মালদহ শোভানগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিস্বামী দাস। —নিজস্ব চিত্র।
মোবাইলেই এ বার স্কুলের পড়াশোনা সেরে নিচ্ছে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির পড়ুয়াদের একাংশ। সৌজন্যে, মালদহের একটি স্কুলের প্রধান শিক্ষকের খুঁজে বার করা অভিনব উপায়— ‘হাইব্রিড লার্নিং’। করোনা পরিস্থিতিতে নিজের স্কুলে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণির স্কুলবইয়ের কিউআর কোড তৈরি করেছেন তিনি। তার সাহায্যে মোবাইল ফোনেই পড়াশোনা করতে পারছে পড়ুয়ারা। এই অভিনব কাজের স্বীকৃতি পেয়েছেন মালদহ শোভানগর হাইস্কুলের প্রধান শিক্ষক হরিস্বামী দাস। ৫ অগস্ট, রবিবার শিক্ষক দিবসে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারে সম্মানিত হবেন তিনি। রাজ্য সরকারের তরফেও হরিস্বামীকে ‘শিক্ষারত্ন’-এ ভূষিত করা হবে।
শিক্ষক দিবসে দেশের ৪৪ জন শিক্ষককে পুরস্কারে সম্মানিত করবেন রাষ্ট্রপতি রামনাথ কোবিন্দ। রবিবার এ রাজ্য থেকে একমাত্র হরিস্বামীই এই সম্মান লাভ করবেন।
অতিমারি পরিস্থিতিতে ২০২০ সালের মার্চ মাস থেকে রাজ্যের সমস্ত স্কুল বন্ধ। যা আজও খোলেনি। কোভিডকালে ঘরবন্দি স্কুলপড়ুয়াদের পড়াশোনা কী ভাবে চলবে, তা নিয়ে গোড়া থেকেই উদ্বিগ্ন ছিলেন হরিস্বামী। দীর্ঘ লকডাউনে সহ-শিক্ষকদের নিয়ে পড়ুয়াদের বাড়ি বাড়ি গিয়ে তাদের ও অভিভাবকদের সঙ্গে দেখা করেছেন তিনি। তাঁদের সকলের সঙ্গে কথা বলেছেন। এর পর শুরু করেছেন ‘হাইব্রিড লার্নিং’ পদ্ধতি। যা মূলত স্কুলপড়ুয়াদের কাউন্সেলিং। এই পদ্ধতিতেই তিনি দেখিয়েছেন, কী ভাবে অর্ধেক পড়ুয়া স্কুলে এসে ও বাকি অর্ধেক বাড়ি থেকে পড়াশোনা করতে পারবে। রাজ্যের প্রথম শিক্ষক হিসাবে ষষ্ঠ থেকে দ্বাদশ শ্রেণি পর্যন্ত প্রত্যেকটি বইয়ের কিউআর কোডও তৈরি করেছেন তিনি। ফলে শোভানগর হাইস্কুলের প্রত্যেক ছাত্রছাত্রী যে কোনও জায়গা থেকেই মোবাইলে বই খুলে পড়াশোনা করতে পারছে। মধ্যশিক্ষা পর্ষদের পাঠ্যক্রম রয়েছে, রাজ্যের এমন কোনও স্কুলের পড়ুয়াদের অবশ্য এই সুবিধা নেই।
করোনা আবহের গোড়ার দিকে স্কুলে ‘হাইব্রিড লার্নিং’ পদ্ধতি শুরু করা হয়েছিল। তখনও পুরোপুরি স্কুল বন্ধের সিদ্ধান্ত গ্রহণ করেনি রাজ্য সরকার। এই পদ্ধতিকেই গোটা দেশে চালু করতে চাইছে নরেন্দ্র মোদী সরকারও। দেশ জুড়ে স্কুলের পাঠ্যবইকে কিউআর কোডের আওতায় নিয়ে আসার পরিকল্পনাও চলছে। রাজ্যের শিক্ষা দফতরও একই কারণে হরিস্বামীকে ‘শিক্ষারত্ন’ সম্মানে ভূষিত করবে।
চলতি বছরের অগস্টে কেন্দ্রীয় শিক্ষা মন্ত্রকের কাছে এই পদ্ধতির বিষয়ে প্রস্তাব পাঠিয়েছিলেন হরিস্বামী। এর পর ১৮ অগস্ট তিনি জানতে পারেন, চলতি বছরে শিক্ষক দিবসে রাষ্ট্রপতি পুরস্কারের তালিকায় তাঁর নাম রয়েছে। পুরস্কার প্রাপকদের তালিকায় নিজের নাম রয়েছে জানতে পেরে স্বাভাবিক ভাবেই নিজের আবেগ চেপে রাখেননি হরিস্বামী। আনন্দবাজার অনলাইনকে তিনি বলেন, “অভূতপূর্ব ভাললাগার অনূভূতি হচ্ছে। আমাদের বাড়িতে সকলেই শিক্ষকতার সঙ্গে জড়িত। তাঁরা সর্বতো ভাবে আমার পাশে ছিলেন। আমার পরিবার, সহকর্মী এবং ছাত্রছাত্রীদের কৃতজ্ঞতা এবং ধন্যবাদ জানাচ্ছি।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy