E-Paper

কেন্দ্রীয় বাহিনী না থাকলে কী হবে, আশঙ্কা ওঁদের

সোমবার নতুন করে কোনও পরিবার গঙ্গা পেরিয়ে মুর্শিদাবাদের দিক থেকে শিবিরে আসেনি। সন্ধের পরে জঙ্গিপুর পুলিশ-জেলার সুপার আনন্দ রায়, মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব-সহ পুলিশ আধিকারিকেরা শিবিরে গিয়ে আশ্রিতদের সঙ্গে কথা বলেন।

শমসেরগঞ্জের রাস্তায় টহল কেন্দ্রীয় বাহিনীর।

শমসেরগঞ্জের রাস্তায় টহল কেন্দ্রীয় বাহিনীর। ছবি: অর্কপ্রভ চট্টোপাধ্যায়।

জয়ন্ত সেন

শেষ আপডেট: ১৫ এপ্রিল ২০২৫ ০৭:২৫
Share
Save

ঘরে ফেরার ব্যাপারে পুলিশ আশ্বস্ত করছে। রাজ্য পুলিশের এডিজি (আইন-শৃঙ্খলা) জাভেদ শামিম দাবি করছেন, যাঁরা মুর্শিদাবাদ ছেড়ে মালদহে গিয়েছিলেন, তাঁদের মধ্যে ১৯ জন রবিবার ফিরেছেন ঘরে। পুলিশ সূত্রের দাবি, আরও ১০০টি পরিবারকে ফেরানোর চেষ্টা হচ্ছে। কিন্তু সংশোধিত ওয়াকফ আইনের প্রতিবাদের নামে মুর্শিদাবাদে যে পরিস্থিতি তাঁরা দেখেছেন দিন তিনেক আগে, তার পরে পুলিশের আশ্বাসে পুরোপুরি ভরসা করতে পারছেন না ওঁরা। ধুলিয়ানের বেতবোনা, বাজারপাড়া বা হাতিচিত্রা থেকে গঙ্গা পেরিয়ে মালদহের কালিয়াচক ৩ ব্লকের পারলালপুর গ্রামের অস্থায়ী শিবিরে আশ্রয় নেওয়া ঘরছাড়ারা।

সোমবার নতুন করে কোনও পরিবার গঙ্গা পেরিয়ে মুর্শিদাবাদের দিক থেকে শিবিরে আসেনি। সন্ধের পরে জঙ্গিপুর পুলিশ-জেলার সুপার আনন্দ রায়, মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব-সহ পুলিশ আধিকারিকেরা শিবিরে গিয়ে আশ্রিতদের সঙ্গে কথা বলেন। ঘরছাড়াদের অভয় দেওয়ারচেষ্টা করেন।

পরিস্থিতি কতটুকু বদলেছে দেখতে এ দিন সাতসকালে নৌকায় গঙ্গা পেরিয়ে বেতবোনার বাড়িতে গিয়েছিলেন বছর তিরিশের চিরঞ্জিত মণ্ডল। দুপুরে মালদহে ফিরে বলেন, ‘‘এলাকায় বিএসএফের টহল জোরদার রয়েছে। পুলিশও রয়েছে। কিন্তু ঘরে গিয়ে পরিবার নিয়ে থাকব কোথায়?’’ জানান, ঘরের ভিতরের সব কিছুই পুড়িয়ে খাক করা হয়েছে। খাবার থেকে শুরু করে আসবাব লুট হয়েছে। তাঁর সংযোজন, ‘‘এখন এলাকায় কেন্দ্রীয় বাহিনী আছে। তাই গোলমাল হয়তো হচ্ছে না। কিন্তু বাহিনী ফিরে গেলে, ফের হামলা হতে পারে! পুলিশ যা-ই বলুক, এখনই বাবা, মা, স্ত্রী ও সন্তানকে নিয়ে ফিরে যেতে চাই না।’’

প্রায় এক সুর ধুলিয়ান সবজিপট্টির নমিতা মণ্ডলের গলায়। গত শনিবার থেকে মেয়েকে নিয়ে তিনি রয়েছেন পারলালপুরে। স্বামী প্রদীপ ও ছেলে সুমন ধুলিয়ানে। স্বামীর সঙ্গে এ দিন এক বার ফোনে কথা হয়েছে জানিয়ে বলেন, ‘‘কেন্দ্রীয় বাহিনী চলে গেলে, পরিস্থিতি ফের খারাপ হয়ে পারে। ছেলেকে নিয়ে স্বামীকেও শিবিরে চলে আসতে বলেছি।’’ বেতবোনার লক্ষ্মী মণ্ডলের বক্তব্য, ‘‘এখনই শিবির ছেড়ে যাচ্ছি না। শিবিরে ছেলেমেয়েদের নিয়ে দুটো খাবার তো খেতে পাচ্ছি। ওখানে গেলে খাব কী?”

এ দিনও শিবিরে ব্লক প্রশাসনের তরফে প্রায় চারশো জনকে চার বেলা খাবার দেওয়া হয়েছে।স্বাস্থ্য পরিষেবাও মিলেছে। এ দিন দুপুরে শিবির পরিদর্শন করেন বিজেপির রাজ্য সভাপতি তথা কেন্দ্রীয় শিক্ষা প্রতিমন্ত্রী সুকান্ত মজুমদার। দলের তরফে শিবিরের মানুষজনের হাতে শুকনো খাবারের প্যাকেটতুলে দিয়ে সুকান্তের অভিযোগ, “পুলিশ-প্রশাসন জোর করেমালদহের পারলালপুর হাইস্কুল থেকে শিবির তুলে দিতে চাইছে। রাজ্য সরকারকে বলব, যত দিন নিরাপত্তা সুরক্ষিত না হচ্ছে, তত দিন জোর করে কাউকে মুর্শিদাবাদে ফেরতপাঠাবেন না।’’

শিবির তুলে দেওয়ার অভিযোগ অস্বীকার করেছেন জেলা পুলিশ ও প্রশাসনের কর্তারা। শিবিরে যাওয়া পুলিশকর্তাদের আশ্বাস, ঘরছাড়ারা ধুলিয়ান ও শমসেরগঞ্জের বাড়িতে ফিরলে, নিরাপত্তার সব রকমবন্দোবস্ত করা হবে। ওই এলাকার (‌বৈষ্ণবনগর) তৃণমূল বিধায়ক চন্দনা সরকারের পাল্টা মন্তব্য,‘‘শিবিরে মানুষদের জন্য যা কিছু করছে তা পুলিশ-প্রশাসনই করছে। বিভ্রান্তি ছড়ানো ছাড়া, বিজেপিরকাজ নেই।”

সহ প্রতিবেদন: বিমান হাজরা

(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)

Murshidabad Unrest Situation central forces

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:

আরও পড়ুন:

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy

এটি একটি প্রিন্ট আর্টিক্‌ল…

  • এমন অনেক খবরই এখন আপনার হাতের মুঠোয়

  • সঙ্গে রোজ পান আনন্দবাজার পত্রিকার নতুন ই-পেপার পড়ার সুযোগ

  • ই-পেপারের খবর এখন শুধুই ছবিতে নয়, টেক্সটেও

প্ল্যান সিলেক্ট করুন

মেয়াদ শেষে নতুন দামে আপনাকে নতুন করে গ্রাহক হতে হবে

Best Value
এক বছরে

৫১৪৮

১৯৯৯

এক বছর পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।
*মান্থলি প্ল্যান সাপেক্ষে
এক মাসে

৪২৯

১৬৯

এক মাস পূর্ণ হওয়ার পর আপনাকে আবার সাবস্ক্রিপশন কিনতে হবে। শর্তাবলী প্রযোজ্য।