আলিপুরদুয়ার পুরসভা। —ফাইল চিত্র।
দেখতে দেখতে এক দশক পূর্ণ করল আলিপুরদুয়ার জেলা। ২০১৪ সালের ২৫ জুন জন্ম হয়েছিল আলিপুরদুয়ার জেলার। কেক কাটা থেকে শুরু করে শোভাযাত্রা ও নানা অনুষ্ঠানের মধ্যে পালিত হয়েছে দিনটি। জেলা ঘোষণার পর এই দশ বছরে আলিপুরদুয়ারের অনেক উন্নয়ন হয়েছে নিশ্চয়। জেলার মূল প্রশাসনিক ভবন হিসাবে ঝাঁ চকচকে ‘ডুয়ার্সকন্যা’ তৈরি হয়েছে। আলিপুরদুয়ার মহকুমা আদালত জেলা আদালত হয়েছে। আলিপুরদুয়ার কলেজ ঘিরে তৈরি হয়েছে নতুন বিশ্ববিদ্যালয়। অনেক আগেই আলিপুরদুয়ার মহকুমা হাসপাতালও জেলা হাসপাতালে পরিণত হয়েছে। পাশাপাশি, ফালাকাটায় তৈরি হয়েছে সুপার স্পেশালিটি হাসপাতাল। ফালাকাটা পেয়েছে নতুন পুরসভাও। গড়ে উঠেছে পুলিশ সুপারের কার্যালয়। দশ বছরে হিসেবটা মন্দ নয়। তার পরেও অবশ্য বিভিন্ন মহল থেকেই প্রশ্ন ওঠে জেলায়, আলিপুরদুয়ার কি আদৌ পূর্ণাঙ্গ জেলা হতে পেরেছে?
এ প্রশ্নটা ওঠা একেবারেই অস্বাভাবিক নয়। আলিপুরদুয়ারকে নতুন জেলা ঘোষণার আগে থেকেই এখানে ক’টা মহকুমা হবে, কোন কোন এলাকা নিয়ে সে সব মহকুমা গঠিত হবে তা নিয়ে চর্চা শুরু হয়। শুধু তা-ই নয়, নতুন জেলা হওয়ার আগে, জেলার কোথাও কোথাও কামাখ্যাগুড়িকে মহকুমা হিসাবে গড়ে তোলার দাবিতে পোস্টারও পড়ে। পরবর্তী কালে কখনও সেই কামাখ্যাগুড়ি-সহ বারবিশা ও গোটা কুমারগ্রামকে নিয়ে একটি মহকুমা, কখনও আবার ফালাকাটা এবং মাদারিহাট-বীরপাড়াকে নিয়ে মহকুমা, কখনও জয়গাঁ, কালচিনি, হাসিমারাকে নিয়েও মহকুমা তৈরির দাবি ওঠে।
কিন্তু জেলার বয়স দশ বছর পূর্ণ হলেও এখনও নতুন কোনও মহকুমা পায়নি আলিপুরদুয়ার। অবিভক্ত জলপাইগুড়ি জেলার অংশে থাকার সময় আলিপুরদুয়ার যেমন মহকুমা ছিল, জেলা গঠনের পরেও গোটা জেলায় একটা মহকুমাই থেকে গিয়েছে। অর্থাৎ, একটা জেলায় একটাই মহকুমা। এই রাজ্য সরকারের আমলে বছরের বিভিন্ন সময় ‘দুয়ারে সরকার’ কর্মসূচি হচ্ছে। যে কর্মসূচিতে প্রশাসনের কর্তারা কার্যত পৌঁছে যাচ্ছেন সাধারণ মানুষের ঘরের দুয়ারে দুয়ারে। কিন্তু বছরের বাকি সময়টায় মহকুমাশাসকের দফতরে প্রশাসনিক নানা কাজের জন্য বনাঞ্চল, চা বাগান কিংবা নদী পেরিয়ে কিলোমিটারের পরে কিলোমিটার পথ পেরিয়ে জেলার নানা প্রান্তের মানুষকে আসতে হচ্ছে সদর শহরে। যার জেরে, জেলার নানা প্রান্তের মানুষের যাতায়াতেই গোটা দিন পেরিয়ে যাচ্ছে।
প্রশ্ন উঠছে, আর কতদিন সাধারণ মানুষের একটা বড় অংশকে ভোগান্তির শিকার হতে হবে? এ বিষয়ে একাধিক বার আলিপুরদুয়ারের প্রাক্তন আরএসপি বিধায়ক নির্মল দাসকে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়ের উদ্দেশ্যে চিঠি পাঠাতে দেখা গিয়েছে। কিন্তু রাজ্যের শাসক দল তৃণমূল কিংবা প্রধান বিরোধী দল বিজেপির নেতাদের কি রাজ্য সরকারের কাছে বিষয়টি নিয়ে সে ভাবে দাবি তোলা উচিত নয়? তা নিয়েও কিন্তু প্রশ্ন থেকে যায়। জেলার সাধারণ মানুষ এখন প্রশ্ন তুলতেই পারেন, এই দশ বছরে এত ভোট, এত প্রতিশ্রুতি, রাজনৈতিক দলগুলোর এত উন্নয়নের ফিরিস্তির পরে, কী পেলেন তাঁরা?
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy