জল্পেশের কাছে জারদা নদীর গ্রাস থেকে মেলার মাঠ বাঁচাতে নতুন বাধ বানাবার কাজ চলছিল ধোসে গেলো সেই বাধ। ছবি দীপঙ্কর ঘটক
দিন দুয়েকের বন্যা পরিস্থিতির ক্ষত এখনও শুকোয়নি। কালচিনির মেচপাড়ায় পরপর সব বাড়িতে এখনও বন্যার জলের নিয়ে আসা পলি জমে রয়েছে। বেশ কিছু বাঁধে ফাটল রয়েছে। এই পরিস্থিতি মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের পাঠানো প্রতিনিধি দল সোমবার উত্তরবঙ্গে এসে পৌঁছচ্ছে। প্রতিনিধি দলের নেতৃত্বে রয়েছেন রাজ্যের সেচ মন্ত্রী পার্থ ভৌমিক। রবিবার টুইট বার্তায় মুখ্যমন্ত্রী প্রতিনিধি দল পাঠানোর কথাজানিয়েছেন। টুইটে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন— “উত্তরবঙ্গে এক উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল পাঠাচ্ছি। সেচমন্ত্রী, বিপর্যয় মোকাবিলা, কৃষি, সেচ দফতরের সচিবেরা থাকবেন। উত্তরবঙ্গে প্রবল বৃষ্টি হয়েছে। নদীগুলি ফুলে উঠেছে, রাস্তা বিপর্যন্ত, সম্পত্তির ক্ষয়ক্ষতি হয়েছে।” জেলাশাসক, পুলিশ সুপারেরা জাতীয় বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনী এবং রাজ্য বিপর্যয় মোকাবিলা বাহিনীর সঙ্গে সমন্বয় রেখে ত্রাণ এবং উদ্ধারকাজ চালাচ্ছেন বলে জানিয়ে মুখ্যমন্ত্রী লিখেছেন, “আমি নিজে সব কিছু তদারকি করছি। মুখ্যসচিবকে প্রতি মুহূর্তের পরিস্থিতি দেখাশোনা করতে বলেছি। যত রকম ব্যবস্থা নেওয়ার নেওয়া হবে।”
প্রশাসনিক সূত্রে খবর, সোমবার সকালে জলপাইগুড়ি সার্কিট হাউসে মুখ্যমন্ত্রীর পাঠানো উচ্চ পর্যায়ের প্রতিনিধি দল এসে পৌঁছবে। সেখানে জেলা প্রশাসনের সঙ্গে একপ্রস্ত আলোচনা হতে পারে। তার পরে দলটি আলিপুরদুয়ারে যেতে পারে। গত বৃহস্পতিবারের পর থেকে তৈরি হওয়া বন্যা পরিস্থিতিতে আলিপুরদুয়ার জেলার ক্ষয়ক্ষতির পরিমাণই সবচেয়ে বেশি। রবিবার ছুটির দিনেই ক্ষতির পরিমাণ নিয়ে রিপোর্ট তৈরি করতে জোর ব্যস্ততা শুরু হয়েছে আলিপুরদুয়ারের প্রশাসনে। তবে সেই হিসাব এখনও পুরোপুরি চূড়ান্ত নয় বলে প্রশাসনের কর্তারা জানিয়েছেন।
সমতলের সঙ্গেই পাহাড়ে প্রবল বৃষ্টির জেরে গত বৃহস্পতিবার আলিপুরদুয়ার জেলার বিভিন্ন জায়গায় বন্যা পরিস্থিতি তৈরি হয়। মৃত্যু হয় দু’জনের। নিখোঁজ হন আরও এক জন। জেলার বহু এলাকা প্লাবিত হয়। বিভিন্ন জায়গায় কৃষিজমিতে জল জমে যায়। ক্ষতি হয় নদী বাঁধের। এই মুহূর্তে আলিপুরদুয়ার জেলায় বন্যা পরিস্থিতির উন্নতি হলেও, এখনও দুর্ভোগ কাটেনি কালচিনি ব্লকের মেচপাড়া পাকা লাইন এলাকার বাসিন্দাদের। পুরো এলাকা এখনও ভরে রয়েছে পলিমাটিতে। ঘরের আসবাবপত্র থেকে শুরু করে বৈদ্যুতিক সব জিনিসই নষ্ট হয়ে গিয়েছে বলে দাবি বাসিন্দাদের। রবিবার এলাকার বাসিন্দাদের পাশে দাঁড়ালেন বাগানেরই শ্রমিক ও অন্যান্য স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের সদস্যরা। সকলে মিলে এলাকার বাসিন্দাদের ঘর থেকে পলিমাটি সরানোর কাজে হাত লাগিয়েছেন। অন্য দিকে, তিনদিন পর ফের যান চলাচল শুরু হল জয়গাঁগামী বিবাড়ি এলাকার গোবরজ্যদি সেতুর সংযোগকারী সড়ক দিয়ে।
কোচবিহারে বন্যা পরিস্থিতি বর্তমানে স্বাভাবিক। তোর্সার জল নেমে গিয়েছে। তবে তোর্সার জল বেশ কিছু অসংরক্ষিত জায়গায় ঢুকে যাওয়ার সেখানে বেশ কিছু ক্ষয়ক্ষতি হয়। তার মধ্যে রয়েছে তোর্সা সংলগ্ন আঠারোখাই, পালপাড়া, বড়ুয়াপাড়ার মতো গ্রাম।
কোচবিহারে সদর মহকুমাশাসক রাকিবুর রহমান বলেন, ‘‘নদীর জল নেমে গিয়েছে। এখন পরিস্থিতি অনেকটাই স্বাভাবিক।’’ জলপাইগুড়িতেও তিস্তা এবং জলডাকা নদী থেকে সর্তকতা প্রত্যাহার করা হয়েছে। তবে তিস্তা ব্যারাজ থেকে এখনও জল ছাড়া হচ্ছে ভাল পরিমাণেই। এ দিনও জলপাইগুড়িতে বিক্ষিপ্ত ভাবে বৃষ্টি হয়েছে। কেন্দ্রীয় আবহাওয়া দফতরের পুর্বাভাস অনুযায়ী, আগামী ২৪ ঘণ্টায় হালকা থেকে মাঝারি বৃষ্টিপাত হতে পারে। তবে আকাশ মেঘাচ্ছন্ন থাকবে।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy