চিকিৎসকদের বেতন এবং ভাতা বৃদ্ধির বিষয়ে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় যে ঘোষণা করেছেন, তাকে কার্যত ‘ললিপপ’ দেখানো বলে সরব হয়েছে বিরোধীরা। আর জি কর-কাণ্ডের প্রেক্ষিতে সরকারের ‘ভূমিকা’র কথা স্মরণ করিয়ে দিয়ে চিকিৎসকদের প্রতি রাজ্য আসলে কতটা আন্তরিক, তা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছে তারা। যদিও বিরোধীদের বক্তব্যে ‘রাজনীতি’ই দেখছে শাসক দল তৃণমূল কংগ্রেস।
আলিপুরে ধনধান্য প্রেক্ষাগৃহে চিকিৎসকদের সম্মেলনে সোমবার মুখ্যমন্ত্রী ভাতা ও বেতন বৃদ্ধির ঘোষণা করেছেন। তার পরেই আর জি কর-কাণ্ডের প্রতিবাদী চিকিৎসকদের একাংশ মনে করিয়ে দিয়েছেন, এটা তাঁদের প্রাপ্যই ছিল এবং ছ’বছরে এই প্রথম ‘সিনিয়র রেসিডেন্টদের’ মাইনে বাড়ল। এই প্রেক্ষাপটেই সরব হয়েছে বিরোধীরা। আন্দোলনকারী চিকিৎসকদের বদলি-সহ সাম্প্রতিক সময়ে স্বাস্থ্য-ক্ষেত্রের কয়েকটি বিতর্কের কথা উল্লেখ করে রাজ্য বিজেপির প্রধান মুখপাত্র শমীক ভট্টাচার্য বলেছেন, “জাল ওষুধ, জাল স্যালাইন, প্রতিহিংসামূলক বদলি, নিরাপত্তার প্রশ্ন— এই সব কিছু থেকে নজর ঘোরাতে মুখ্যমন্ত্রী এটা ‘ললিপপ’ দিলেন।” কার্যত একই সুরে সরকার এবং মুখ্যমন্ত্রীর এই ঘোষণাকে ‘লাঠি ও গাজর নীতি’ বলে আখ্যা দিয়েছেন সিপিএমের রাজ্য সম্পাদক মহম্মদ সেলিম। হুগলির ডানকুনিতে দলের রাজ্য সম্মেলনের ফাঁকেই ওই নীতির ব্যাখ্যা করে সেলিমের তোপ, “এক দিকে হুমকি-প্রথা চলছে। প্রতিবাদী চিকিৎসকের পিছনে পুলিশ লাগানো হচ্ছে, এখনও মামলা চলছে। তাতেও কাজ না হওয়ায় এখন টাকা বাড়ানো হচ্ছে। কিন্তু ন্যায্য দাবিতে চিকিৎসক ও সাধারণ মানুষের আন্দোলন বন্ধ করা যাবে না।”
বিরোধীদের বক্তব্যে আমল দেয়নি তৃণমূল। দলের রাজ্য সহ-সভাপতি জয়প্রকাশ মজুমদারের বক্তব্য, “সিপিএম ও বিজেপি প্রকাশ্যে বেতন বৃদ্ধির বিরোধিতা করুক। তা হলে চিকিৎসকেরাও বুঝতে পারবেন, রাজনৈতিক উদ্দেশ্যে সরকারের বিরোধিতা চলছে। বেতন বৃদ্ধিতে আপত্তি জানিয়ে মামলা করতে হলে, সেটা যেন ঘুরপথে না করে বিরোধীরা তা দলের নামেই করেন!”
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)