কারও খাওয়ার রুচি নেই, কারও হঠাৎ বমি হচ্ছে। কেউ জ্বর, সর্দিতে ভুগছে। কারও পেট খারাপ হচ্ছে। এমন অনেক শিশু রোগীদের নিয়ে শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে চিকিৎসক দেখাতে ভিড় করছেন অভিভাবকেরা। সোমবার শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালের বহির্বিভাগে শিশু চিকিৎসকের ঘরের সামনে দীর্ঘ লাইনে শিশুদের কোলে নিয়ে দাঁড়িয়েছিলেন মায়েরা। অনেক শিশু অসুস্থতার কারণে কান্নাকাটি করায় তাদের কোলে ধরে রাখতে পারছিলেন না মায়েরা। তীব্র গরমে বড়দের থেকে বেশি সমস্যায় পড়ছে কচিকাঁচারা। সাতসকালে কড়া রোদে স্কুল থেকে দিনভর গরম, ঘামে জামাকাপড় ভিজছে। অনেকে আবার জলও কম খাচ্ছে বলে সমস্যা হচ্ছে।
চিকিৎসকেরা জানাচ্ছেন, বড়দের উপরে তীব্র গরমের প্রভাব কম পড়লেও, শিশুদের উপরে পড়ছে বেশি। মাঝে মাঝে বৃষ্টি পড়ছে। আবহাওয়ার খামখেয়ালিপনায় রোগে আক্রান্ত হওয়ার প্রবণতা বেশি থাকে। অনেক সময় নিয়ম মেনে খাবার না খাওয়া, গরমে বাইরে বেরোনো এবং বিশেষ সতর্কতা না নেওয়ার ফলেও শিশুরা নানা রোগে আক্রান্ত হচ্ছে। এ দিন শিলিগুড়ি জেলা হাসপাতালে বহির্বিভাগে কমবেশি ৫০০ জন শিশু রোগী এবং অন্তর্বিভাগে অন্তত ৪০ জন শিশু রোগী ভর্তি ছিল বলে জানিয়েছেন হাসপাতালের সুপার চন্দন ঘোষ। বিভিন্ন নার্সিংহোমেও বহু শিশুর চিকিৎসা হচ্ছে রোজ। জেলা হাসপাতালে শিশু চিকিৎসকের ঘরের সামনে মেয়েকে নিয়ে লাইনে দাঁড়িয়ে ছিলেন রুখসানা খাতুন। তিনি বলেন, ‘‘জ্বর, খাচ্ছে না মেয়েটা। বাড়িতে ওষুধ খাওয়ালেও সারছে না।’’
গরমে প্রাথমিকের স্কুলগুলিতে পড়ুয়াদের উপরে প্রভাব পড়ছে। অনেক স্কুলে পাখা কম, কোথাও নেই বললেই চলে। ফলে, পড়ুয়ারা স্কুলে কম যাচ্ছে। অভিভাবকদের একাংশ সকালে ক্লাস করানোর দাবি তুলছেন। বিষয়টি রাজ্যে জানিয়েছেন শিলিগুড়ি শিক্ষা জেলার প্রাথমিকের স্কুল পরিদর্শক তরুণ সরকার। সোমবার দুপুরের পরে তাপমাত্রা কিছুটা কমলেও আর্দ্রতা বেশি রয়েছে। তাতে বাড়ি, স্কুল, টিউশন— সব মিলিয়ে কাহিল হয়ে পড়ছে কচিকাঁচারা।
এ দিন শহরের তাপমাত্রা ছিল ৩৬ ডিগ্রি সেলসিয়াসের আশপাশে, যা অনুভূত হয়েছে ৪২ ডিগ্রির মতো। কিন্তু উত্তরবঙ্গ জুড়ে প্রচণ্ড গরমে হাঁসফাঁস অবস্থা মানুষের। নদী-নালা শুকিয়ে যেতে শুরু করেছে। মাঝেমধ্যে এক পশলা বৃষ্টিতে গরম আরও বেড়েই থাকছে। এই পরিস্থিতি আরও তিন-চার দিন চলবে বলেই ইঙ্গিত দিল আবহাওয়া দফতর। আবহাওয়া দফতরের পূর্বাভাসে জানানো হয়েছে, স্থানীয় কিছু জলীয় বাষ্প রয়েছে এলাকায়। সে জন্য উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায় বজ্রগর্ভ মেঘ সঞ্চার করে ছিটেফোঁটা বৃষ্টি এবং বজ্রপাতের সম্ভাবনা রয়েছে। গরম আগামী কয়েক দিন এখনও থাকবে। বাতাসে আপেক্ষিক আর্দ্রতা যথেষ্ট বেশি থাকায় ঘামের অস্বস্তি থেকে মুক্তি মিলছে না উত্তরবঙ্গের বিভিন্ন জেলায়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy