শিলিগুড়িতে ‘অবৈধ নির্মাণ’কে কেন্দ্র করে শুরু হয়েছে তরজা। —নিজস্ব চিত্র।
উত্তর-পূর্ব ভারতের অন্যতম ব্যবসায়িক কেন্দ্র শিলিগুড়ির নিয়ন্ত্রিত বাজার বা রেগুলেটেড মার্কেট। বিগত কয়েক মাস ধরেই অনিয়মের অভিযোগ উঠছে এখানকার নিয়ন্ত্রিত বাজারকে ঘিরে। এক দিকে পরিকাঠামোগত ভাবে সমস্যার অভিযোগ রয়েছে। ব্যবসায়ীদের জন্য স্থায়ী সমাধান এবং চাহিদা অনুযায়ী দোকানের অনুমতি না মেলা বা সঠিক নিকাশি ব্যবস্থা বা পার্কিং না থাকার মতো সমস্যাগুলোকে যখন প্রতিদিনের সঙ্গী হয়েছে, তখন গোদের উপর বিষফোঁড়া একের পর এক অবৈধ নির্মাণ। ইতিমধ্যেই বেশ কিছু নির্মাণ সম্পন্নও হয়েছে। কোথাও দখল হয়েছে হাইড্রেন। আবার কোথাও সরকারি জমির উপরই উঠছে দোকান বা গদি। ধীরে ধীরে নিয়ন্ত্রিত বাজারে গজিয়ে ওঠা একের পর এক অবৈধ নির্মাণ নিয়ে জেলাশাসককে জানানো হয়েছে। পরিদর্শনে গিয়েছেন মন্ত্রী বেচারাম মান্না থেকে আমলারা। কিন্তু তদন্ত ওই পর্যন্তই। কলকাতার গার্ডেনরিচে অবৈধ বহুতল ভেঙে প্রাণহানির ঘটনায় শোরগোল সারা রাজ্যে। তখন শিলিগুড়ির ওই এলাকার কাউন্সিলরদের দাবি, অবৈধ নির্মাণকারীরা নাকি অনুমতি আনছেন একেবারে নবান্ন থেকে। এতে স্বাভাবিক ভাবেই প্রশ্ন উঠছে শিলিগুড়ি পুরনিগমের ভূমিকা নিয়ে।
মঙ্গলবার শিলিগুড়ি নিয়ন্ত্রিত বাজারের অন্য আর একটি অবৈধ নির্মাণের কাজ বন্ধ করে দেন শাসকদলের ৪৬ নম্বর ওয়ার্ডের কাউন্সিলর দিলীপ বর্মণ। নিয়ন্ত্রিত বাজারে গিয়ে অবৈধ নির্মণের নকশা খতিয়ে দেখেন তিনি। পুরনিগমের অনুমতিপ্রাপ্ত নকশা নয়, নির্মাণকারী সংস্থার নকশা দেখে নিয়ন্ত্রিত বাজারে চলা অনিয়মের বিরুদ্ধে সুর চড়িয়ে দিলীপের বক্তব্য, ‘‘কাদের থেকে মিলছে অনুমতি!’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘যাঁরা নিয়ন্ত্রিত বাজারের দায়িত্বে আছেন, তাঁরাই এই অসাধু কাজের পিছনে জড়িত। মূল সমস্যা দোকান বা গদি। কলকাতা-সহ বাইরের মানুষজন কলকাতা থেকে কাগজ বানিয়ে এখানে আসছেন। কী করে হচ্ছে এ সব? আমরা অন্ধকারে রয়েছি।’’ যদিও তৃণমূল কাউন্সিলরের এই মন্তব্যের প্রেক্ষিতে কটাক্ষ করেছে বিরোধীরা। বিজেপির কটাক্ষ, ‘‘এত দিন কোথায় ছিলেন?’’
তৃণমূল কাউন্সিলরের দাবি, ‘‘১২০০ স্কোয়ারফিট গোডাউন হওয়ার জায়গায় প্রায় পাঁচ থেকে সাত কাঠা জমি দখল করে অবৈধ নির্মাণ শুরু হয়েছে। গ্রিন জ়োনে বিনা অনুমতিতে কী করে কাজ হচ্ছে!’’ এর পর একটি নির্মাণের কাজ বন্ধের নির্দেশ দেন তিনি।
অন্য দিকে কাউন্সিলরের এমন আচরণ নিয়ে খনিকটা ক্ষুদ্ধ শিলিগুড়ির মেয়র তথা নির্মাণ এমআইসি গৌতম দেব। তিনি বলেন, ‘‘এর আগেও মন্ত্রীকে বলেছি। দফতরের সেক্রেটারি ট্রান্সফার হয়েছে। আবার মন্ত্রীকে জানাব।’’ তার পর নাম না করে দলের কাউন্সিলরের উদ্দেশে মেয়র বলেন, ‘‘ওঁকে বলব, যেখানে এ রকমের কাজ হচ্ছে, সেগুলো আমাদের জানান। আমরা মন্ত্রীকে জানাব।’’
গোটা ঘটনা নিয়ে শাসকদলকে একহাত নিয়েছেন শিলিগুড়ির বিধায়ক শঙ্কর ঘোষ। বিজেপি বিধায়কের কথায়, ‘‘এখানে অর্থ একটা মূল কারণ। যদি অর্থ দিয়ে খুশি করা যায় তাহলে দায়িত্বশীল পদে যাঁরা আছেন তাঁরা চুপ করে থাকেন। এটা নিয়েই রেগুলেটেড মার্কেটের বিল্ডিং বিতর্কের সূত্রপাত। তৃণমূলের কাউন্সিলরই অভিযোগ করছেন এখানে। তা হলে পুরনিগমের বিল্ডিং দফতর কী করছে?’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘নিয়ন্ত্রিত বাজারে অবৈধ নির্মাণের অভিযোগও পুরনো। মন্ত্রী, মেয়র সবাই দেখে গিয়েছেন। কিন্তু কোন কাজ হয়নি।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy