আপাতত: সদ্য-নিযুক্ত অস্থায়ী রেজিস্ট্রার ও ফিনান্স অফিসারের সঙ্গে অস্থায়ী উপাচার্য ওমপ্রকাশ মিশ্র। মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে। ছবি: স্বরূপ সরকার।
অস্থায়ী উপাচার্য হিসাবে ‘শর্তাধীনে’ মঙ্গলবার উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয়ে ফের যোগ দিয়েই দু’টি জরুরি কাজ সারলেন ওমপ্রকাশ মিশ্র। অস্থায়ী রেজিস্ট্রার এবং ফিনান্স অফিসার নিয়োগ। এর ফলে, মাস দুয়েক ধরে চলা বিশ্ববিদ্যালয়ের অচলাবস্থা আপাতত কাটল বলেই মনে করা হচ্ছে। শিক্ষা দফতর সূত্রের খবর, ফের অস্থায়ী উপাচার্য হিসেবে ফেরানোর আগে ওমপ্রকাশকে শর্ত দেওয়া হয়, যথাযথ অনুমোদন ছাড়া, বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও জমির হস্তান্তর বা উপযুক্ত কর্তৃপক্ষের সম্মতি ছাড়া, আর্থিক কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না তিনি। এ প্রসঙ্গে ওমপ্রকাশ জানান, রাজ্য যে ভাবে নির্দেশ দেবে, সে ভাবেই সব কিছু হবে। এ দিন কাজে যোগ দিয়ে তিন বলেন, ‘‘আচার্য তথা রাজ্যপালের নির্দেশে আমি তৃতীয় বারের জন্য অস্থায়ী উপাচার্যের দায়িত্ব নিলাম। প্রথম কাজ হিসাবে রেজিস্ট্রার এবং ফিনান্স অফিসারের দায়িত্ব দু’জনকে দিয়েছি। উপাচার্যহীন অবস্থায় যে জটিলতা হচ্ছিল তা কাটাতে সমস্ত ব্যবস্থা নেওয়া হচ্ছে।’’
কলকাতা থেকে এ দিন বিকেল পৌনে ৪টে নাগাদ এসে ওমপ্রকাশ বিশ্ববিদ্যালয়ে পৌঁছে, দায়িত্বভার নেন। দু’মাসের অন্তর্বর্তীকালীন উপাচার্য হিসাবে দায়িত্ব নিয়েই মিনিট দশেকের মধ্যে অস্থায়ী রেজিস্ট্রার এবং ফিনান্স অফিসার নিয়োগও করেন। উপাচার্য ঘোষণা করেন, দু’মাসের জন্য অস্থায়ী রেজিস্ট্রার হলেন আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কাউন্সিলের সচিব নূপুর দাস এবং ফিনান্স অফিসার অর্থনীতির অ্যাসোসিয়েট প্রফেসর অম্লান মজুমদার। ৫৪ দিন উপাচার্যহীন অবস্থায় ফিনান্স অফিসার অবসর নেওয়ায়, বিশ্ববিদ্যালয়ের সমস্ত রকম খরচ দেওয়ার প্রক্রিয়া বন্ধ হয়ে পড়েছিল। এ বার সে জটিলতা কাটতে চলেছে বলেই মনে করা হচ্ছে।
তবে বিশ্ববিদ্যালের কোনও জমি যথাযথ অনুমোদন ছাড়া, হস্তান্তর করতে পারবেন না বলে শর্ত দেওয়া নিয়ে ক্যাম্পাসে আলোচনা শুরু হয়েছে। কারণ, এর আগে দু’দফায় ওমপ্রকাশ অস্থায়ী উপাচার্য থাকার সময় হোটেল ম্যানেজমেন্ট ইনস্টিটিউট গড়তে ক্যাম্পাসের জমি হস্তান্তরের বিরুদ্ধে ছাত্র-শিক্ষক এবং অন্যেরা সকলে মিলে মঞ্চ গড়ে ক্ষোভ-বিক্ষোভ শুরু করেন। পরে, শিক্ষামন্ত্রী ব্রাত্য বসু এসে বিশ্ববিদ্যালয়ের কোনও জমি হস্তান্তর করা হবে না বলে আশ্বাস দিলে পরিস্থিতি শান্ত হয়।
তাঁর নিয়োগে আরোপিত ‘শর্ত’ প্রসঙ্গে ওমপ্রকাশ বলেন, ‘‘আর্থিক বিষয় জড়িত এমন কোনও নীতিগত সিদ্ধান্ত নিতে এবং কোনও রকম জমি হস্তান্তরের ক্ষেত্রে যথাযথ কর্তৃপক্ষের অনুমতি নিয়ে করতে বলা হয়েছে। এটা সকলেই জানেন, যথাযথ কর্তৃপক্ষ বলতে রাজ্য সরকারকে বোঝায়। যেটা করা হয়েছিল, সেটা রাজ্যের মন্ত্রিসভার সিদ্ধান্ত ছিল বলেই বিশ্ববিদ্যালয় কিছু করেনি। রাজ্য যে ভাবে নির্দেশ দেবে, সে ভাবে কাজ হবে।’’ যদিও বিষয়টি নিয়ে শিলিগুড়ির বিজেপি বিধায়ক শঙ্কর ঘোষের মন্তব্য, ‘‘অস্থায়ী উপাচার্যকে যে শর্ত দেওয়া হয়েছে, তা লজ্জার। ‘অনুমতি না নিয়ে জমি হস্তান্তরের বিষয়ে সিদ্ধান্ত নিতে পারবেন না’, এই শব্দবন্ধ দিয়ে শর্ত দেওয়াই লজ্জার।’’ বিশ্ববিদ্যালয়ের শিক্ষক সমিতির সম্পাদক অর্ধেন্দু মণ্ডল বলেন, ‘‘উপাচার্য হিসাবে যোগ দিয়ে অচলাবস্থা কাটাতে ভূমিকা নিয়েছেন এ জন্য তাঁকে (ওমপ্রকাশকে) ধন্যবাদ। তবে জমি হন্তান্তরের বিষয়ে আচার্য তথা রাজ্যপাল যে অবহিত এবং সচেতন, তা জেনে আমরা খুশি। তিনি যেটা ভাল মনে করেছেন, সে ভাবেই নির্দেশ দিয়েছেন।’’
কর্তৃপক্ষ জানান, এ দিনই আন্ডার গ্র্যাজুয়েট কাউন্সিলের প্রধান সচিবের উদ্যোগে কলেজগুলোর অধ্যক্ষদের নিয়ে বৈঠক হয়। পরীক্ষা সংক্রান্ত বিষয়, নতুন শিক্ষানীতির কিছু দিক, তা প্রণয়নের বিষয়, প্রস্তুতি নিয়ে আলোচনা হয়।
উপাচার্য নিয়োগ নিয়ে সম্প্রতি হাই কোর্টের রায়ের পরে, দক্ষিণ দিনাজপুর বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য পদ ছেড়ে দিয়েছেন সঞ্চারী মুখোপাধ্যায়। তাঁর নিয়োগের সময় ‘সার্চ কমিটি’তে বিশ্ববিদ্যালয় মঞ্জুরি কমিশনের (ইউজিসি) প্রতিনিধি ছিল না। অস্থায়ী হিসাবে সেখানে কাউকে নিয়োগ করা হয়নি। গত ১৫ মার্চ থেকে উপাচার্যহীন রয়েছে ওই বিশ্ববিদ্যালয়।
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy