Advertisement
০২ নভেম্বর ২০২৪

কার্বাইন নিয়ে তরজা তুঙ্গে কোচবিহারে

রবিবার ধৃত দু’জনকে কোচবিহার আদালতে তোলা হয়। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম প্রশান্ত বর্মণ এবং লিটন শীল।

সেই কার্বাইন। নিজস্ব চিত্র

সেই কার্বাইন। নিজস্ব চিত্র

নিজস্ব সংবাদদাতা
কোচবিহার শেষ আপডেট: ১৫ জুলাই ২০১৯ ০৬:৪২
Share: Save:

কার্বাইন-সহ দুই যুবককে গ্রেফতার নিয়ে রাজনৈতিক চাপানউতোর তুঙ্গে উঠেছে। দিনহাটার তৃণমূল বিধায়ক উদয়ন গুহ দাবি করেন, ওই দুই যুবক কোচবিহারের বিজেপি সাংসদের ঘনিষ্ঠ এবং তাঁরাও বিজেপি কর্মী। সাংসদ নিশীথ প্রামাণিক ওই অভিযোগ উড়িয়ে দিয়ে পাল্টা দাবি করেন, ওই দু’জন তৃণমূল কর্মী এবং তারা তৃণমূলের হয়ে এলাকায় নানা সন্ত্রাস করেছে। নিশীথের আরও দাবি, তারা উদয়নবাবু ও সিতাইয়ের বিধায়ক জগদীশ বসুনিয়ার ঘনিষ্ঠ। ভোটে হেরে বিজেপিকে বদনাম করার জন্যেই তৃণমূল এমন অভিযোগ করছে বলে দাবি নিশীথের।

রবিবার ধৃত দু’জনকে কোচবিহার আদালতে তোলা হয়। পুলিশ জানায়, ধৃতদের নাম প্রশান্ত বর্মণ এবং লিটন শীল। তাঁদের বাড়ি ভেটাগুড়ির ব্রহ্মাণীর চৌকিতে। বিজেপি সাংসদের বাড়িও ভেটাগুড়িতেই। সে জন্যেই তৃণমূল ওই বিষয় নিয়ে রাজনীতি করতে চাইছে বলে মনে করছে বিজেপি। কোচবিহার জেলার এক পুলিশ কর্তা বলেন, “দু’জনকে পুলিশ হেফাজতে নিয়ে জিজ্ঞাসাবাদ করা হচ্ছে। তাতেই অনেক কিছু স্পষ্ট হবে।”

পুলিশ সুত্রে জানা গিয়েছে, শনিবার কোচবিহার কোতোয়ালি থানার চিলকিরহাট থেকে ওই দু’জনকে গ্রেফতার করে পুলিশ। তাদের কাছে একটি কার্বাইন ও ২ রাউন্ড গুলি উদ্ধার করা হয়। পুলিশ জানায়, ধৃতেরা চার জন ছিল। কোনও অসামাজিক কাজের উদ্দেশেই সেখানে তারা জড়ো হয়েছিল। গত পঞ্চায়েত নির্বাচনের সময়ে কোচবিহার তথা দিনহাটা আগ্নেয়াস্ত্রের রমরমা তৈরি হয়। রাত হলেই একাধিক এলাকায় গুলি ও বোমার শব্দে সন্ত্রস্ত হয়ে উঠতে শুরু করেছিল। সেই সময় যুব ও মূল তৃণমূলের লড়াইয়ে আগ্নেয়াস্ত্র ব্যবহারের ঘটনা বারে বারে প্রকাশ্যে আসে। গুলিতে ও বোমায় বহু মানুষ জখমের ঘটনাও ঘটে। খুনের অভিযোগও রয়েছে। এই অবস্থায় পুলিশ অভিযানে নামে একের পর এক আগ্নেয়াস্ত্র উদ্ধার করে। প্রচুর যুব ও মূল তৃণমূলের কর্মীদেরও গ্রেফতার করা হয়। সেই সময়ই দিনহাটা থানার বড় আটিয়াবাড়ি থেকে তৃণমূলের এক গ্রাম পঞ্চায়েত প্রধানের স্বামী নরেশ বর্মণকে কার্বাইন-সহ গ্রেফতার করে পুলিশ। এই কার্বাইন কোথা থেকে আসছে তা নিয়ে ধোঁয়াশা তৈরি হয় পুলিশের মধ্যে।

এ বারে লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহারে বিজেপি প্রার্থী নিশীথ প্রামাণিক জয়ী হন। নিশীথ একসময় যুব তৃণমূলের দাপুটে নেতা ছিলেন। তাঁকে দল থেকে বহিষ্কার করা হলে তিনি বিজেপিতে যোগ দেন। সে জন্যেই নিশীথকে বদনাম করতে এমন অভিযোগ তৃণমূল তুলছে বলছে অভিযোগ। বিজেপির কোচবিহার জেলার সহ সভাপতি ব্রজগোবিন্দ বর্মণ বলেন, “এমন অভিযোগ যারা করছে তাদের বিরুদ্ধে আইনানুগ ব্যবস্থা নেওয়া হবে। আর ওই দুই যুবক যে তৃণমূল কর্মী তা এলাকার সবাই জানে।” তৃণমূলের দিনহাটা ১ ব্লকের সভাপতি নুর আলম হোসেনও দাবি করেন, ধৃত ওই দু’জন বিজেপি কর্মী।

তদন্তকারী পুলিশ অফিসাররা জানিয়েছেন, ওই কার্বাইন কীভাবে কোথা থেকে তারা পেয়েছে তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে। কোচবিহারে এর আগে মূলত দেশি পাইপগান ছাড়াও নাইনএমএম এবং সেভেন এমএম পিস্তল প্রচুর পরিমাণে উদ্ধার হয়েছে। কিছু সিক্স রাউন্ড রিভলবারও পাওয়া গিয়েছে। যেগুলির বেশিরভাগই মুঙ্গের থেকে কোচবিহারে নিয়ে যাওয়া হয়েছে। কার্বাইন কোথা থেকে আসছে তা নিয়ে তদন্ত শুরু হয়েছে।

অন্য বিষয়গুলি:

TMC BJP Crime Nisith Pramanik Carbine Gun
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE