Advertisement
০৯ অক্টোবর ২০২৪
Hunger Strike of Junior Doctors

উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল থেকে মেদিনীপুর, চিকিৎসকদের ‘গণইস্তফা’র আঁচ ছড়িয়ে পড়ছে কলকাতার বাইরেও

জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে অন্তত ৫০ জন সিনিয়র চিকিৎসক ‘গণইস্তফা’ দিয়েছেন। এই সংখ্যাটি আরও বাড়তে পারে বলেও জানা গিয়েছে।

(বাঁ দিকে) ‘ইস্তফাপত্রে’ স্বাক্ষর করছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসকেরা। (ডান দিকে) ‘গণইস্তফা’পত্র।

(বাঁ দিকে) ‘ইস্তফাপত্রে’ স্বাক্ষর করছেন উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসকেরা। (ডান দিকে) ‘গণইস্তফা’পত্র। নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
শিলিগুড়ি, মেদিনীপুর শেষ আপডেট: ০৯ অক্টোবর ২০২৪ ১৪:১৮
Share: Save:

চিকিৎসকদের ‘গণইস্তফা’র আঁচ কলকাতা ছাড়িয়ে পৌঁছে গেল জেলাগুলিতেও। আরজি কর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের পর এ বার উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে ‘গণইস্তফা’ দিলেন সিনিয়র চিকিৎসকেরা। প্রস্তুতি চলছে মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজেও।

জুনিয়র ডাক্তারদের আন্দোলনকে সমর্থন জানিয়ে উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজে অন্তত ৫০ জন সিনিয়র চিকিৎসক ‘গণইস্তফা’ দিয়েছেন। এই সংখ্যাটি আরও বাড়তে পারে বলেও জানা গিয়েছে। ফলে এই তালিকাটি ক্রমশ দীর্ঘ হচ্ছে। সিনিয়র চিকিৎসকদের ‘গণইস্তফা’ শুরু হয় আরজি কর মেডিক্যাল কলেজ থেকে। মঙ্গলবার একসঙ্গে ৫০ জন সিনিয়র চিকিৎসক ‘গণইস্তফা’ দেন। বুধবার সেই পথেই হাঁটল কলকাতা মেডিক্যাল কলেজ, উত্তরবঙ্গ এবং মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র ডাক্তাররা।

ষষ্ঠীর সকাল থেকেই উত্তরবঙ্গ মেডিক্যাল কলেজ ও হাসপাতালের বিভিন্ন বিভাগের বিভগীয় প্রধান-সহ ডাক্তাররা ‘গণইস্তফা’পত্রে স্বাক্ষর করেন। তবে এখনও চলছে স্বাক্ষর গ্রহণ প্রক্রিয়া। অস্থিবিভাগের বিভাগীয় প্রধান পার্থসারথি সরকার বলেন, ‘‘ছেলেমেয়েগুলির মুখের দিকে তাকিয়ে আমরা এই পথে হাঁটতে বাধ্য হলাম। এত ঘণ্টা পেরিয়ে যাওয়ার পরেও সরকারের পক্ষ থেকে কোনও পদক্ষেপ করা হয়নি। অন্য দিকে, সরকার যদি আলাদা আলাদা ভাবে ইস্তফাপত্র চায় সেটাও আমরা দিয়ে দেব।’’ তিনি আরও বলেন, ‘‘আমরা বিভিন্ন সময় যে সুনাম অর্জন করেছি তা আমাদের যোগ্যতার বলে। কাজেই আমরা ইস্তফা দিয়ে কোথাও পালিয়ে যাচ্ছি না। পাশাপাশি পরিষেবাও বন্ধ নেই। ইস্তফাপত্র স্বাক্ষর করে কাজে ফিরছেন সকলেই। যাঁরা অনশনমঞ্চে রয়েছেন তাদের কিছু হয়ে গেলে তার দায় কে নেবে। সরকারের কাছে আমাদের অনুরোধ বড় পদক্ষেপের আগে সরকার তাঁদের দাবি পূরণ করুক।’’

মাইক্রোবায়োলজি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান ডাক্তার অরুণাভ ঘোষ বলেন, ‘‘এত দিন ধরে এই বিক্ষোভ চলছে তার কোন সমাধান নেই। এটা কি হচ্ছে? কোথায় সমাজনিয়ন্ত্রক রক্ষক বা উচ্চপদস্থ আমলারা। এটার খুব তাড়াতাড়ি সুরাহা হওয়া প্রয়োজন। তিন দিন হয়ে গেল। কিছু একটা ঘটে গেলে এর দায়িত্ব কে নেবে।’’

মঙ্গলবারই কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সিনিয়র চিকিৎসকেরা হুঁশিয়ারি দিয়েছিলেন, ২৪ ঘণ্টার মধ্যে জুনিয়র ডাক্তারদের দাবি পূরণ না হলে ‘গণইস্তফা’ দেবেন। আরজি কর, কলকাতা মেডিক্যাল কলেজের সঙ্গে এ বার সেই তালিকায় জুড়ল জেলার আরও দুই মেডিক্যাল কলেজ। একটি উত্তরবঙ্গ, অন্যটি মেদিনীপুর মেডিক্যাল কলেজ। কলকাতা ছাড়িয়ে ‘গণইস্তফা’র আঁচ জেলার মেডিক্যাল কলেজগুলিতে ছড়িয়ে পড়ায় নবান্নের উপর চাপ বাড়ল বলে মনে করা হচ্ছে। যদিও সূত্রের খবর, রাজ্য প্রশাসন মনে করছে, এটা কোনও ইস্তফাই নয়। কোনও সরকারি কর্মী এই ভাবে ইস্তফা দিতে পারেন না। তার আলাদা প্রক্রিয়া রয়েছে।

গত শনিবার থেকে ‘ওয়েস্ট বেঙ্গল জুনিয়র ডক্টরস ফ্রন্ট’-এর সাত জন প্রতিনিধি ১০ দফা দাবিতে আমরণ অনশন করছেন ধর্মতলায়। প্রথমে ছ’জন অনশনে বসেছিলেন। পরে আরজি করের জুনিয়র ডাক্তার অনিকেত মাহাতোও যোগ দেন আমরণ অনশন কর্মসূচিতে। জুনিয়র ডাক্তারদের দাবিদাওয়াগুলিকে শুরু থেকেই সমর্থন জানিয়ে এসেছেন সিনিয়র ডাক্তারেরা। জুনিয়র ডাক্তারদের কর্মবিরতির সময়ে রোগীর চাপ সামাল দিয়েছেন তাঁরাই। প্রয়োজন অনুযায়ী অতিরিক্ত সময় কাজ করেছেন। সিনিয়রদের পরামর্শেই কর্মবিরতি প্রত্যাহার করে আন্দোলনের অন্য পন্থা খুঁজতে আলোচনা করেছেন জুনিয়রেরা। ধর্মতলায় অনশনকারীদের পাশেও প্রতীকী অনশনে বসতে দেখা গিয়েছে সিনিয়র ডাক্তারদের।

অন্য বিষয়গুলি:

Mass resignation Doctors
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE