প্রতীকী ছবি।
ছেলেধরা সন্দেহে জনতার হাতে প্রহৃত হওয়ার পর অপহরণের অভিযোগে গ্রেফতার হওয়া অজয় বাঁসফোর জামিন পেলেন। মঙ্গলবার আলিপুরদুয়ারের আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করেছে।
পুলিশ সূত্রের খবর, দিন কয়েক আগে নিজের সাত বছরের শিশুপুত্রকে নিয়ে ঝাড়খণ্ডের দেওঘরে মন্দিরে যান কর্মসূত্রে অসমে থাকা অজয়। কিন্তু ফেরার সময় অসমে না গিয়ে ট্রেন থেকে আলিপুরদুয়ারে নেমে পড়েন তিনি। অভিযোগ, ২২ জুলাই সকালবেলায় আলিপুরদুয়ার জংশনের ভোলারডাবরি এলাকায় ছেলেধরা সন্দেহে স্থানীয় বাসিন্দারা তাঁকে গণপিটুনি দেন। জংশন ফাঁড়ির পুলিশ দ্রুত ঘটনাস্থলে গিয়ে তাঁকে উদ্ধার করে হাসপাতালে নিয়ে যায়। প্রাথমিক চিকিৎর পর হাসপাতাল থেকে ছেড়ে দেওয়া হলে অজয়ের ইচ্ছেতেই তাঁকে ও তাঁর ছেলেকে শিলিগুড়িগামী ট্রেনে তুলে দেয় পুলিশ।
অভিযোগ, ওই দিন বিকেলে বীরপাড়ার দলগাঁও স্টেশনেও ফের একবার ছেলেধরা সন্দেহে তাঁকে বেধড়ক মারধর করে জনতা। ঘটনাস্থল থেকে আরপিএফ তাঁকে উদ্ধার করে রেল পুলিশের হাতে তুলে দেয়। তবে দলগাঁও স্টেশন থেকে নিখোঁজ হয়ে যায় শিশুটি।
সকালে ‘নির্দোষ’ হিসাবে ছাড়া পাওয়া অজয়কে রাতে অপহরণকারী হিসাবে গ্রেফতার করে রেল পুলিশ। তাকে সাতদিনের জন্য নিজেদের হেফাজতেও নেয় রেল পুলিশ। জেলা পুলিশ ও রেল পুলিশের দু ধরনের ভূমিকা নিয়ে সমালোচনায় সরব হন অনেকেই। জেলাজুড়ে এ নিয়ে হইচই পড়ে। এরই মধ্যে অবশ্য জলপাইগুড়ির সরকারি কোরক হোমে অজয়ের সাত বছরের ছেলের সন্ধান পান তাঁর বাড়ির লোকেরা।
আদালত সূত্রের খবর, সাতদিনের পুলিশ হেফাজতের মেয়াদ শেষ হওয়ার পর মঙ্গলবার অজয়কে আলিপুরদুয়ার আদালতে পেশ করা হয়। অজয় যে নির্দোষ, তা বোঝাতে তাঁর আইনজীবী রিঙ্কু কর্মকার আদালতে বেশ কিছু তথ্যপ্রমাণ পেশ করেন। তবে অজয়ের জামিনের আর্জির বিরোধিতা করেন সরকার পক্ষের আইনজীবী মদনগোপাল সরকার। তবে দু’পক্ষের সাওয়াল শুনে শেষ পর্যন্ত আদালত অজয়ের জামিন মঞ্জুর করে। আইনজীবী রিঙ্কু কর্মকার বলেন, ‘‘অজয় যে নির্দোষ এবং ওকে অপহরণের মিথ্যা মামলায় ফাঁসানো হয়েছে সেটা আমরা তথ্য প্রমাণ দিয়ে আদালতকে বোঝাতে পেরেছি। আদালত তাঁর জামিন মঞ্জুর করায় আমরা খুশি।’’
ছেলেধরা গুজবে গণপিটুনির ঘটনা ঠেকাতে আলিপুরদুয়ারে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার দাবি তুললেন জেলার বিজেপি নেতারা। দলের জেলা সভাপতি গঙ্গাপ্রসাদ শর্মা বলেন, ‘‘জেলার বিভিন্ন জায়গায় যেভাবে ছেলেধরা গুজবে নিরীহ মানুষদের উপর অত্যাচার চলছে, তা অত্যন্ত দুর্ভাগ্যজনক। পুলিশ প্রশাসনের উচিত, সর্বদলীয় বৈঠক ডেকে প্রত্যেকটি রাজনৈতিক দলের নেতা-কর্মীদের এ ধরনের ঘটনায় রুখতে বিভিন্ন কর্মসূচিতে যুক্ত করা।’’ যদিও তাঁর এই প্রস্তাব খারিজ করে দিয়েছেন জেলার পুলিশ কর্তারা। পুলিশ সুপার নগেন্দ্রনাথ ত্রিপাঠী বলেন, ‘‘এটা রাজনৈতিক সমস্যা নয়। এটা একটা সামাজিক সমস্যা। তাই বিষয়টি নিয়ে সর্বদলীয় বৈঠক ডাকার কোনও ব্যাপার নেই। তবে যে কোনও রাজনৈতিক দল নিজেদের উদ্যোগে গুজবের বিরুদ্ধে প্রচারে নামতেই পারে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy