নদীর নামেই চা বাগানের নাম। ওই বাগানের সামনেই উত্তরমুখী হয়েছে ‘জলপাইগুড়ির টেমস’ বলে পরিচিত করলা নদী। আট দশকেরও বেশি সময় ধরে শহর সংলগ্ন গৌরীহাটে বারুণী স্নান করেন ভক্তরা। বসে বড় আকারের মেলাও। বৃহস্পতিবার থেকে শুরু হচ্ছে স্নান ও মেলার পর্ব। প্রশাসনের নির্দেশে সিসিটিভি ক্যামেরা-সহ কড়া নজরদারির ব্যবস্থা করেছেন মেলা কমিটির সদস্যরা।
বুধবার সেখানে শেষ মুহূর্তের প্রস্তুতিতে ব্যস্ত সবাই। শহর ও সংলগ্ন এলাকার ব্যবসায়ীরা ছাড়াও নবদ্বীপ, কোচবিহার, রায়গঞ্জ, এমনকি অসম থেকেও এসেছেন ব্যবসায়ীরা। এ দিন অস্থায়ী দোকান তৈরি ও পসরা সাজাতে দিনভর ব্যস্ত থাকলেন তাঁরা। নাগরদোলা-সহ শিশুদের মনোরঞ্জনের হরেক রকম সরঞ্জামও রয়েছে মেলায়।
কোচবিহার থেকে আসা এক ব্যবসায়ী বলেন, ‘‘চার-পাঁচ বছরেরও বেশি সময় ধরে দোকান দিচ্ছি। এই মেলায় ভালই বিক্রি হয়।’’ বৃহস্পতিবার রাতে হবে কালীপুজো। ওই দিন ভারত সেবাশ্রম সঙ্ঘের তরফে সবাইকে ভোগ প্রসাদ দেওয়া হবে। শুক্রবার হবে গঙ্গাপুজো ও পিণ্ডদান। বৃহস্পতিবার থেকে বারুণী স্নান শুরু হলেও, অমাবস্যা লাগলে, রীতি মেনে স্নান করবেন রাজবংশী সম্প্রদায়ের মানুষ।
নির্মীয়মান সেতু থেকে কিছুটা দূরে, নদীবক্ষে তৈরি হয়েছে পুণ্যার্থীদের স্নানের জায়গা। ওই জায়গা ও মেলার খুঁটিনাটি খতিয়ে দেখছেন গৌরীহাট বারুণী মেলা কমিটির সভাপতি সঞ্জিত কর্মকার ও সম্পাদক সুকল্যাণ চৌধুরী-সহ অন্যরা। সহযোগিতা করছে গৌরীহাট উন্নয়ন সমিতিও। মেলা চলবে ৩ এপ্রিল পর্যন্ত। পুজো ও মেলা উপলক্ষে আসবেন সন্ন্যাসী-সাধকেরাও। তাঁদের জন্য আলাদা ব্যবস্থা করা হয়েছে বলে দাবি আয়োজকদের।
প্রতি দিন উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জায়গা থেকে প্রচুর মানুষ মেলায় আসবেন। মেলায় কোনও অপ্রীতিকর ঘটনা রুখতে গোটা চত্বর সিসিটিভি ক্যামেরায় মুড়ে ফেলা হচ্ছে বলে দাবি। সঞ্জিত বলেন, ‘‘হাজার তিনেক স্টল থাকছে মেলায়। মোট ১২টি সিসি ক্যামেরা বসানো হচ্ছে। আলাদা ভাবে নজরদারিও করা হবে। প্রশাসনও সহায়তা করছে। মেলা যাতে সুষ্ঠু ভাবে সম্পন্ন হয়, সে জন্য আমরা সজাগ থাকব। মেলা শেষে দ্রুত আবর্জনাও সাফ করা হবে।’’
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)