থানায় প্রতারিত ১৭ জন জওয়ান-পত্নী। তাঁদের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ায় অভিযুক্ত হেমা তামাং (ইনসেটে)। — নিজস্ব চিত্র।
জওয়ানদের স্ত্রীদের কাছ থেকে দেড় কোটি টাকা হাতিয়ে নেওয়ার অভিযোগ আর এক জওয়ান-পত্নীর বিরুদ্ধে। অভিযোগ, তিনি বেছে বেছে সেনাবাহিনীর সঙ্গে যুক্ত ব্যক্তিদের স্ত্রীদের ‘টার্গেট’ করেছিলেন। তাঁদের কাছ থেকে নানা অছিলায় টাকা ধার নেন। কিন্তু পরিশোধ করেননি কোনওটাই। গত কয়েক দিন ধরে অভিযুক্ত জওয়ান-পত্নীর সন্ধান না পেয়ে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন প্রতারিতেরা।
১৭ জন জওয়ান-পত্নী শিলিগুড়ি পুলিশ কমিশনারেটের বাগডোগরা থানায় বৃহস্পতিবার অভিযুক্ত হেমা নগরবা তামাংয়ের বিরুদ্ধে লিখিত অভিযোগ দায়ের করেছেন। হেমার স্বামী মহেন্দ্র তামাং সেনাবাহিনীতে কর্মরত। বর্তমানে তিনি জম্মু ও কাশ্মীরে নিযুক্ত রয়েছেন। পুলিশ সূত্রে খবর, হেমা দার্জিলিঙের গৈরিগাঁওয়ের বাসিন্দা। কিন্তু গত এক থেকে দেড় বছর ধরে তিনি শিলিগুড়ি সংলগ্ন আপার বাগডোগরার স্টালিননগরে বাড়ি ভাড়া করে থাকছিলেন। আপার বাগডোগরায় তাঁর একটি কাপড়ের দোকানও রয়েছে।
শিলিগুড়ির অন্য জওয়ান-পত্নীদের সঙ্গে হেমার ঘনিষ্ঠতা গত কয়েক মাসে বৃদ্ধি পায়। অভিযোগ, আর্মি ওয়াইফ্স ওয়েলফেয়ার অ্যাসোসিয়েশনের সদস্যদের টার্গেট করা শুরু করেন তিনি। কখনও বাড়ি কেনার নাম করে, কখনও নিজের দোকানের প্রয়োজনের কথা বলে এই জওয়ান-পত্নীদের কাছ থেকে হেমা টাকা ধার নেন। কারও কাছ থেকে এক লক্ষ, কারও কাছ থেকে দুই লক্ষ, কারও কাছ থেকে আবার একযোগে ১০ লক্ষ টাকা নেন তিনি। এক থেকে তিন বছরের মধ্যে এই টাকা ফেরত দেওয়ার প্রতিশ্রুতি দিয়েছিলেন হেমা।
প্রতারিতদের অভিযোগ, টাকা চাইতে গেলেও নানা অছিলায় তা এড়িয়ে যেতেন হেমা। গত এক মাস ধরে তাঁর সঙ্গে যোগাযোগও করা যাচ্ছে না। এমনকি, হেমার ফোনও বন্ধ রয়েছে। এর পরেই বিষয়টি জানাজানি হয়। জওয়ান-পত্নীরা বুঝতে পারেন, তাঁদের অনেকের কাছ থেকেই একই কথা বলে টাকা নিয়েছেন হেমা। কিন্তু ফেরত দেননি। সকলে একযোগে পুলিশের দ্বারস্থ হয়েছেন। এ বিষয়ে শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার সি সুধাকর বলেন, ‘‘অভিযোগ জমা পড়েছে। একটি মামলাও রুজু করা হয়েছে। যে হেতু এটি সেনার বিষয়, তাই সেনা আধিকারিকদের সঙ্গে আলোচনা করে পদক্ষেপ করা হবে।’’
প্রতারিত এক জওয়ান-পত্নী বন্দনা রাই বলেন, ‘‘আমার কাছ থেকে সাড়ে পাঁচ লক্ষ টাকা নিয়েছে। আমি নিজেও এক জন জওয়ানের স্ত্রী। হেমা জওয়ানের স্ত্রী হওয়ার সুবাদে ওকে আমরা বিশ্বাস করে টাকা দিয়েছিলাম। কিন্তু ও আমাদের সঙ্গে প্রতারণা করেছে।’’ আর এক অভিযোগকারী রূপালি দাস বলেন, ‘‘দোকানের বিভিন্ন কাগজপত্র দেখিয়ে প্রায় দু’লক্ষ টাকা নিয়ে গিয়েছে। জওয়ানের স্ত্রী দেখে আমিও টাকা দিয়েছি। বিশ্বাস করেছিলাম, এখন তার কোনও খবর নেই।’’
অভিযোগকারীদের আইনজীবী ভব্য অধিকারী বলেন, ‘‘ইতিমধ্যে আর্মি ওয়াইফ্স অ্যাসোসিয়েশনকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। অভিযুক্ত হেমার স্বামী যেখানে কর্তব্যরত রয়েছেন, সেখানকার কমান্ডিং অফিসারকেও বিষয়টি চিঠি লিখে জানানো হয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy