রাজ্য শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় (বাঁ দিকে) এবং উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী। —নিজস্ব চিত্র।
স্কুলছাত্রীকে যৌন হেনস্থা এবং খুনের ঘটনায় গত কয়েক দিন ধরে উত্তাল পাহাড়। শনিবারই এই ঘটনার প্রতিবাদে দার্জিলিং এবং কালিম্পঙে বন্ধ হয়েছে। এই প্রেক্ষিতে মৃতা নাবালিকার পরিবারের সঙ্গে দেখা করতে মাটিগাড়া এলেন রাজ্য শিশু সুরক্ষা অধিকার কমিশনের দুই সদস্যের প্রতিনিধি দল। রবিবার মৃতার পরিবারের সঙ্গে কথা বলে সুবিচারের আশ্বাস দেন কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায় এবং উপদেষ্টা অনন্যা চক্রবর্তী। তার পর মাটিগাড়ার যেখানে নাবালিকাকে খুন করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে, সেই ঘটনাস্থল পরিদর্শনে যান তাঁরা।
শিশু সুরক্ষা অধিকার আয়োগের উপদেষ্টা অনন্যা বলেন, ‘‘যা ঘটেছে, তা বলার ভাষা আমাদের নেই। পরিবারের সঙ্গে কথা বলেছি। দোষীর দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি হোক, তা আমরা চাই। ময়নাতদন্তের রিপোর্ট দেখলাম। প্রতিটি বিষয়ের বিবরণ সুন্দর ভাবে উল্লেখ রয়েছে। পকসো আইন যুক্ত করার কথা বলব।’’ কমিশনের চেয়ারপার্সন সুদেষ্ণা রায়ের কথায়, ‘‘এ ভাবে সবাই মিলে বারংবার (মৃতার) বাড়ি গিয়ে পরিবারকে বিরক্ত করার কিছু নেই। সে যে কোনও রাজনৈতিক দলই হোক বা সমাজসেবী সংগঠন— আপনারা বাবা-মাকে শোকপালনের সময় দিন।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা সব রিপোর্ট সরকারকে পাঠাব। দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবি জানাচ্ছি আমারাও।’’ বস্তুত, রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোসও মৃতার বাড়িতে আসেন। এ নিয়ে সুদেষ্ণা বলেন, ‘‘আমাদের একটাই বক্তব্য— বার বার এমন একটা সময়ে ওই বাড়িতে সকলের যাওয়ার কী দরকার! ওর বাবা-মাকে নিজেদের মতো সময় কাটাতে দিন একটু। রাজ্যপাল কেন আসছেন, বা কী করতে আসছেন, তা আমাদের সত্যিই জানা নেই।’’
উল্লেখ্য, দিন কয়েক আগে শিলিগুড়ি মহকুমা পরিষদের মাটিগাড়ায় নেপালি এক নাবালিকা স্কুলছাত্রীকে যৌন হেনস্থা করে খুনের অভিযোগ ওঠে। এ নিয়ে বৃহস্পতিবার বিশ্ব হিন্দু পরিষদের ডাকা বন্ধের প্রভাব শিলিগুড়ি শহর এবং সংলগ্ন এলাকাতেও পড়েছিল। শহরের ছোট থেকে বড় মার্কেট, বেসরকারি যান চলাচল প্রায় বন্ধ ছিল। সে দিন প্রায় ২,০০০ গাড়ি বন্ধ ছিল। সমতলের পর শনিবার পাহাড়ে গোর্খা সেবা সেনার তরফে ডাকা বন্ধে প্রভাব পড়ে আরও বেশি। ওই বন্ধকে সমর্থন করে বিমল গুরুংয়ের গোর্খা জনমুক্তি মোর্চা, অজয় এডওয়ার্ডের হামরো পার্টি, বিজেপি-সহ পাহাড়ের অন্যান্য আঞ্চলিক দল। এই অবস্থায় নিজেদের ‘নিরপেক্ষ’ রাখে ভারতীয় গোর্খা প্রজাতান্ত্রিক মোর্চা। তারা জানায়, এই বন্ধে তাদের সমর্থন নেই। আবার বিরোধিতাও করছে না।
পাহাড়বাসীর বক্তব্য, কোনও রাজনৈতিক কারণ নয়, এক নাবালিকার উপর এই হিংসা পুরো পাহাড়বাসীর ভাবাবেগে আঘাত হেনেছে। তাঁরা সকলে অভিযুক্তদের কঠিন শাস্তি চান।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy