অনন্ত মহারাজের আমন্ত্রণে এর আগে চিলা রায়ের জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানে হাজির হয়েছিলেন রাজ্যের মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায়। দেখা গিয়েছিল বিজেপির সাংসদ-বিধায়কদেরও। এ বারে অবশ্য দেখা গেল না কোনও রাজনৈতিক নেতাকে।
বুধবার কোচবিহারের নিউ বাণেশ্বরের পুষনাডাঙায় নগেন্দ্র রায় ওরফে অনন্ত মহারাজের ডাকে চিলা রায়ের জন্মজয়ন্তী অনুষ্ঠানের আয়োজন করা হয়। সেই মঞ্চে আমন্ত্রিত কোনও রাজনৈতিক ব্যক্তি হাজির ছিলেন না। প্রশ্ন উঠেছে, রাজনৈতিক দলগুলির কাছে কি অনন্তের গুরুত্ব কমেছে? তা মানতে চাননি গ্রেটার কোচবিহার পিপলস অ্যাসোসিয়েশনের হরিহর দাস। তিনি বলেন, ‘‘রাজনৈতিক কোনও নেতাকেই অনুষ্ঠানে ডাকা হয়নি। যাঁরা প্রশাসনিক পদে রয়েছেন তাঁদের কয়েক জনকে আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। সবার পক্ষে সবসময় উপস্থিত থাকা সম্ভব হয় না। তবে প্রচুর মানুষ উপস্থিত হয়েছেন। দেশের বিভিন্ন প্রান্ত থেকে গুরুত্বপূর্ণ ব্যক্তিরাও এসেছিলেন।’’
গ্রেটারের প্রধান নগেন্দ্র রায় ওরফে অনন্ত মহারাজ বিজেপির রাজ্যসভার সাংসদ। বিজেপি সূত্রে জানা গিয়েছে, গত লোকসভা নির্বাচনের সময় থেকে তাঁর সঙ্গে বিজেপির সম্পর্ক ভাল যাচ্ছে না। কোচবিহার লোকসভা আসনে বিজেপির প্রার্থী নির্বাচন নিয়ে ক্ষোভ প্রকাশ করেন তিনি। এ ছাড়া তাঁকে বিজেপিতে গুরুত্ব দেওয়া হয় না বলেও অভিযোগ আনেন। এমন অবস্থায় গত লোকসভা নির্বাচনে কোচবিহার বিজেপি প্রার্থীর পরাজিত হন। জয়ী হয় তৃণমূল। তার পরে মুখ্যমন্ত্রী মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় অনন্ত মহারাজের বাড়িতেও গিয়েছিলেন। স্বাভাবিক ভাবেই এ বারে চিলা রায়ের জন্মজয়ন্তীর মঞ্চে অনন্তের পাশে কাকে দেখা যায় তা নিয়ে উৎসাহ তৈরি হয়। বুধবার অবশ্য অনন্তের পাশে কাউকে দেখা যায়নি।
সংগঠন সূত্রে জানা গিয়েছে, আগে অনন্তের অনুষ্ঠানে বিজেপির কোচবিহারের সাংসদ-বিধায়কদের আমন্ত্রণ করা হয়েছিল। এ বারে অবশ্য কাউকে আমন্ত্রণ করা হয়নি। তৃণমূলের সাংসদ-বিধায়কদেরও আমন্ত্রণ জানানো হয়নি। স্বাভাবিক ভাবেই গ্রেটারের দাবি, স্থানীয় সাংসদ-বিধায়কদের সেখানে না-থাকাই স্বাভাবিক। এ দিনের অনুষ্ঠান মঞ্চ থেকে ফের কোচবিহারকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করার দাবিতে সরব হন অনন্ত মহারাজ। তিনি কার্যত কেন্দ্রীয় সরকারের সমালোচনা করেন। তিনি বলেন, ‘‘বার বার বলার পরেও কোচবিহারকে কেন্দ্রশাসিত অঞ্চল করা হয়নি।’’ সেই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আমি একজন সাংসদ অথচ আমার সঙ্গে কথা বলতে চায় না।’’ কারা কথা বলতে চান না তা নিয়ে অবশ্য তিনি স্পষ্ট কিছু জানাননি।
এ দিন কোচবিহারের কদমতলায় গ্রেটারের আর এক নেতা বংশীবদন বর্মণের আয়োজনে চিলা রায়ের জন্মদিন পালন করা হয়।
এ ছাড়া কোচবিহার পুরসভার সামনে ও চকচাকায় চিলা রায়ের মূর্তিতে মালা দিয়ে শ্রদ্ধা জানায় একাধিক সংগঠন।
(এই প্রতিবেদনটি আনন্দবাজার পত্রিকার মুদ্রিত সংস্করণ থেকে নেওয়া হয়েছে)