অনুশীলনে (বাঁ দিক থেকে) অনুষ্টুপ মজুমদার, কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লা, ঋদ্ধিমান সাহা ও অভিমন্যু ঈশ্বরণ। শুক্রবার দুবরাজপুরের এমজিআর স্টেডিয়ামে। নিজস্ব চিত্র
পরিষ্কার আকাশ। কড়া রোদ। সবুজ গালিচার মতো মাঠ। সে মাঠে পাশাপাশি দু’টি নেটের একটিতে ব্যাট করছেন বাংলা ক্রিকেট দলের অন্যতম ক্রিকেটার অভিমুন্য ঈশ্বরণ। অন্যটিতে, অভিমান ভেঙে সদ্য বাংলা দলে ফিরে আসা ঋদ্ধিমান সাহা। তাঁদের সমানে বল করে চলেছেন বাংলা ক্রিকেট দলের বোলারেরা। মাঠে উপস্থিত বাংলা দলের প্রায় সকল ক্রিকেটাররা। প্রত্যেকের গতিবিধিতে নজর রাখছেন কোচ লক্ষ্মীরতন শুক্লা এবং সহকারি কোচ শিবশঙ্কর পাল।
কলকাতার কোনও মাঠ নয়, শুক্রবার সকালের এ ছবি দুবরাজপুরের সাহাপুর গ্রাম পঞ্চায়েতের বড়গুণসীমা গ্রামের এমজিআর ক্রিকেট অ্যাকাডেমির। বীরভূমের প্রত্যন্ত গ্রামে গড়ে উঠা এই ক্রিকেট অ্যাকাডেমিকেই বাংলা সিনিয়র ক্রিকেট দলের অনুশীলনের জন্য বাছা হয়েছে। বৃহস্পতিবার স্বাধীনতা দিবসের দিন থেকে প্রাক্ মরসুম ক্রিকেটের প্রস্তুতি শুরু করেছেন বাংলা দলের খেলোয়াড়েরা। ৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হচ্ছে দলীপ ট্রফি। বাংলা দলের বেশ কয়েক জন ক্রিকেটার ওই দলে আছেন। অক্টোবরে শুরু হচ্ছে রঞ্জি ট্রফি। তাই ১৫ অগস্ট থেকেই প্রস্তুতি শুরু হয়ে গেল।
জানা গিয়েছে, ৪৪ জন ক্রিকেটার, কোচ, সাপোর্ট স্টাফ মিলিয়ে মোট ৫৫ জন আছেন এই আবাসিক শিবিরে। সূত্রের খবর, প্রত্যন্ত এলাকায় অবস্থিত হলেও আবাসিক শিবির করার উপযুক্ত মাঠ ও খেলোয়াড়দের থাকার জন্য হস্টেল-সহ যাবতীয় পরিকাঠামো রয়েছে এখানে। স্টেডিয়ামটি তৈরি করিয়েছেন স্থানীয় ব্যবসায়ী শেখ মহিম। যিনি দুবরাজপুর পঞ্চায়েত সমিতির পূর্ত কর্মাধ্যক্ষও বটে। দিন কয়েক আগেই বাংলার জুনিয়র দলও এখানে আবাসিক শিবির করে গিয়েছে। সূত্রের খবর, সিএবির সভাপতি স্নেহাশিস গঙ্গোপাধ্যায় বীরভূম ক্রীড়া সংস্থার সম্পাদক বিদ্যাসার সাউ মারফত স্টেডিয়ামটি ভাড়া নেওয়ার ব্যবস্থা করেন। বুধবারই বন্দেভারত ট্রেনে বোলপুরে নেমে ,সোজা স্টেডিয়ামে উপস্থিত হন সকলে।
মাঠ দেখে খুশি লক্ষ্মীরতন বলেন, ‘‘মাঠ তো বটেই তিন তারা হোটেলের মতো হস্টেল রয়েছে। খাওয়ার ব্যবস্থা, সুইমিংপুল, জিম... কী নেই।’’ তবে বর্ষার সময় এই জায়গাটিকে বেছে নেওয়ার পিছনে অন্য কারণও রয়েছে বলে জানান লক্ষ্মীরতন। তাঁর কথায়, ‘‘পঙ্কজ রায় স্যর থেকে শুরু হয়েছিল, তার পরে সৌরভ গঙ্গোপাধ্যায়, আমি, তার পরে অভিষেক পোড়েল— চারটে প্রজন্ম কলকাতায় এই তিন মাস বৃষ্টির জন্য অফ সিজনে প্র্যাকটিস আউটডোরে করতে পারিনি। অক্টোবরে রঞ্জি। আগে এই সময়টায় পুঁদুচেরি, চেন্নাই, বেঙ্গালুরুর মতো বাইরের জায়গায় প্র্যাকটিসের জন্য যেতে হত। মাঠে অনুশীলন না করে কী ভাবে ম্যাচ খেলা হবে।’’
বাংলা দলের কোচ বলেন, ‘‘এই জায়গা বাছার কারণ দু’টি— এক পরিকাঠামো, দুই এখানে বৃষ্টি হলেও মাঠে জল দাঁড়ায় না। দ্রুত মাঠ শুকিয়ে যায়। আর বাইরে যাওয়ার প্রয়োজন কী।’’ তাঁর সংযোজন, ‘‘আশা করি খুব শীঘ্রই এখানে বোর্ডের (বিসিসিআই) অনূর্ধ্ব ১৬, অনূর্ধ্ব ১৯ দলের খেলা হবে। রঞ্জি ট্রফি খেলার মতো পরিকাঠামোও রয়েছে।’’
পরিকাঠামো ও পরিবেশে খুশি ক্রিকেটারেরাও। ঋদ্ধিমান সাহা, অভিমুন্য ঈশ্বরণ এবং অনুষ্টুপ মজুমদারদের ব্যাটিং প্র্যাকটিস সেরে কোচের সঙ্গে আলোচনায় ডুবে গেলেন। সহকারি কোচ শিবশঙ্কর পাল জানালেন, এর পর ক্যাচ প্র্যাকটিস হবে। এ ভাবেই ২৮ অগস্ট পর্যন্ত নিবিড় অনুশীলনে ডুবে থাকবেন সকলে।
৫ সেপ্টেম্বর থেকে শুরু হওয়া দলীপ ট্রফিতে এ, বি,সি ডি চারটি দল গঠিত হয়েছে। বি দলের নেতৃ্ত্ব দেবেন অভিমুন্য ঈশ্বরণ। যে দলে যশস্বী জয়সওয়াল, সরফরাজ খান, ঋষভ পন্থেরাও রয়েছেন। জানা গিয়েছে, এখানে দিন কয়েক অনুশীলন করার পরে অভিমুন্য চলে যাবেন। বাংলা ক্রিটের দলের অন্যতম সদস্য আকাশদীপ, মুকেশ কুমার, অভিষেক পোড়েলরা অবশ্য শিবিরে উপস্থিত হননি। এখন তাঁরা ভারতীয় ক্রিকেট অ্যাকাডেমিতে আছেন। বিদ্যাসার সাউ বলেন, ‘‘জেলায় গর্ব করার মতো একটি ক্রিকেট স্টেডিয়াম এটি। যেখানে সিএবি তাদের খেলোয়াড়দের অনুশীলনের জন্য বেছে নিতে পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy