অবস্থান: দাবি আদায়ে বিক্ষোভ আদিবাসীদের। ফাইল চিত্র
মহীপুর পঞ্চায়েতের প্রতাপপুরের বাসিন্দা পূর্ণিবালা টুডু। তাঁর স্বামী জ্যাঠা মুর্মু ওই পঞ্চায়েতেরই প্রাক্তন সিপিএম সদস্য। পূর্ণিমা বলেন, ‘‘ভোটার আর আধার কার্ডে আমার স্বামীর নাম জ্যাঠা মুর্মুর বদলে লেখা জৈঠা মুর্মু। নয়া নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পরে আমরা দু’জন রায়গঞ্জ ব্লক ও উত্তর দিনাজপুর জেলা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে একাধিক বার ঘুরেও কার্ডে নাম সংশোধন করাতে পারিনি। কী করে এখন নাগরিকত্ব রাখব, সেই ভয়েই কাঁটা হয়ে আছি।’’
মহীপুরের পাশেই ভাতুন পঞ্চায়েত। সেখানকার নারায়ণটোলার বাসিন্দা পেশায় চাষি বলাই বেসরা। তিনি বলেন, ‘‘জমির নথিতে আমার নাম বলাই বেসরার বদলে ভুলাই বেসরা লেখা রয়েছে। নাগরিক আইন পাশ হওয়ার পরে সংশোধন করাতে ব্লক প্রশাসন ও ভূমি দফতরের কার্যালয়ে গিয়েছিলাম। কিন্তু জানিয়ে দেওয়া হয়, এখন জমির নথি সংশোধনের কাজ বন্ধ রয়েছে।’’
প্রতাপপুর ও নারায়ণটোলা আদিবাসী প্রধান এলাকা। দু’টি এলাকা মিলিয়ে প্রায় সাড়ে চারশো আদিবাসী পরিবারের বসবাস। সব মিলিয়ে আদিবাসী বাসিন্দার সংখ্যা প্রায় দু’হাজার। তাঁরা বেশির ভাগই চাষবাষ, দিনমজুরি, ঠিকাশ্রমিকের কাজ করে ও ভ্যানরিকশা চালিয়ে সংসার চালান। দু’টি এলাকার প্রায় ৯০ শতাংশ বাসিন্দাই নিরক্ষর। অভিযোগ, তাঁদের বেশির ভাগেরই ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড ও জমির নথিতে নাম ও পদবি ভুল রয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে ভোটার কার্ড, আধার কার্ড, রেশন কার্ড ও জমির নথির মধ্যে নাম ও পদবির অমিল রয়েছে। সেই সঙ্গে, সেই সব নথিতে অনেকেরই অভিভাবকদের নাম ও বসবাসের ঠিকানা ভুল লেখা রয়েছে। নতুন নাগরিকত্ব আইন পাশ হওয়ার পরে তাঁরা প্রশাসনের বিভিন্ন দফতরে গিয়ে সেই সব নথির ত্রুটি সংশোধন করার চেষ্টা করেন। কিন্তু সংশোধন প্রক্রিয়া বন্ধ রয়েছে বলে জানিয়ে তাঁদের ফিরিয়ে দেওয়া হয়। এই পরিস্থিতিতে কেউ দেশের নাগরিকত্ব হারানোর, আবার কেউ দেশছাড়া হওয়ার আশঙ্কায় রয়েছেন।
নারায়ণটোলার বাসিন্দা পেশায় দিনমজুর সোম বেসরা বলেন, ‘‘আধারকার্ডে গ্রামের নাম গুরুঞ্চা লেখা রয়েছে। অথচ আমার বাড়ি নারায়ণটোলাতে। জমির নথিতেও নারায়ণটোলা লেখা রয়েছে। এক সপ্তাহ ধরে প্রশাসনের বিভিন্ন দফতর ঘুরেও ভুল সংশোধন করতে পারিনি।’’
জেলা পরিষদের সভাধিপতি কবিতা বর্মণ বলেন, ‘‘প্রশাসন ওই দুই গ্রামের বাসিন্দাদের নথির ত্রুটি খতিয়ে দেখে সংশোধনের ব্যবস্থা করবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy