ছোটো চা বাগান থেকে আসা চা পাতা ফ্যাক্টারিতে বেগে ভরতে বেস্ত যুবকের দল ময়নাগুড়ি পানবাড়িতে। ছবি: দীপঙ্কর ঘটক।
বোনাস-জটে পুজোর মুখে বন্ধ হয়ে গেল ডুয়ার্সের আরও তিনটি চা বাগান। তবে তার মধ্যেই ডুয়ার্সের অন্য একটি বাগান সোমবার খুলেছে। আরও একটি বাগান খোলার ব্যাপারে সিদ্ধান্ত হয়েছে।
বোনাস নিয়ে ডুয়ার্সের বিভিন্ন চা বাগানে গত কয়েক দিন ধরেই শ্রমিক অসন্তোষ চলছে। এরই মধ্যে এ দিন আচমকাই বন্ধ হয়ে যায় আলিপুরদুয়ার জেলার মাদারিহাট-বীরপাড়া ব্লকের দলমোড় চা বাগান ও জয় বীরপাড়া চা বাগান। এ ছাড়া, বন্ধ হয়েছে এই জেলারই কালচিনি ব্লকের দলসিংপাড়া চা বাগান। এর মধ্যে কালচিনির দলসিংপাড়া চা বাগানে ‘সাসপেনশন অফ ওয়ার্ক’-এর নোটিস ঝুলিয়েছেন বাগান কর্তৃপক্ষ। দলমোড় ও জয় বীরপাড়া বাগানের কর্তৃপক্ষও রবিবার রাতের অন্ধকারে বাগান ছেড়ে চলে যান বলে অভিযোগ শ্রমিকদের।
দলমোড় চা বাগানে কিছু দিন ধরেই বোনাস নিয়ে শ্রমিক-অসন্তোষ চলছিল। তৃণমূল চা বাগান শ্রমিক ইউনিয়নের কেন্দ্রীয় কমিটির সহ-সভাপতি উত্তম সাহা বলেন, “দলমোড় বাগান কর্তৃপক্ষ সাড়ে ৯ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়ার কথা বলেন। কিন্তু আমরা তা মানিনি।” একই সঙ্গে জয় বীরপাড়া চা বাগান প্রসঙ্গে তিনি জানান, কর্তৃপক্ষ সেখানে ১১ শতাংশ হারে বোনাসের কথা বললেও, শ্রমিকরা ১৬ শতাংশ বোনাস দাবি করেন। সূত্রের খবর, কালচিনির দলসিংপাড়া চা বাগানে এ বছর মালিক পক্ষের তরফে শ্রমিকদের ৮.৩৩ শতাংশ বোনাস দেওয়া হবে বলে জানানো হয়। তবে তা মানতে নারাজ ছিলেন শ্রমিকেরা। গত চার দিন ধরে কাজ বন্ধ করে বিক্ষোভ দেখাচ্ছিলেন তাঁরা। শ্রম দফতরের ডাকে এ নিয়ে বৈঠক হলেও মালিকপক্ষ জানিয়ে দেন, তাঁরা ৯.৫ শতাংশের বেশি বোনাস দিতে পারবেন না। তবে শ্রমিক সংগঠনের তরফে ১৪.৫ শতাংশ বোনাসের দাবি করা হয়েছিল। এর পরে এ দিন সেই বাগানটিও বন্ধ হয়ে যায়।
তবে বোনাস-জটে বন্ধ হওয়া নাগরাকাটার নয়া সাইলি চা বাগান খোলার ব্যাপারে রবিবারই সিদ্ধান্ত হয়েছিল। সূত্রের খবর, সোমবার সেটি খুলে যায়। একই ভাবে মাল ব্লকের সাইলি বাগান খোলার ব্যাপারেও এ দিন সন্ধ্যায় ত্রিপাক্ষিক বৈঠকে সিদ্ধান্ত হয়। সূত্রের খবর, দু’টি বাগানের ক্ষেত্রেই সাড়ে ১৫ শতাংশ হারে বোনাসের ব্যাপারে উভয় পক্ষের সম্মতি মিলেছে। বানারহাট ব্লকের বেশিরভাগ চা বাগানে বৈঠকে নির্ধারিত ১৯ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়া হয়েছে।
বোনাস নিয়ে অসন্তোষের জেরে, গত ১৪ অক্টোবর বন্ধ হয়ে যায় বানারহাটের চামুর্চি চা বাগান। সোমবার বোনাস নিয়ে জলপাইগুড়িতে ত্রিপাক্ষিক বৈঠক অনুষ্ঠিত হয়। সকাল থেকে শুরু হয়ে রাত পর্যন্ত চলে বৈঠক। সূত্রের দাবি, শেষমেষ সিদ্ধান্ত হয়, ১১ শতাংশ হারে বোনাস দেওয়া হবে এবং আজ, মঙ্গলবার থেকে খুলে যাবে বাগান।
শ্রমিকদের অ্যাকাউন্টে বোনাস ঢুকতেই ধূপগুড়ি, বানারহাট, বিন্নাগুড়ি, গয়েরকাটা-সহ বিভিন্ন বাজার এলাকায় ভিড় লক্ষ্য করা গিয়েছে। চা বাগানের বোনাস সমস্যা না মেটাতে কিছুটা হলেও দুশ্চিন্তায় পড়েছিলেন ব্যবসায়ীরা। শেষমেষ তাঁরাও স্বস্তিতে। বোনাস নিয়ে সমস্যা না থাকলেও মালবাজার মহকুমার অনেক বাগানে বোনাসের টাকা এখনও অনেকে হাতে পাননি।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy