Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

গরুমারার ত্রাস হয়ে উঠছে খুনি 'টারজান'

গরুমারা জাতীয় উদ্যানের একশৃঙ্গ গন্ডার ‘টারজান’ ক্রমশ সমগ্র জঙ্গলের গন্ডারদের মধ্যে গুন্ডা হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে যাচ্ছে।

ছবি: সংগৃহীত

ছবি: সংগৃহীত

সব্যসাচী ঘোষ 
গরুমারা শেষ আপডেট: ০১ জানুয়ারি ২০২০ ০২:০৫
Share: Save:

গরুমারা জাতীয় উদ্যানের একশৃঙ্গ গন্ডার ‘টারজান’ ক্রমশ সমগ্র জঙ্গলের গন্ডারদের মধ্যে গুন্ডা হিসেবেই চিহ্নিত হয়ে যাচ্ছে। কার্যত এই ‘টারজান’-এর জন্যেই মাত্র পাঁচ দিনে দুই গন্ডার প্রাণ হারিয়েছে। সঙ্গিনী দখলের জন্যেই টারজান কোনও পুরুষ গন্ডারকে নিজের এলাকার ত্রিসীমানাতে ঢুকতে দিচ্ছে না বলে দাবি বনকর্মীদের। প্রথম পুরুষ গন্ডারের মৃতদেহ উদ্ধার হয় ২৫ ডিসেম্বর। গত সোমবার দ্বিতীয় পুরুষ গন্ডারের দেহ মিলতেই চাঞ্চল্য ছড়িয়ে পড়ে।

দুই ক্ষেত্রেই টারজানের মার এবং খড়গের গুঁতো সহ্য করতে না পেরে গন্ডার যুগলের মৃত্যু হয়েছে বলেই ধারণা বন দফতরের। টারজান কিন্তু সুস্থই। বারবার লড়াইয়ে জড়িয়ে পরলেও তার গুরুতর চোট আঘাত নেই বলেই জানাচ্ছে বন দফতর।

গন্ডারের আদর্শ চারণভূমির জন্যে যেখানে এক পুরুষ গন্ডার সঙ্গে তিন স্ত্রী গন্ডারের প্রয়োজন, সেখানে গরুমারায় পুরুষ ও স্ত্রী গন্ডারের এই অনুপাত এখন আর নেই। উল্টে বন দফতর সূত্রে খবর, স্ত্রী গন্ডারের সংখ্যার তুলনায় পুরুষের সংখ্যা বেশি। তাই দ্রুত হয় স্ত্রী গন্ডার এনে পরিস্থিতি সামাল দিতে হবে, নতুবা কিছু পুরুষ গন্ডারকে গরুমারা থেকে অন্যত্র সরিয়ে হবে। এ বারে দ্বিতীয় পদ্ধতিই গ্রহণ করতে চলেছে রাজ্য বন দফতর। কোচবিহারের পাতলাখাওয়ায় যেখানে রাজ্যের নতুন গন্ডার-বিচরণভূমি গড়ে তোলার কাজ চূড়ান্ত আকার নিয়েছে, সেখানেই গরুমারা থেকে পুরুষ গন্ডার সরিয়ে নিয়ে যাওয়া হবে, সিদ্ধান্ত নিয়ে ফেলেছে বন দফতর।

গরুমারার গন্ডারের সংখ্যা এখন ৫২। সেটা তখন কমে আসবে। কিন্তু তাতে স্ত্রী-পুরুষ অনুপাত কিছুটা হলেও উন্নত হবে, দাবি বনকর্তাদের। রাজ্যের প্রধান মুখ্য বনপাল (বন্যপ্রাণ) রবিকান্ত সিংহ বলেন, “গরুমারায় একটি পুরুষ গন্ডারের কাছেই লড়াইয়ে পরাজিত হয়ে মৃত্যু হয়েছে দুই গন্ডারের। কী করা যায় তা-ই দেখছি।”

সূত্রের খবর, টারজানকেই গরুমারা থেকে চিরকালের জন্যে সরিয়ে দেওয়া হতে পারে। পাতলাখাওয়ার এলাকায় টারজান একাই পুরুষ গন্ডার হয়ে দাপিয়ে বেড়াবে। বন দফতরের আশা, তাতে গরুমারাতেও শান্তি ফিরবে।

এ দিকে ‘বোতল শিং’ নামের যে গন্ডারের দেহ গত সোমবার উদ্ধার হয়, ময়নাতদন্তে জানা গিয়েছে, সেই গন্ডারের মৃত্যু ৪৮ ঘণ্টার মধ্যেই হয়েছে। অনেক ক্ষেত্রে পাঁক, জলা এলাকা পেরিয়ে গরুমারার সর্বত্র নজরদারি চালানো সম্ভব হয় না বলেই মৃতদেহ দেরিতে চোখে পড়েছে, যুক্তি দিয়েছে বন দফতর। তবে যে জায়গায় এই গন্ডারের দেহ মিলেছে, তার ঠিক উপরেই একটি পাহাড়ি টিলা রয়েছে। তাই লড়াই চলাকালীন উপর থেকে পড়ে গিয়ে মৃত্যু হয়েছে কি না, সেই সম্ভাবনাও চিকিৎসকেরা একেবারে উড়িয়ে দিচ্ছেন না।

অন্য বিষয়গুলি:

Tarzan Rhinoceros Gorumara National Park
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE