Advertisement
২৬ নভেম্বর ২০২৪

অলিগলিতে ভূত নামছে

সিন্ডিকেট গড়ে লাইন করেই নির্ধারিত দিন ও সময়ের মধ্যে সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে শতাধিক গরু।

সীমান্তের ওপারে পাচারের অপেক্ষায়। ফাইল চিত্র

সীমান্তের ওপারে পাচারের অপেক্ষায়। ফাইল চিত্র

অনুপরতন মোহান্ত 
হিলি শেষ আপডেট: ০৯ সেপ্টেম্বর ২০১৯ ০৫:৫২
Share: Save:

রাত নামতেই সীমান্তের নিস্তব্ধ অলিগলির রাস্তা ব্যস্ত হয়ে উঠছে। ধুলো, কাদায় ভরা মেঠো রাস্তায় পায়ে চলার শব্দ বিছানায় শুয়ে শুনতে পান অনেক বাসিন্দা। দক্ষিণ দিনাজপুরের হিলি থানার ত্রিমোহিনী এলাকার ভারত-বাংলাদেশ সীমান্তের পথ ধরেই গবাদি পশু পাখি থেকে বিট লবন মায় মেহেন্দি পাচারের অভিযোগ উঠেছে। তাতে নিস্তব্ধ রাতের অন্ধকারে গরুর পাল ও পাচারকারীদের পথ চলার শব্দে তৈরি হচ্ছে ভৌতিক পরিবেশ। রাত বাড়তেই ওই এলাকার অলিগলিতে ভূতেরা সক্রিয় হয়ে ওঠে বলে প্রচার করায় ভয়ে রাতের বেলা পারতপক্ষে বাসিন্দারা ঘর থেকে বের হন না। পাচারকারীরা হইচইহীন নীরব পরিবেশই চান বলে জানা গিয়েছে। তাতে ‘বর্ডার বাণিজ্য’ সুষ্ঠু ভাবে চলে বলে অভিযোগ।

সিন্ডিকেট গড়ে লাইন করেই নির্ধারিত দিন ও সময়ের মধ্যে সীমান্তের ওপারে বাংলাদেশে পাচার হয়ে যাচ্ছে শতাধিক গরু। গরুর সঙ্গে লবণ, লঙ্কা ও মেহেন্দি ছাড়াও মাদক কাফ সিরাপ ফেন্সিডিল এবং ইয়াবা ট্যাবলেট পাচার চলছে।

স্থানীয় সূত্রে জানা গিয়েছে, দীর্ঘ দিন এ পার থেকে ওপারে গরু পাচার বন্ধ ছিল। বর্ষার মরসুম শুরু হতেই তৎপরতা বেড়েছে চোরাচালানকারীদের। লাইনম্যানের মাধ্যমে জায়গা মতো মোটা টাকার কাটমানি দিয়ে পাচার চলছে বলে অভিযোগ। পুলিশ এবং বিএসএফ কর্তৃপক্ষ অবশ্য গরু পাচারের অভিযোগ অস্বীকার করেন। এক বিএসএফের আধিকারিকের কথায়, পাচার রোধে রাতভর বিশেষ নজরদারি চলছে। সীমান্তের কাঁটাতারহীন এলাকায় নজরদারি জোরদার করা হয়েছে। অতিরিক্ত জেলা পুলিশ সুপার দেবাশিস নন্দী বলেন, ‘‘পাচার হচ্ছে এমন খবর নেই। খোঁজ নিয়ে দেখা হচ্ছে।’’ তবে প্রমাণ পেলে কড়া ব্যবস্থা নেওয়া হবে বলে জানান দেবাশিস।

হিলির ত্রিমোহিনী এলাকার সঙ্গে বালুরঘাট থানার ডাঙি সীমান্ত দিয়েও গরু ও মাদক সিরাপ পাচার হয় বলে অভিযোগ। ডাঙিতে আবার বিএসএফের নজর এড়িয়ে ভরা আত্রেয়ী নদীতে গরু ভাসিয়ে দেওয়ার অভিযোগ উঠেছে। মাত্র ১৫-২০ মিনিটের মধ্যে ঢিল ছোড়া দূরত্বে থাকা বাংলাদেশ সীমান্তে গরুগুলি পৌঁছে যায় বলে জানা গিয়েছে। চোরাপথে বাংলাদেশে এক জোড়া গরু পাঠাতে লাইনচুক্তি অনুযায়ী পাচারকারীদের অন্তত ২৫-৩০ হাজার টাকা দিতে হয়। ওপারে এক জোড়া গরুর দাম মেলে অন্তত ৪৫ হাজার টাকা। ৩৫ কেজির এক বস্তা বিট লবণ পাঠাতে লাইনচুক্তি ২০০ টাকা। ইদানীং বাংলাদেশে লঙ্কা পটকার খুব চাহিদা। ২৪০টি প্যাকেটের এক কার্টন লঙ্কা পটকার জন্য লাইনচুক্তি দিতে হয় ৬০০ টাকা। ৫০০ গ্রামের মেহেন্দি গুঁড়ো ওপারে পাঠাতে সীমান্তের লাইনচুক্তি অন্তত ১০০ টাকা। দু-তিনদিনের ফারাকে গরু থেকে ওই সমস্ত সামগ্রী পাচার হচ্ছে বলে অভিযোগ উঠেছে।

অন্য বিষয়গুলি:

Crime Smuggling Hili Border
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy