প্রতীকী ছবি।
ন্যাশনাল পপুলেশন রেজিস্টার (এনপিআর) নিয়ে কেন্দ্রের বিরোধিতায় সরব বেশ কয়েকটি রাজ্য। কেরল, পশ্চিমবঙ্গ, পঞ্জাবের মতো রাজ্য এনপিআরের তথ্য সংগ্রহে রাজি নয়। তাদের দাবি, কেন্দ্র শুধু জনগণনা করুক। কিন্তু কেন্দ্র নাছোড়। ১ এপ্রিল থেকেই এনপিআরের তথ্য সংগ্রহ শুরু করতে চলেছে কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক। প্রথম দফায় দেশ জুড়ে সেনা, আধাসেনা, মিলিটারি বোর্ড, ক্যান্টনমেন্ট, মাঝদরিয়ায় থাকা যুদ্ধজাহাজে এনপিআরের নথি নেওয়া হবে। সেই জন্য ‘স্পেশাল চার্জ’ অফিস গড়েছে জনগণনা দফতর।
কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের খবর, সেনা ও আধাসেনাদের এনপিআর-নথি সংগ্রহ দিয়েই এই অভিযান শুরু হবে। বিভিন্ন প্রান্তে, সীমান্তে মোতায়েন সেনা-আধাসেনার ক্ষেত্রে জনগণনার তথ্য নেওয়া হবে না। সংগ্রহ করা হবে শুধু এনপিআর-তথ্য। প্রতিটি রাজ্যেই সেনা ও আধাসেনার কোনও না-কোনও প্রতিষ্ঠান, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র বা ওই জওয়ানদের উপস্থিতি আছে। ফলে ১ এপ্রিল থেকে আনুষ্ঠানিক ভাবে দেশ জুড়ে এনপিআর-নথি সংগ্রহ শুরু করতেই এই ফৌজি-কৌশল বলে মনে করছে নবান্ন।
সরকারি সূত্রের খবর, সেনা এবং আধাসেনার এনপিআর-তথ্য সংগ্রহের কাজ সর্বাগ্রে শুরু করতে ২৪ জানুয়ারি দিল্লিতে বৈঠক হয়। জনগণনা বিভাগের যুগ্ম অধিকর্তা ধীরাজ জৈনের ডাকা সেই বৈঠকে সংশ্লিষ্ট সকলেই ছিলেন। সেখানেই ঠিক হয়, সেনা ও আধাসেনার এলাকায় সাধারণ মানুষের অবাধ প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা আছে। ফলে সাধারণ প্রশাসনের পক্ষ থেকে সেখানে এনপিআর বা জনগণনার তথ্য সংগ্রহ করা সম্ভব নয়। ঠিক হয়েছে, প্রতিরক্ষা ও অভ্যন্তরীণ নিরাপত্তা বিভাগের পক্ষ থেকে এই ধরনের এলাকাগুলির তালিকা এবং কত জন জওয়ান বা আধাসেনা রয়েছেন, তার হিসেব দেওয়া হবে। তৈরি হবে স্পেশাল চার্জ অফিস। সেনা, আধাসেনা ও জনগণনা বিভাগের তরফে এক জন করে নোডাল অফিসার নিয়োগ হবে। সংশ্লিষ্ট এলাকায় গিয়ে এনপিআরের তথ্য সংগ্রহ শুরু হবে ১ এপ্রিল।
কোথায় কোথায় প্রথম তথ্য নেওয়া হবে? স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক জানাচ্ছে, ক্যান্টনমেন্ট বোর্ড, সেনা শিবির, সেনা প্রতিষ্ঠান, প্রতিরক্ষা সংক্রান্ত গবেষণা কেন্দ্র, প্রশিক্ষণ কেন্দ্র, যুদ্ধে সদাপ্রস্তুত এলাকা, সীমান্তের ফরওয়ার্ড এলাকা, যুদ্ধজাহাজ, নৌবাহিনী-বিমানবাহিনীর ঘাঁটি এবং সিআরপি, বিএসএফ, আইটিবিপি, বিআরও, এসএসবি, সিআইএসএফ, আরপিএফের মতো আধাসেনার সব অফিসেও একই ভাবে এনপিআর নথি ‘আপডেট’ বা হালতামামি করা হবে। তবে জম্মু-কাশ্মীর, লাদাখ, হিমাচল, উত্তরাখণ্ডে বরফপাতের জন্য ১ এপ্রিলের বদলে এনপিআর-তথ্য নেওয়া হবে ১১ সেপ্টেম্বর থেকে ৫ অক্টোবর পর্যন্ত। কেউ বাদ থেকে গেলে ২০২১-এর ৯ ফেব্রুয়ারি থেকে ৫ মার্চের মধ্যে তাঁদের নথি নেওয়া হবে।
তবে সেনা ও আধাসেনা এলাকায় নিরাপত্তার বিধিনিষেধ থাকায় বেশ কিছু প্রশ্নের মুখেও পড়েছেন জনগণনা-কর্তারা। ভার্চুয়াল কি-বোর্ডের মাধ্যমে সেনা, আধাসেনার তথ্য নেওয়া হবে কি না, দিল্লির বৈঠকে ক্যাবিনেট সেক্রেটারিয়েটের এক কর্তা তা জানতে চান। সংগৃহীত তথ্যের সুরক্ষা নিয়ে প্রশ্ন তোলে কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগও। সেনা ও আধাসেনার জন্য সরাসরি মোবাইল অ্যাপে নথি আপডেট না-করে অফলাইনে তা
সংগ্রহ করার পরামর্শ দেওয়া হয় কেন্দ্রীয় গোয়েন্দা বিভাগের তরফে। যদিও জনগণনা বিভাগের প্রযুক্তি অধিকর্তা বৈঠকে জানান, এনপিআরে সংগৃহীত সব তথ্য ‘এনক্রিপ্টেড ফর্ম্যাটে’ থাকবে। যাঁরা এই অ্যাপ ব্যবহার করে তথ্য সংগ্রহ করবেন, তাঁদের পরিচয় ও বিশ্বাসযোগ্যতা প্রশ্নাতীত হলে তবেই ‘সংরক্ষিত’ এলাকায় পাঠানো হবে।
জনগণনা বিভাগের আশ্বাসের পরে সেনা, সব আধাসেনা ও নিরাপত্তা সংস্থাগুলি এপ্রিলের শুরু থেকেই এনপিআর অভিযানে নামছে বলে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রক সূত্রের খবর।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy