—প্রতীকী ছবি।
দিনহাটার গীতালদহে সংঘর্ষ এবং গুলিবিদ্ধ হয়ে এক জনের মৃত্যুর ঘটনায় গ্রেফতার পাঁচ জন। বুধবার গভীর রাতে তাঁদের গ্রেফতার করে পুলিশ। বৃহস্পতিবার ধৃতদের দিনহাটা মহকুমা আদালতে হাজির করানো হয়। আদালতে তাঁদের ছ’দিনের পুলিশি হেফাজতের নির্দেশ দিয়েছে। কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমারসানি রাজ বলেন, ‘‘আব্দুল সালাম, ছাবিদুল মিয়া, মানিক বর্মণ, হীরালাল বর্মণ এবং পাপ্পু হোসেন নামে পাঁচ জনকে পুলিশ গ্রেফতার করেছে।’’
মঙ্গলবার ভোর ৫টা নাগাদ গীতালদহের জারি ধরলায় গুলি চলার ঘটনা ঘটেছে। এক জনের মৃত্যুও হয় সেই ঘটনায়। গুলিবিদ্ধ হয়ে আহত হন আরও চার জন। তৃণমূলের অভিযোগ, বিজেপি আশ্রিত দুষ্কৃতীরা তৃণমূলের কর্মীদের উপর গুলি চালিয়েছে। যদিও তা অভিযোগ অস্বীকার করেছে গেরুয়া শিবির। পুলিশ মঙ্গলবারই জানিয়েছিল, নিহতের নাম বাবু হক। কোচবিহারের অতিরিক্ত পুলিশ সুপার কুমারসানি রাজ বলেন, ‘‘মঙ্গলবার সকালে গীতালদহের জারি ধরলা এলাকায় স্থানীয় দু’টি গোষ্ঠীর মধ্যে গুলি চালানোর খবর আসে। প্রাথমিক খবর অনুযায়ী, পাঁচ জন গুলিবিদ্ধ হয়েছেন। যার মধ্যে বাবু হক নামে এক জনের মৃত্যু হয়েছে। এর পরেই পুলিশ ওই এলাকায় পৌঁছে তদন্ত শুরু করে। এই জায়গাটি আন্তর্জাতিক সীমান্তের খুব কাছে। যেখানে নৌকাই যোগাযোগের একমাত্র মাধ্যম। স্থানীয় নেতারাও বাংলাদেশের অপরাধীদের নিয়ে এসে এই কাণ্ড ঘটাতে পারেন। বর্তমানে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে রয়েছে।’’ মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ও বলেন, ‘‘সকালে শুনেছি কোচবিহারে বাংলাদেশের সীমান্ত থেকে এসে গুলি চালিয়ে এক জনকে মেরে দিয়েছে। আমরা ব্যবস্থা নিচ্ছি।’’
এই ঘটনা নিয়ে বুধবার সাংবাদিক বৈঠক করেন কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র প্রতিমন্ত্রী নিশীথ প্রামাণিক। তাঁর দাবি ছিল, গুলিবিদ্ধ হয়ে যাঁর মৃত্যু হয়েছে, তিনি বাংলাদেশের নাগরিক এবং ‘আন্তর্জাতিক অপরাধী’। তাঁর কাছ থেকে বাংলাদেশের ভোটার কার্ডের পাশাপাশি ভারতের আধার কার্ডও পাওয়া গিয়েছে। নিশীথ বলেন, ‘‘ভারতের আধার কার্ডে ওর নাম রয়েছে বাবু রহমান। আর বাংলাদেশের ভোটার কার্ডে রয়েছে আব্দুর রহমান।’’ নিশীথের দাবি, নিহত ‘আন্তর্জাতিক অপরাধী’। তাঁর দেওয়া একটি জবানবন্দির ভিডিয়ো প্রকাশ্যে এনে কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘ওই ব্যক্তিকে বাংলাদেশের বিজিবিও গ্রেফতার করেছিল। শুধু তা-ই নয়, পশ্চিমবঙ্গ পুলিশও ওকে গ্রেফতার করেছিল। তাকে তৃণমূল নিজেদের কর্মী বলে দাবি করছে। আর বিজেপির ঘাড়ে দোষ চাপানোর চেষ্টা করছে।’’ এই ঘটনার প্রেক্ষিতের এনআরসি-র প্রসঙ্গ টেনে তার পক্ষেও সওয়াল করেছেন নিশীথ। পাশাপাশিই, পুলিশের নিরপেক্ষতা নিয়েও প্রশ্ন তুলেছেন তিনি। কেন্দ্রীয় মন্ত্রী বলেন, ‘‘পুলিশ প্রথমে বয়ান দিয়েছিল, বাংলাদেশ থেকে দুষ্কৃতীরা এসে এই হামলা চালিয়েছে। আবার পরে বলা হচ্ছে, বিজেপি হামলা চালিয়েছে।’’
কেন্দ্রীয় মন্ত্রীকে পাল্টা বিঁধেছেন রাজ্যের উত্তরবঙ্গ উন্নয়নমন্ত্রী উদয়ন গুহ। নিশীথের পদত্যাগ দাবি করেছেন তিনি। উদয়ন বলেন, ‘‘আমাদের দুর্ভাগ্য যে, কেন্দ্রীয় স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী পদে এই রকম মূর্খ এক জন বসেছেন। যদি আন্তর্জাতিক দুষ্কৃতীই হয়ে থাকে এবং সে যদি ভারতবর্ষে বাস করে, তা হলে তাকে ধরবার দায়িত্ব কার? তাকে ধরার কথা তো কেন্দ্রীয় সরকারের। কেন্দ্রীয় সরকারের স্বরাষ্ট্র মন্ত্রকের। নিজে ওই মন্ত্রকের প্রতিমন্ত্রী হয়ে এ কথা কোন মুখে বলছেন! তা-ও আবার নিজের জেলায়। ওঁর (নিশীথের) তো এখনই পদত্যাগ করা উচিত।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy