কর্তৃপক্ষের কাছে পাঠানো হবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy