Advertisement
৩০ অক্টোবর ২০২৪
Gourbanga University

মালদহের বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ছাত্রীকে কোপ! আত্মহত্যার চেষ্টা যুবকের, দু’জনেই হাসপাতালে

ছাত্রীকে কোপ মারার পর নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করলেন অভিযুক্ত যুবক। দু’জনকেই রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজ হাসপাতালে ভর্তি করানো হয়েছে।

কলেজের ক্যাম্পাসে ছাত্রীকে কোপ মারার অভিযোগ প্রাক্তনীর বিরুদ্ধে।

কলেজের ক্যাম্পাসে ছাত্রীকে কোপ মারার অভিযোগ প্রাক্তনীর বিরুদ্ধে। — নিজস্ব চিত্র।

আনন্দবাজার অনলাইন সংবাদদাতা
মালদহ শেষ আপডেট: ২৫ জুলাই ২০২৪ ১৪:৪১
Share: Save:

মালদহের গৌড়বঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় ক্যাম্পাসে ঢুকে এক ছাত্রীকে ছুরির কোপ মারার অভিযোগ উঠল এক যুবকের বিরুদ্ধে। বিশ্ববিদ্যালয়ে ক্লাস চলাকালীন এই ঘটনা হয়েছে। ছাত্রীকে কোপ মারার পর নিজেও আত্মহত্যার চেষ্টা করেন অভিযুক্ত যুবক। দু’জনকেই রক্তাক্ত অবস্থায় উদ্ধার করে মালদহ মেডিক্যাল কলেজে ভর্তি করানো হয়েছে। বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, যুবক সেখানকার প্রাক্তনী।

বিশ্ববিদ্যালয় সূত্রে জানা গিয়েছে, বিজ্ঞান বিভাগের বিল্ডিংয়ে বৃহস্পতিবার ক্লাস চলছিল। তখনই সেখানকার করিডোরে আচমকা ওই ছাত্রীকে অভিযুক্ত ছাত্র কোপ মারেন বলে অভিযোগ। আক্রান্ত ছাত্রী গণিত বিভাগের। অভিযুক্ত ছাত্র বিশ্ববিদ্যালয়ের পদার্থবিদ্যা বিভাগে পড়াশোনা করতেন। বিশ্ববিদ্যালয়ের করিডোরে চাপ চাপ রক্ত পড়ে থাকতে দেখা গিয়েছে। নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক এক ছাত্রী দাবি করেছেন, বৃহস্পতিবার গণিত বিভাগে পরীক্ষা চলছিল। তখনই এই ঘটনা ঘটেছে। তিনি জানিয়েছেন, আক্রান্ত ছাত্রী অসম থেকে এসেছিলেন। ছাত্রীর চিৎকার শুনে ঘটনাস্থলে ছুটে গিয়েছিলেন লতিফুল ইসলাম নামের এক ব্যক্তি। তিনি বিজ্ঞান বিভাগের বিল্ডিংয়ের কাছেই ছিলেন। তাঁর কথায়, ‘‘চিৎকার শুনতে পেলাম। আমরা একসঙ্গে অনেকেই ছুটে গিয়ে দেখি ছেলেটি মেয়েটির উপর বসে কোপ দিচ্ছেন। সেই সঙ্গে নিজের গলাতেও কোপ বসাচ্ছেন। আমরা বার বার ছাড়তে বলি। কিন্তু ছেলেটির হাতে ছুরি থাকায় এগোতে পারিনি আমরা।’’ লতিফুল জানিয়েছেন, এর পর এক জন ওই বিল্ডিংয়ের অন্য গেট দিয়ে বাঁশ হাতে ঢোকেন। তার পর দূর থেকেই ছেলেটিকে বাঁশ দিয়ে আঘাত করা হয়। লতিফুলের কথায়, ‘‘মার খেয়ে ছেলেটি মেয়েটিকে ছেড়ে দোতলায় চলে যান। সেখানে নিজেকে আবার কোপ দেন।’’

খবর পেয়ে ঘটনাস্থলে পৌঁছন বিশ্ববিদ্যালয়ের মেডিক্যাল দলের সদস্য সুমিতা সরকার। তিনি বলেন, ‘‘খবর পেয়ে এসে দেখি, ওই ছাত্রী রক্তাক্ত অবস্থায় পড়ে রয়েছেন। তার গলায় তুলো চেপে ধরে রক্ত বন্ধের চেষ্টা করি। এর পর নিজের ওড়না ছেলেটির গলায় বেঁধে দিয়েছি, যাতে রক্ত বন্ধ হয়।’’ এর পরেই দু’জনকে হাসপাতালে পাঠানো হয়। সুমিতা জানিয়েছেন, তিনি সঙ্গে যেতে পারেননি। তাঁর কথায়, ‘‘অন্য কেউ অসুস্থ হলে, কী হবে? তাই যেতে পারিনি।’’

বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার (অতিরিক্ত দায়িত্বে) তথা ডেভলপমেন্ট অফিসার রাজীব পুততুণ্ড জানিয়েছেন, বিশ্ববিদ্যালয়ের বিজ্ঞান বিভাগের বিল্ডিংয়ে ঘটেছে এই ঘটনা। অভিযুক্ত যুবক বিশ্ববিদ্যালয়ের প্রাক্তন ছাত্র। তাঁর হাতে একটি ছুরি ছিল বলে শোনা গিয়েছে। রাজীব আরও জানিয়েছেন, যাঁকে কোপানোর অভিযোগ উঠেছে, তিনি এখনও বিশ্ববিদ্যালয়ে পড়াশোনা করছেন। আক্রান্ত ছাত্রী সম্ভবত গণিত বিভাগের।

কী ভাবে বিশ্ববিদ্যালয়ে ঢুকে ছাত্রীর উপর হামলা চালানো হল, সেই নিয়ে উঠেছে প্রশ্ন। বিশ্ববিদ্যালয়ে নিরাপত্তার বিষয়টিও প্রশ্নের মুখে। এই প্রসঙ্গে বিশ্ববিদ্যালয়ের ডেপুটি রেজিস্ট্রার রাজীব বলেন, ‘‘আক্রান্ত ছাত্রী এবং অভিযুক্ত ছাত্র, দু’জনেই আমাদের বিশ্ববিদ্যালয়ের। এখন কী ভাবে ওঁদের জীবন বাঁচানো যায়, সেই বিষয়টাই দেখছি। উপাচার্যও এই বিষয়টি দেখছেন। হঠাৎ করে এই কাণ্ড ঘটে গিয়েছে। আগে দু’জনের জীবনসংশয় কাটুক। তার পর বিষয়টি খতিয়ে দেখা হবে।’’

অন্য বিষয়গুলি:

Gourbanga University stabbed
সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement
Advertisement

Share this article

CLOSE