—প্রতীকী চিত্র।
এলাজানের কুঠির কৃষক গণেশ বর্মণ। বয়স ষাট ছুঁইছুঁই। ছোটবেলা থেকে অগভীর নলকূপের জল খেয়েই বড় হয়েছেন। তার খেসারেতও দিতে হয়েছে তাঁকে। মাঝে মাঝে পেটের রোগ নিয়ে ছুটতে হত চিকিৎসকের কাছে। বছর চারেক আগে বাড়িতে পৌঁছয় পানীয় জল। সেই সময় আনন্দের শেষ ছিল না গ্রামের মানুষদের মধ্যে। কিন্তু বছর ঘুরতে না ঘুরতেই পানীয় জলের সরবরাহ বন্ধ হয়ে গেল। এখনও দিনে কখনও এক বেলা জল আসে, কোনও দিন তা-ও আসে না। সেই সমস্যা মেটাতে গ্রামে একটা নতুন জলাধার বসানোর কাজ শুরু হয়েছে। তার পাইপ লাইনের কাজ এখনও বাকি। কোচবিহারের ফলিমারীর গণেশের কথায়, “পানীয় জলের কষ্ট আর আমাদের মেটে না। সেই ছোটবেলা থেকে এই কষ্ট শুরু হয়েছে। বয়সকালে ভাবলাম অবস্থা পাল্টাবে। কিন্তু তা হল না।”
বাংলাদেশের সীমান্ত লাগোয়া জেলা কোচবিহার। কমবেশি প্রায় তিরিশ লক্ষ মানুষের বসবাস। যার অধিকাংশ মানুষ গ্রামের বাসিন্দা। সেই গ্রামীণ এলাকায় পানীয় জলের সমস্যা চলছে দশকের পর দশক ধরে। এক সময়ে তো প্রায় সব গ্রামেই অগভীর নলকূপই ছিল ভরসা। পেটের রোগ ছিল নিত্যসঙ্গী। এখনও যে সমস্যা পুরোপুরি মিটেছে তা নয়। বেশ কিছু গ্রামে ‘জলজীবন মিশন প্রকল্পে’ পানীয় জলের ব্যবস্থা করেছে সরকার। চলতি বছরের ডিসেম্বর মাসের মধ্যে কোচবিহার জেলার বাড়িতে-বাড়িতে পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার কথা দিয়েছিল সরকার। কিন্তু অভিযোগ, এখনও জেলার বহু গ্রামেই পৌঁছয়নি পানীয় জল। প্রশাসনের তরফ থেকে এ বার আশ্বাস দেওয়া হয়েছে, নতুন বছরের মার্চ মাসের মধ্যে বাড়ি বাড়ি পানীয় জল পৌঁছে দেওয়া হবে। প্রথমে ২০২৫ সালের ডিসেম্বর পর্যন্ত সময় নেওয়া হলেও, পরে সেই সময়সীমা কমিয়ে আনা হয়। এ বার সে লক্ষ্যে সরকার কতটা সফল হয়, সে দিকেই তাকিয়ে জেলার মানুষ।
কোচবিহার শহর লাগোয়া চকচকা গ্রাম পঞ্চায়েতের একাধিক বাসিন্দা অভিযোগ করেছেন, বাইরে থেকে তাঁদের পানীয় জল কিনে খেতে হচ্ছে। কুড়ি লিটারের জল চল্লিশ থেকে পয়তাল্লিশ টাকায় কিনতে হচ্ছে। সেই জল কতটা পরিশ্রুত তা নিয়েও রয়েছে প্রশ্ন। কোচবিহারের জেলা পরিষদের সহ সভাধিপতি আন্দুল জলিল আহমেদ বলেন, “পানীয় জল পৌঁছে দেওয়ার জন্যে জোরকদমে চলছে কাজ। আমরা আশাবাদী অল্প সময়ের মধ্যে বাসিন্দাদের বাড়ি-বাড়ি পানীয় জল পরিষেবা পৌঁছে যাবে।” মাথাভাঙা ২ নম্বর ব্লকের রুইডাঙ্গা গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান অশ্বিনী দেবসিংহ বলেন, “আমাদের গ্রামে এখনও জলাধার তৈরি হয়নি। সবে পাইপ লাইনের কাজ হচ্ছে। তাই পানীয় জলের কষ্টে ভুগতে হচ্ছে গ্রামের বাসিন্দাদের।”
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy