ছুটির মেয়াদ বাড়িয়েছেন উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের রাজ্যপাল নিযুক্ত ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য দীপককুমার রায়। ১০ ডিসেম্বর তাঁর কাজে যোগ দেওয়ার কথা থাকলেও, তিনি ২১ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটি চেয়েছেন বলে বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে খবর। কী কারণে তিনি ছুটি বাড়াতে চেয়েছেন, তা নিয়ে জল্পনা শুরু হয়েছে বিশ্ববিদ্যালয়ের অন্দরে।
বিশ্ববিদ্যালয়ের কর্তাদের একাংশ দাবি করেন, শিক্ষাকর্মী তপন নাগের উপর থেকে সাসপেনশন প্রত্যাহার ও উপাচার্যের অপসারণের দাবিতে তৃণমূলপন্থী শিক্ষাকর্মীদের একাংশ এখনও অবস্থান-বিক্ষোভ চালিয়ে যাচ্ছেন। এই পরিস্থিতিতে, ফের নতুন করে বিক্ষোভের মুখে পড়ার আশঙ্কায় উপাচার্য আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে চাইছেন না। রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ে ১৬ থেকে ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে রাজ্যপাল সিভি আনন্দ বোস স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ করতে পারেন বলেও সম্ভাবনা রয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের এক আধিকারিকের দাবি, “শিক্ষাকর্মীদের সমস্যা না মেটার কারণে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য আপাতত বিশ্ববিদ্যালয়ে আসতে চাইছেন না। ২০ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হলে, দীপকবাবু শিক্ষক হিসেবে বিশ্ববিদ্যালয়ে আসবেন। ছুটির মেয়াদ বাড়ানো দেখে, সেটাই মনে হচ্ছে।” দীপক এ দিন ফোন ধরেননি। মোবাইল বার্তায় প্রতিক্রিয়া মেলেনি।
বিশ্ববিদ্যালয়ের আর একটি সূত্রের দাবি, ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ না হওয়ার সম্ভাবনাও রয়েছে। সে ক্ষেত্রে, বিশ্ববিদ্যালয়ে সুষ্ঠু পরিবেশে দীপক যাতে ভারপ্রাপ্ত উপাচার্য হিসাবে কাজে যোগ দিতে পারেন, সে বিষয়েও উদ্যোগী কর্তৃপক্ষ। বিশ্ববিদ্যালয়ের রেজিস্ট্রার দুর্লভ সরকার বলেন, “বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষা ও প্রশাসনিক কাজের পরিবেশ ফেরাতে হস্তক্ষেপ চেয়ে বুধবার বিশ্ববিদ্যালয়ের তরফে রাজ্য উচ্চ শিক্ষা দফতরে চিঠি পাঠানো হয়েছে।” তবে বিশ্ববিদ্যালয়ের ক্যাম্পাস-ইন-চার্জ প্রশান্ত মহালার দাবি, “দীপকবাবুর ছুটির মেয়াদের শেষ দিন ২১ ডিসেম্বরের মধ্যে বিশ্ববিদ্যালয়ে স্থায়ী উপাচার্য নিয়োগ হয়ে যাবে বলে আমরা আশা করছি।” পক্ষান্তরে, শিক্ষাবন্ধু সমিতির বিশ্ববিদ্যালয়ের পর্যবেক্ষক বিজয় দাসের দাবি, তপনের উপর থেকে সাসপেনশন না তোলা পর্যন্ত সমিতির আন্দোলন চলবে।
তৃণমূল শিক্ষাবন্ধু সমিতির জেলা সভাপতি তথা রায়গঞ্জ শহর তৃণমূলের সহ-সভাপতি তপনের উপর থেকে বিনাশর্তে সাসপেনশন তোলার দাবিতে ৩ ডিসেম্বর শিক্ষাবন্ধু সমিতি ও টিএমসিপির সদস্যেরা উপাচার্যের ঘরের সামনে সারারাত অবস্থান-বিক্ষোভ করেন। রাতভর উপাচার্য নিজের ঘরে ছিলেন। পরদিন সকালে নিজেকে অসুস্থ দাবি করে রায়গঞ্জ মেডিক্যালে ভর্তি হন দীপক। ৯ ডিসেম্বর পর্যন্ত ছুটি নিয়ে ৫ ডিসেম্বর তিনি শিলিগুড়ির বাড়িতে রওনা হন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)