বৃহস্পতিবার বোলপুরে দলীয় কার্যালয়ে অনুব্রত মণ্ডল। — নিজস্ব চিত্র।
জেলমুক্তির পর প্রথম সাংবাদিক বৈঠক করলেন বীরভূমের তৃণমূল নেতা অনুব্রত মণ্ডল। দু’বছর কারাবাসের পর মঙ্গলবার জেলায় ফিরেছেন তিনি। প্রথম বার সাংবাদিকদের মুখোমুখি হয়েই শান্তির বার্তা দিতে চাইলেন। জেলায় সকলকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে বলেও জানালেন। দলনেত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় এবং দলের সেনাপতি অভিষেক বন্দ্যোপাধ্যায়ের এই সংক্রান্ত নির্দেশের কথাও তিনি স্মরণ করিয়ে দিয়েছেন। সেই সঙ্গে অনুব্রত জানিয়েছেন, কালীপুজো মিটলে আবার তাঁকে সক্রিয় ভাবে দেখা যাবে। ব্লকে ব্লকে যাবেন তার পর থেকেই।
অনুব্রত সাংবাদিক বৈঠকে বলেন, ‘‘আমি ভাল আছি। মুখ্যমন্ত্রী এখানে এসেছিলেন, তাঁকে ধন্যবাদ জানাই। এখন তো বর্ষা। পুজোটা কাটুক। কালীপুজোর পর আবার ব্লকে ব্লকে যাব, আবার কাজ করব। আমাদের সকলকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে।’’
দক্ষিণবঙ্গের বন্যা পরিস্থিতি নিয়ে উদ্বেগ প্রকাশ করেছেন অনুব্রত। বলেছেন, ‘‘সব ধরনের মানুষ বন্যা মোকাবিলায় সাহায্য করুন। সকলে এগিয়ে আসুন। মানুষের পাশে থাকতে হবে আমাদের। খানাকুল ভেসে গিয়েছে। চাষের অনেক ক্ষতি হয়েছে।’’
বস্তুত, অনুব্রত বীরভূমে ফেরার পরে জেলা পরিষদের সভাধিপতি কাজল শেখের সঙ্গে তাঁর ‘দ্বন্দ্ব’ নিয়ে চর্চা শুরু হয়েছে। কাজলের সঙ্গে কেষ্টর ‘মধুর’ সম্পর্কের কথা কারও অজানা নয়। অনুব্রত জেলে থাকাকালীন বীরভূমে তৃণমূলের জেলা সংগঠন চালাত দলীয় কোর কমিটি। যার অন্যতম সদস্য কাজল। ভোটের পরে ‘অনুব্রত-বিরোধী’ কাজলকেই জেলা সভাধিপতি করে দল। অনুব্রত ফেরার পর দলীয় কার্যালয় থেকে কোর কমিটির নেতাদের ছবি সরিয়ে শুধু তাঁর ছবি দেওয়ালে রাখা হয়েছে। যা নিয়ে কাজল অসন্তোষ চেপে রাখেননি। বলে দিয়েছেন, ‘‘কোর কমিটির সদস্যদের ছবি সরিয়ে দেওয়াটা ঠিক হয়নি।’এর পর বুধবার ‘নিজের এলাকা’ নানুরে একটি কর্মী-বৈঠকে কাজলকে বলতে শোনা গিয়েছে, ‘‘পাঙ্গা নিতে এসো না। হাতে চুড়ি পরে বসে নাই। যে দিন গোটাব, সে দিন একদম গুটিয়ে দেব।’’ কাজল কারও নাম না করলেও বীরভূমের রাজনীতি নিয়ে ওয়াকিবহালদের অনেকে বলছেন, তিনি হুঁশিয়ারি দিতে চেয়েছেন নানুরেরই ‘অনুব্রত-ঘনিষ্ঠ’ তৃণমূল নেতা করিম খানকে।
অনুব্রত জেলায় ফেরার পর থেকেই কোর কমিটি নিয়ে দলের অন্দরে চাপানউতর চলছে। সেই আবহেই মিলেমিশে কাজের বার্তা দিলেন অনুব্রত। তিনি বলেন, ‘‘সবাইকে মিলেমিশে কাজ করতে হবে। মানুষের পাশে থাকতে হবে। আমরা সবাই মিলে কাজ করব। কেউ যেন অশান্তি না করে। সবাই যেন সবাইকে নিয়ে চলে। মমতা এবং অভিষেকের নির্দেশ আছে তেমনই।’’
কন্যা সুকন্যা মণ্ডলের কারাবাসের প্রসঙ্গেও বৃহস্পতিবার আক্ষেপ ঝরে পড়ে অনুব্রতের গলায়। তিনি বলেন, ‘‘আমার মেয়েকে ১৬ মাস জেল খাটানো হয়েছে। সে সাধারণ বাড়ির মেয়ে। কোনও রাজনৈতিক নেত্রী নয়। আমি হয়তো ঈশ্বরের কাছে এমন কোনও অন্যায় করেছিলাম, যার শাস্তি পেয়েছি। তবে আমি আইনকে সম্মান করি। কোনও বিতর্কে যাব না।’’
সামনের সপ্তাহে কলকাতায় চিকিৎসা করাতে আসবেন অনুব্রত। সাংবাদিকেরা তাঁকে প্রশ্ন করেছিলেন, মুখ্যমন্ত্রীর সঙ্গে দেখা করার কোনও পরিকল্পনা আছে কি না? জবাবে তিনি বলেন, “আমি আমার চিকিৎসা করাতে যাব। তবে যাওয়া উচিত বলে আমি মনে করি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy