প্রতিবাদ: ডিওয়াইএফআইয়ের উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে ঝামেলা। বাম কর্মীদের রুখতে ব্যারিকেড, চলছে জলকামান। বুধবার শিলিগুড়িতে। নিজস্ব চিত্র
ডিওয়াইএফআইয়ের উত্তরকন্যা অভিযান ঘিরে বুধবার রণক্ষেত্রে পরিণত হল শিলিগুড়ি। কেন্দ্রীয় এবং রাজ্য সরকারের বিরুদ্ধে নানা অভিযোগ নিয়ে এ দিনের কর্মসূচি ছিল সংগঠনটির। বুধবার দুপুরে উত্তরকন্যার আগে তিনবাতি মোড়ে পুলিশের ব্যারিকেড ভেঙে মিছিল এগনোর চেষ্টা করলে পুলিশ লাঠি চালায় বলে অভিযোগ সংগঠনের নেতাদের। বামকর্মীরাও পাল্টা পুলিশকে লক্ষ্য করে পাথর এবং লাঠি ছুঁড়ে মারে বলে অভিযোগ। যদিও শিলিগুড়ি পুলিশের দাবি, জলকামান চালানো হয়েছে কিন্তু লাঠি চালানো হয়নি। বিনা অনুমতিতে বিশৃঙ্খলা সৃষ্টির জন্য আয়োজকদের বিরুদ্ধে মামলাও দায়ের করছে শিলিগুড়ি পুলিশ।
সিএএ-জাতীয় পঞ্জিকরণ বাতিলের দাবি, বেকারদের কাজ দেওয়া, বন্ধ চা বাগান খোলার দাবিতে এ দিন প্রতিবাদ কর্মসূচি আয়োজন করে ডিওয়াইএফআই। পাশাপাশি শিলিগুড়ি পুরসভা এবং মহকুমা পরিষদকে বঞ্চনার অভিযোগও ছিল তাদের। এ দিন বেলা দু’টোয় উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলা থেকে আসা প্রায় হাজারখানেক কর্মী-সমর্থকদের মিছিল লালমোহন মৌলিক ঘাট থেকে রওনা দেয় উত্তরকন্যার দিকে। কিন্তু শিলিগুড়ি-জলপাইগুড়ি রোডে উত্তরকন্যার প্রায় দু’কিলোমিটার আগে পুলিশের ব্যারিকেড দিয়েছিল। সেখানে প্রচুর বাহিনীও মোতায়েন করা ছিল। তিনবাতি মোড়ে মিছিল আটকায় পুলিশ। প্রথমে লোহার ব্যারিকেড টপকে যাওয়ার চেষ্টা করেন সমর্থকরা। সাদা পোষাকের এক সিভিক ভলান্টিয়ার এবং এনজেপি থানার এক আধিকারিকের সঙ্গে ধস্তাধস্তিও হয় বাম সমর্থকদের। তারপরেই ব্যারিকেড ভেঙে ফেলেন বাম কর্মীরা। ব্যারিকেড ভেঙে উল্টে পড়ে পুলিশকর্মীদের গায়ে। তারপরেই তেড়ে যায় পুলিশ। অভিযোগ তখনই একদিকে লাঠিচার্জ চলে, অন্যদিকে জলকামান ছোঁড়া হয় কর্মী-সমর্থকদের দিকে। কর্মীরাও পাল্টা পতাকার লাঠি এবং রাস্তার পাথর কুড়িয়ে পুলিশকর্মীদের দিকে ছোঁড়েন। প্রায় ১০ মিনিট এরকম চলে। তারপরে ভিড় কিছুটা পিছু হটায় পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণ আসে। তবে তারপরেও কিছুক্ষণের জন্য চলে পথ অবরোধ। শিলিগুড়ির পুলিশ কমিশনার ত্রিপুরারি অথর্ব পরে এক বিবৃতিতে বলেন, ‘‘মিছিলের অনুমতি ছিল না। কিন্তু বিশৃঙ্খলা সৃষ্টি করে ডিওয়াইএফআই। লাঠি নয়, জলকামান দিয়ে পরিস্থিতি নিয়ন্ত্রণে আনা হয়েছে। তিন পুলিশকর্মী আহত হয়েছেন। মামলা দায়ের করব।’’
যদিও অভিযোগ অস্বীকার করে ডিওয়াইএফআইয়ের নেতাদের দাবি, মিছিল পুরোপুরি শান্তিপূর্ণ ছিল। সংগঠনের রাজ্য সম্পাদক সায়নদীপ মিত্র বলেন, ‘‘কাজের দাবিতে শান্তিপূর্ণ আন্দোলন আটকেছে পুলিশ এবং ছদ্মবেশী তৃণমূল নেতারা। মোদী আর মমতা রাজ্যের যুবকদের বঞ্চনা করছে। আমরা পুলিশের ভয়ে লড়াই ছাড়ব না।’’ যদিও তৃণমূল নেতা রঞ্জন সরকার বলেন, ‘‘সিপিএম বিশৃঙ্খলা সৃষ্টিকারী দল। ভোগান্তি বাড়ানো ছাড়া কিছু করে না। আমরা কেন সাদা পোষাকে ওদের আটকাতে যাব?’’
ডিওয়াইএফআইয়ের সভাপতি মীনাক্ষি মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘মহিলা পুলিশ ছাড়াই মহিলা কর্মীদের উপর লাঠি চালায় তারা। আমাদের দাবি পেশ করতে দেওয়া হল না কেন?’’ ঝামেলার জেরে আর স্মারকলিপি জমা করেননি নেতারা। আজ বৃহস্পতিবার রাজ্যজুড়ে প্রতিবাদ দিবস পালন হবে বলে জানিয়েছে সংগঠন।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy