একাধিকবার আশ্বাস মিললেও সেতু হয়নি বলে অভিযোগ। মহানন্দার উপরে পাকা সেতুর দাবিতে রাজ্য সড়ক অবরোধ করে বিক্ষোভ দেখালেন বাসিন্দারা। মালদহের রতুয়ার পিরগঞ্জ এলাকা। শুক্রবার কয়েক হাজার মানুষ রাজ্য সড়কে বাঁশের ব্যারিকেড দিয়ে অবস্থান-বিক্ষোভ শুরু করেন। পুলিশ আন্দোলনকারীদের বোঝানোর চেষ্টা করেও অবরোধ তুলতে ব্যর্থ হয়। রাত পর্যন্ত বিক্ষোভ চলে। আন্দোলনে সকাল ৯টা থেকে রাত পর্যন্ত অবরুদ্ধ হয়ে থাকে রতুয়া থেকে পিরগঞ্জ হয়ে মালদহগামী রাজ্য সড়ক। যার জেরে চরম দুর্ভোগে হতে হয় নিত্যযাত্রীদের। ও পারে পিরগঞ্জে ও এ দিকে নওগামা এলাকায় থেমে থাকে ট্রাক, বড় গাড়ি। যানজট তৈরি হওয়ায় তাদের সেখান থেকে বেরোনোরও উপায় ছিল না। মালদহ থেকে ম্যাক্সি ক্যাব, টোটো পিরগঞ্জে এসে সেখান থেকে ঘুরে যায়। এ দিকে বাহারাল থেকে নওগামা গিয়ে ফের ঘুরে আসে যানবাহন। মালদহের পুলিশ সুপার প্রদীপকুমার যাদব বলেন, ‘‘আন্দোলনকারীদের সকাল থেকে বোঝানো হলেও তাঁরা অবরোধ সরাননি। যাতে সমস্যা না হয় সেজন্য সারাদিন পুলিশ সক্রিয় ছিল।’’
এ দিন বিক্ষোভকারীদের সঙ্গে কথা বলতে চান জেলাশাসক। বিক্ষোভকারীদের তাঁর দফতরে যেতে বলা হয়। কিন্তু প্রশাসনের কর্তাদের এলাকায় আসতে হবে বলে দাবি করেন তাঁরা। সকাল ন’টা থেকে মালদহগামী রাজ্য সড়ক অবরুদ্ধ হয়ে থাকায় বিপাকে নিত্যযাত্রীরা। দাবি না মেটা পর্যন্ত অবরোধ চলবে বলে হুমকি দেন আন্দোলনকারীরা। সন্ধ্যায় চাঁচলের মহকুমাশাসক শৌভিক মুখোপাধ্যায় বলেন, ‘‘প্রশাসন ওঁদের আলোচনায় ডাকলেও সেখানে ওঁরা যাননি। বিষয়টি দেখা হচ্ছে।’’
প্রশাসন ও স্থানীয়দের সূত্রে জানা গিয়েছে, রতুয়া ২ ব্লকের পিরগঞ্জে মহানন্দার ওপারে পুরাতন মালদহের বলরামপুর এলাকা। শুখা মরসুমে বাঁশের মাচা দিয়ে নদী পারাপার করেন স্থানীয়রা। তাতে দুর্ঘটনাও ঘটে বলে অভিযোগ। নদীতে পাকা সেতুর দাবিতে আন্দোলন করছেন দু’টি ব্লকের বাসিন্দারা।
স্থানীয়দের অভিযোগ, সেতু তৈরির জন্য একাধিকবার এলাকা পরিদর্শন করেন প্রশাসনের পাশাপাশি বিধায়ক, নেতারাও। কিন্তু আশ্বাস মিললেও সেতু হয়নি বলে অভিযোগ। উত্তর মালদহের বিজেপি সাংসদ খগেন মুর্মু বলেন, ‘‘এটা রাজ্যের বিষয়। না পারলে প্রকল্প তৈরি করে কেন্দ্রের সাহায্য চেয়ে চিঠি দিক। আমি নিজে চেষ্টা করব। কিন্তু ওরা তা করবে না। উল্টে আমাদের নিশানা করবে।"
এই প্রসঙ্গে পিরগঞ্জ ব্যবসায়ী সমিতির সম্পাদক জিসান আহমেদ এই দিন বলেন, ‘‘গত সাত বছর ধরে আমরা পথে নেমে আন্দোলন করছি। একাধিকবার প্রশাসনের কর্তারা, বিধায়ক এসে সেতু শীঘ্রই হবে বলে প্রতিশ্রুতি দিলেও কোনও ফল হয়নি। ফলে, এ বার দাবি না মেটা পর্যন্ত আমাদের আন্দোলন চলবে।’’
এলাকাটি মালতীপুর বিধানসভার মধ্যে। বিধায়ক আবদুর রহিম বক্সী এই দিন বলেছেন, ‘‘ওখানে সেতু জরুরি। আমাদের মুখ্যমন্ত্রীর উদ্যোগে রাজ্যে একাধিক সেতু হয়েছে। এটাও হবে। প্রশাসন বিষয়টি দেখছে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)