Advertisement
২৮ ডিসেম্বর ২০২৪

নালিশ বাড়ছে থানায়, পাঠ আত্মরক্ষার

এমন প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য অনেকে মেয়েদের আত্মরক্ষার পাঠ দিচ্ছেন। মালদহ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে এক সংস্থার তরফে আত্মরক্ষার কৌশল শেখানো হয়। সেই সংস্থায় ক্রমশ বাড়ছে মেয়েদের সংখ্যা।

বাঁচার উপায়?: ইংরেজবাজারে আত্মরক্ষার পাঠ। নিজস্ব চিত্র

বাঁচার উপায়?: ইংরেজবাজারে আত্মরক্ষার পাঠ। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
শেষ আপডেট: ০১ ডিসেম্বর ২০১৯ ০৩:৩৭
Share: Save:

ঘড়ির কাঁটা ১০টা ছুঁলেই আনাগোনা শুরু হয়ে যায়। স্কুল, কলেজের মেয়েদের লক্ষ্য করে উড়ে আসে নানা মন্তব্য। কখনও মাথা নিচু করে পাশ কাটিয়ে, কখনও স্কুল বা কলেজের গণ্ডিতে পৌঁছে ‘রোমিয়ো’-দের দৌরাত্ম্য থেকে স্বস্তির নিঃশ্বাস ফেলে মেয়েরা। পাল্টা প্রতিবাদের স্বরও অবশ্য ভেসে আসে কদাচিৎ। সোমবার থেকে শনিবার পর্যন্ত এমনই ছবিতেই অভ্যস্ত ইংরেজবাজার শহরের পিরোজপুর রোড। এখানেই রয়েছে মালদহ মহিলা কলেজ এবং মালদহ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়।

শুধু পিরোজপুর রোডই নয়, স্কুল-সময়ে রোমিয়োদের দাপাদাপি দেখা যায় মালদহের মিশন রোড, সদরঘাট রোড এলাকাতেও। কারণ—মেয়েদের একাধিক স্কুলের অবস্থান। ছাত্রীদের একাংশের বক্তব্য, স্কুলে যাওয়া এবং আসার পথে নানা কটু কথা শুনতে হয়। প্রতিবাদ করলে আরও খারাপ কথা শুনতে হয়। সেই কথা শুনে স্কুলে যেতে অনেক সময়ই আর ইচ্ছে করে না। শহরের বাসিন্দা পায়েল দাস, দীপশিখা মৈত্রেরা জানান, ‘‘স্কুল, কলেজে পড়ার সময় এমন অভিজ্ঞতা আমাদের অনেক আছে। ভয়ে বাড়ির লোকেদের বিষয়টি জানাতাম না।’’ কীসের ভয়? তাঁরা বলেন, ‘‘ভাবতাম বাড়ির লোকেরা জেনে যাওয়ার পরে যদি আর আমাদের বার হতে না দেন। তাই আমাদের মেয়েরা যাতে নির্ভয়ে সব কিছু বলতে পারে তার চেষ্টা করি।’’

এমন প্রতিকূল পরিস্থিতি থেকে রেহাই পাওয়ার জন্য অনেকে মেয়েদের আত্মরক্ষার পাঠ দিচ্ছেন। মালদহ উচ্চ বালিকা বিদ্যালয়ে এক সংস্থার তরফে আত্মরক্ষার কৌশল শেখানো হয়। সেই সংস্থায় ক্রমশ বাড়ছে মেয়েদের সংখ্যা। ওই সংস্থার প্রশিক্ষক রামাশীষ দাস বলেন, ‘‘পড়াশোনার জন্য মেয়েদের সর্বত্র এখন ছুটে বেড়াতে হয়। রাতেও বাড়ির বাইরে টিউশনে বার হতে হচ্ছে। তাই মেয়েদের আত্মরক্ষার প্রাথমিক পাঠ শেখা অত্যন্ত জরুরি। এখন অভিভাবকেরাও মেয়েদের আত্মরক্ষার পাঠ শেখাতে আগ্রহী হয়েছেন।’’

মাস চারেক আগে যৌন নিগ্রহ ঘটে শহরেরই এক স্কুলে। স্কুলেরই দুই শিক্ষক ক্লাসের মধ্যে ছাত্রীদের যৌন নিগ্রহ করে বলে অভিযোগ। অভিযোগকে ঘিরে রণক্ষেত্র হয়ে উঠেছিল স্কুল। পরিস্থিতি সামাল দিতে কাঁদানে গ্যাস ছুড়তে হয় পুলিশকে। ওই দুই শিক্ষক এখন জেল হেফাজতে। যৌননিগ্রহ, ধর্ষণের অভিযোগ এখন প্রায়ই জমা পড়ছে মালদহ মহিলা থানায়। এক মহিলা পুলিশ কর্মী বলেন, ‘‘মহিলারা এখন থাকায় গিয়ে অভিযোগ জানাতে পারছেন। যার ফলে আমরাও পদক্ষেপ করতে পারছি। আগে মহিলারা অভিযোগই জানাতেন না। রাস্তা-ঘাট, স্কুল-কলেজ নয়, বাড়িতেও নির্যাতিত হতে হয় বলে দাবি করেছেন মহিলাদের একাংশ। পুলিশ সুপার অলোক রাজোরিয়া বলেন, ‘‘মালদহে মহিলা থানা, মহিলা হেল্প ডেক্স রয়েছে। স্কুল-সময়ে পুলিশি টহলদারি বাড়ানো হয়েছে। প্রয়োজনে সাদা পোশাকে নজরদারি হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Self Defence Molestation Police station
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy