প্রতীকী ছবি।
কাঁধে স্কুলব্যাগ। পড়তে যাচ্ছিল একাদশ শ্রেণির ছাত্রীটি। কিন্তু আচমকাই চিৎকার করে দু’হাতে মুখ ঢেকে বসে পড়ল সে। পথচলতি মানুষ কিছু বুঝে ওঠার আগেই তাদের পাশ দিয়ে দ্রুত গতিতে বাইক নিয়ে বেরিয়ে গেলেন এক যুবক।
কাছে গিয়ে দেখা গেল ছাত্রীর গাল বেয়ে রক্ত ঝড়ছে। ছাত্রীই বলল, তার মুখে ব্লেড মেরে পালিয়েছে ওই যুবক। রবিবার সকালে মালদহের চাঁচল শহরের তরলতলা এলাকার এই ঘটনায় আতঙ্ক ছড়িয়েছে পুরো শহরেই।
যদিও বাসিন্দাদের একাংশ জানালেন, শহরে ইভটিজিংয়ের ঘটনা নতুন কিছু নয়। স্কুলে বা টিউশন পড়তে যাওয়ার সময় ছাত্রীদের উত্যক্ত করার ঘটনাও হামেশাই ঘটছে বলে অভিযোগ। কিন্তু এ দিন যে ভাবে দিনের আলোয় সবার সামনে ওই ছাত্রী আক্রান্ত হলেন তাতে শহরজুড়েই আতঙ্ক ছড়িয়েছে। প্রশ্ন উঠছে শহরে মেয়েদের নিরাপত্তা নিয়েও। ঘটনার পর ছাত্রী নিজেই টোটোয় করে থানায় হাজির হন। পরে চাঁচল সুপার স্পেশ্যালিটি হাসপাতালে ভর্তি করানো হলেও প্রাথমিক চিকিৎসার পর তাঁকে ছেড়ে দেওয়া হয়। আর অভিযুক্তের বাড়িতে হানা দিলেও তাঁর সন্ধান মেলেনি বলেই পুলিশ জানিয়েছে।
চাঁচলের এসডিপিও সজলকান্তি বিশ্বাস বলেন, ‘‘অভিযুক্তকে ধরতে সব রকম চেষ্টা চলছে। গোটা ঘটনার তদন্ত শুরু করেছে পুলিশ।’’ পুলিশ জানায়, ছাত্রীর সঙ্গে যুবকের পূর্ব পরিচয় ছিল। তবে তাঁদের মধ্যে প্রেমের সম্পর্ক ছিল কি না—তা নিয়ে পুলিশ কিছু জানায়নি। তবে কেন প্রকাশ্যে এমন বেপরোয়া হামলা চালাল অভিযুক্ত, তাও খতিয়ে দেখা হচ্ছে বলে জানায় তারা।
পুলিশ জানায়, চাঁচলের এক গ্রাম থেকে শহরে টিউশন পড়তে আসেন ওই ছাত্রী। এ দিনও তরলতলা মোড় থেকে বারগাছিয়ার দিকে যাচ্ছিলেন। কিছুটা সামনেই যাচ্ছিল তার এক বান্ধবীও। তরলতলা ট্র্যাফিক মোড় থেকে কিছুটা এগিয়েই তার পথ আটকায় মামুন আলি নামে ওই যুবক। ছাত্রীটি পাশ কাটিয়ে যাওয়ার চেষ্টা করতেই আচমকা তার মুখ লক্ষ করে মামুন ব্লেড চালিয়ে দেয় বলে খবর। ব্লেডের আঘাতে তার বাঁ দিকের গালের অনেকটাই কেটে যায়।
পুলিশ জানায়, মামুনের বাড়ি চাঁচলের মুলাইবাড়িতে। বাবা নেই, থাকেন দাদা আর মা’র সঙ্গে। তবে বছর তিনেক হল তিনি তিনি ভিন্রাজ্যে গাড়ি চালানোর কাজ করেন তিনি। পরশুদিনই বাড়ি ফিরেছেন। তাঁর নিজের বাইকও নেই। কারও বাইক নিয়ে এসে পরিকল্পনা করেই হামলাটি চালানো হয় বলে সন্দেহ পুলিশের।
ঘটনার কথা জেনে ভেঙে পড়েছেন অভিযুক্ত মামুনের বাড়ির লোকজনও। তাঁর দাদা জাহির আলি বলেন, ‘‘মেয়েটির সঙ্গে ওর কোনও সম্পর্ক ছিল কী না, জানি না। ও যে এমন করতে পারে ভাবতেই পারছি না।’’
যুবকের সঙ্গে প্রেমের কোনও সম্পর্ক ছিল বলে মানতে চাননি ছাত্রীর পরিবার। এক সদস্যের কথায়, ‘‘ছেলেটিই ওকে উত্যক্ত করত। প্রেমের প্রস্তাবে সায় না দেওয়াতেই এ ভাবে হামলা করল।’’
ঘটনাস্থল থেকে ঢিল ছোঁড়া দূরত্বেই বাড়ি ব্লক তৃণমূল সভাপতি সচ্চিদানন্দ চক্রবর্তীর। তিনি বলেন, ‘‘প্রকাশ্যে যে এমন ঘটতে পারে ভাবতেই পারছি না। পুলিশ কঠোর ব্যবস্থা নিক।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy