এবছর জয়দেব মেলায় আখড়ায় গানে মগ্ন সাধন দাস বৈরাগ্য। — ফাইল চিত্র।
প্রয়াত হলেন প্রখ্যাত বাউল শিল্পী তথা ‘মনের মানুষ’ আখড়ার প্রতিষ্ঠাতা সাধন দাস বৈরাগ্য। রবিবার রাতে পূর্ব বর্ধমানের খণ্ডঘোষের আমরুল গ্রামে তাঁর স্থাপিত বিশ্বমানব প্রেম পঞ্চবটি আশ্রমে শেষ নিঃশ্বাস ত্যাগ করেন শিল্পী। মৃত্যুর সময়ে তাঁর বয়স হয়েছিল ৭২ বছর। আশ্রম সূত্রে জানা গিয়েছে, বেশ কিছু দিন ধরেই তিনি অসুস্থ ছিলেন। চিকিৎসা চলছিল তাঁর।
বাউল গানের জন্যই বিখ্যাত সাধন দাস বৈরাগ্য। দীর্ঘদিন ধরে বাউল ও দেহতত্ত্ব গানের চর্চা করে এসেছেন। পূর্ব বর্ধমানের মুক্তিপুর গ্রামে তাঁর জন্ম। ছেলেবেলা থেকেই সঙ্গীতচর্চার শুরু। রেডিয়োয় সঙ্গীত পরিবেশন করেছেন। শুধু বাংলায় নয়, সাধন দাস বৈরাগ্যর জনপ্রিয়তা দেশের সীমা ছাড়িয়ে পৌঁছে গিয়েছিল বিশ্বের দরবারে। জাপানে গিয়ে তিনি খ্যাতি পান। সেই সূত্রে জাপানেও অনেকে তাঁর শিষ্যত্ব গ্রহণ করেন। তাঁর বাউল তত্ত্বের টানে মাকি কাজুমি জাপান থেকে ভারতে এসে তাঁর কাছে শিষ্যত্ব গ্রহণ করেছিলেন।
গানের পাশাপাশি, বাউল ও দেহতত্ত্বের উপরে বেশ কয়েকটি বইও লিখেছেন। দেশ, বিদেশে বিভিন্ন জায়গায় থেকে বহু সম্মাননা পেয়েছেন। গুরু-শিষ্য পরম্পরা মেনে নিজের হাতে বহু শিষ্যও তৈরি করেছেন। তাঁর এই কর্মকাণ্ডের বেশ খানিকটা জুড়ে ছিল বীরভূম। প্রতি বছর জয়দেবের মেলায় তাঁর প্রতিষ্ঠিত মনের মানুষ আখরায় বাউলের দেহতত্ত্ব ও গান শুনতে ভিড় জমাতেন দেশ-বিদেশের বহু মানুষ। জাতীয় নাগরিকত্ব সংশোধনী আইন নিয়েও গান বেঁধে এক সময়ে তাঁকে প্রতিবাদ করতে দেখা যায়।
তাঁর প্রয়াণে শোকস্তব্ধ শিল্পী জগৎ থেকে শুরু করে বাউল, ফকির, সাধক, সাধিকারা। জয়দেবের মনের মানুষ আখড়া-সহ তাঁর প্রতিষ্ঠিত প্রতিটি আশ্রমে সোমবার ছিল বিষণ্নতার সুর। এ দিন বিশ্ব মানব প্রেম পঞ্চবটি আশ্রমে তাঁকে বিদায় জানাতে অনেকে ভিড় করেছিলেন। তাঁর শিষ্য বাউল শিল্পী বাপি দাস বাউল বলেন, “ অনেক ছোট থেকে ওঁকে চিনি। ওঁর সান্নিধ্য লাভ করার সুযোগ হয়েছিল। বহু কিছু ওঁর কাছে শিখেছি। তাই ওঁর দেখানো পথেই আগামী দিনে ওঁর স্বপ্নকে আমরা এগিয়ে নিয়ে যাব। ”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy