অভীক দাস। — নিজস্ব চিত্র।
ভিতর থেকে বন্ধ পড়ার ঘর। দরজা ভেঙে সেই ঘর থেকে বিদ্যুতের তার জড়ানো অবস্থায় উদ্ধার করা হল এক ছাত্রের মৃতদেহ। ঘটনাটি উত্তর দিনাজপুরের রায়গঞ্জের। মৃত অভীক দাস সারদা বিদ্যামন্দির নামে স্থানীয় একটি স্কুলের দ্বাদশ শ্রেণির বিজ্ঞান বিভাগের ছাত্র ছিল। ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।
রায়গঞ্জের উকিলপাড়ার বাসিন্দা ছিল অভীক। তার বাবা অশোক দাস রায়গঞ্জ বিশ্ববিদ্যালয়ের অঙ্ক বিভাগের অধ্যাপক। মা শিক্ষিকা। রবিবার অভীকের বাবা এবং মা বালুরঘাটে একটি বিয়ের অনুষ্ঠানে গিয়েছিলেন। বাড়িতে ঠাকুমার সঙ্গে ছিল অভীক। অশোক জানিয়েছেন, রবিবার অনেক রাতে বাড়িতে ফিরে ছেলের কোনও সাড়াশব্দ পাননি তাঁরা। এর পর তাঁরা অভীকের ঘরে গিয়ে দেখতে পান ভিতর থেকে দরজা বন্ধ। অশোক আরও জানিয়েছেন, অভীককে অনেক ডাকার পরেও সে দরজা খোলেনি। এর পর তাঁরা দরজা ভেঙে ঘরে ঢুকে অভীককে মৃত অবস্থায় পান। অশোক জানিয়েছেন, সেই সময় অভীকের শরীরের নানা জায়গায় বৈদ্যুতিক তার জড়ানো ছিল। খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পুলিশ পৌঁছয়। মৃতদেহ উদ্ধার করে ময়নাতদন্তের জন্য পাঠানো হয়েছে। সেইসঙ্গে অভীকের ঘরটিও সিল করে দেওয়া হয়েছে।
প্রতিবেশীরা জানিয়েছেন, বরাবরই বিজ্ঞান নিয়ে গবেষণা করার দিকে আগ্রহ ছিল অভীকের। আগুন, বিদ্যুৎ নিয়ে সে এর আগেও নানা পরীক্ষানিরীক্ষা চালিয়েছিল বলে জানিয়েছেন তার বাবা। সেই আগ্রহই তার প্রাণ কাড়ল বলে মনে করছেন প্রতিবেশীরা। অশোকের বন্ধু টিঙ্কু ভট্টাচার্য বলেন, ‘‘অভীকের মৃত্যুর মধ্যে কোনও রহস্য নেই। ছেলেটির প্রচণ্ড কৌতূহল ছিল। ধূমপান করলে কী হয়, পেসমেকার বসালে কী হয়— সব ব্যাপারে ওর কৌতূহল ছিল। এগুলি ওর মাথার মধ্যে ঘুরত সব সময়। পড়াশোনায় খুব ভাল ছেলে ছিল। কেন যে ও এমন করতে গেল তা জানি না। দুর্ঘটনার জেরেই ওই মৃত্যু হয়েছে বলে আমার মনে হয়।’’
সোমবার মৃত্যুর খবর চাউর হতেই আত্মীয়-পরিজন, প্রতিবেশী, অশোকের সহকর্মী এবং অভীকের স্কুলের শিক্ষকরা ভিড় করেন তার বাড়িতে। তার মৃতদেহের বুকের অংশে দু’দিকে পোড়া দাগ রয়েছে। মনে করা হচ্ছে, সে নিজের বুকেই তারের মাধ্যমে বিদ্যুৎ সংযোগ ঘটিয়েছিল। তার জেরেই তার মৃত্যু হয়েছে বলে প্রাথমিক অনুমান তদন্তকারীদের। মারাত্মক পরীক্ষা করার জেরেই মৃত্যু না কি এর পিছনে ভিন্ন কোনও রহস্য রয়েছে তা খতিয়ে দেখছে রায়গঞ্জ থানার পুলিশ।
এলাকায় এবং স্কুলে মেধাবী ছাত্র হিসাবে সুনাম ছিল অভীকের। তার মৃত্যুতে শোকের ছায়া নেমেছে এলাকায়। অভীকের স্কুল সারদা বিদ্যামন্দিরের অধ্যক্ষ রাজবলী পাল বলেন, ‘‘এটা মর্মান্তিক ঘটনা। আমাদের স্কুলে ও সপ্তম শ্রেণিতে ভর্তি হয়েছিল। কখনও কেউ ওর বিরুদ্ধে কোনও নালিশ করেনি। ও পড়াশোনায় অত্যন্ত ভাল এবং শান্ত ছেলে। ওর বিজ্ঞানে দারুণ আগ্রহ ছিল।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy