নিজস্ব চিত্র
ভয়াল আকার ধারণ করেছে মালদহের ভাঙন পরিস্থিতি। তলিয়ে গিয়েছে ভাঙনের কবলে পড়া মানুষদের আশ্রয় শিবিরও। আশঙ্কা,তলিয়ে যেতে পারে প্রাক্তন বিধায়কের বাড়ি। তাই নতুন আশ্রয় খুঁজতে শুরু করেছেন তিনিও। মালদহের বীরনগর, সরকারপাড়া, সর্বত্র ছবিটা একই রকম। স্থানীয় সূত্রে খবর, সোমবার সব মিলিয়ে প্রায় ২০০ বাড়ি ভাঙনের কবলে পড়েছে। সাধারণ মানুষ আশ্রয় নিয়েছেন রাস্তার ধারে,মাঠে। চোখে মুখে সব হারানোর বেদনা নিয়ে এখন তাঁদের একটাই প্রশ্ন, কোথায় যাবেন?
২০১৬ সালে একই ভাবে বাড়ি ভেঙেছিল তৎকালীন বৈষ্ণবনগর বিধানসভার বিধায়কের। আজ তিনি বিধায়ক নেই। তবে আবারও তাঁর বসতবাড়ি নদীগর্ভে তলিয়ে যাওয়ার সম্ভাবনা তৈরী হয়েছে। তাই নতুন করে আস্তানার খোঁজ করছেন বিজেপি-র প্রাক্তন বিধায়ক স্বাধীনকুমার সরকার। সোমবার সকালে গঙ্গার ভয়াবহ ভাঙনের ফলে স্বাধীনবাবুর বাড়ি থেকে মাত্র ৫০ মিটার দূরে অবস্থান করছে গঙ্গা। সেই কারণে বসতভিটা থেকে জিনিসপত্র সরানোর কাজ শুরু করেছেন তিনি। স্বাধীনবাবু জানান, গত পাঁচ বছর আগে বাড়ি তলিয়ে যাওয়ার পর প্রায় সাত লক্ষ টাকা খরচ করে নতুন বাড়ি তৈরী করেছেন। কিন্ত যেভাবে ভাঙন চলছে তাতে তাও তলিয়ে যাওয়ার সম্ভবনা তৈরী হয়েছে।
সোমবার সকালেই ভাঙনের মুখে পড়ে কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের বীরনগর গার্লস হাইস্কুলের একাংশ। তলিয়ে যায় নদীগর্ভে। এর ফলে আশ্রয়হীন হয়ে পড়ে শতাধিক পরিবার। ২০১৬ সালে গঙ্গার ভাঙনের কবলে পড়া আশ্রয়হীন পরিবারগুলির ঠিকানা হয়ে উঠেছিল বীরনগরের এই স্কুল ভবনের একাংশ। এই বছরের ভাঙনে স্কুল বাড়ির একাংশ গঙ্গার গর্ভে তলিয়ে যাওয়ায় আশ্রয় হারাল শতাধিক পরিবার। এই ত্রাণ শিবিরে আশ্রয় নেওয়া শঙ্কর মণ্ডল বলেন, ‘‘রাজ্য সরকারের গৃহহীনদের তালিকায় আমাদের নাম রয়েছে। কিন্তু এখনও জমির পাট্টা পাইনি। তাই এই সরকারি ত্রাণ শিবিরেই ছিলাম। আজ সেটাও গেল। বাধ্য হয়ে আকাশের নীচে কোন উঁচুস্থানে সরে যেতে হচ্ছে আমাদের। এখনও পর্যন্ত সরকারি ভাবে আমাদের জন্য কোনও ব্যবস্থা নেওয়া হয়নি।’’
পরিস্থিতি বুঝতে রাজ্যের সেচ দফতরের প্রতিমন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন, মালদহের জেলাশাসক রাজর্ষি মিত্র ভাঙনের কবলে পড়া এলাকা পরিদর্শন করেন সোমবার। মন্ত্রী সাবিনা ইয়াসমিন বলেন, ‘‘বীরনগর স্কুলের বদলে অন্যত্র ত্রাণ শিবির খোলার জন্য জেলাশাসককে ব্যবস্থা করতে বলা হয়েছে।’’ তবে ভাঙন প্রতিরোধের বিষয়ে এখনও রয়েছে সমস্যা। জেলাশাসক বলেছেন, ‘‘কালিয়াচক তিন নম্বর ব্লকের এই এলাকাটিতে ভাঙন প্রতিরোধের দায়িত্ব ফরাক্কা ব্যারেজের। রাজ্য সরকারের সেচ দফতরের এই এলাকায় কাজ করার অনুমতি নেই। তাই ফরাক্কা ব্যারেজ কর্তৃপক্ষকে বিষয়টি জানানো হয়েছে। শীঘ্রই ভাঙন প্রতিরোধের কাজ শুরু হবে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy