Advertisement
২৫ নভেম্বর ২০২৪
‘পড়ুয়াদের পাশে আছি’

মমতা: আমরা কারা? ভিড় বলল, নাগরিক

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, শান্তি বজায় রেখেই আন্দোলন চলছে। এবং এই আন্দোলনকে যে দেশের প্রতিটি কোণে নিয়ে যেতে হবে, তা-ও স্পষ্ট করে দিলেন।

মিছিলে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

মিছিলে পড়ুয়ারা। নিজস্ব চিত্র

সৌমিত্র কুণ্ডু
শিলিগুড়ি শেষ আপডেট: ০৪ জানুয়ারি ২০২০ ০৪:৪৬
Share: Save:

তাঁর মিছিলে যে বেশ কয়েকটি কলেজ, বিশ্ববিদ্যালয় থেকে ছাত্রেরা আসবেন, তা বৃহস্পতিবারই জানান দলের নেতারা। শুক্রবার মিছিলের সময়ে মমতা বন্দ্যোপাধ্যায় তাঁদের উদ্দেশেই এগিয়ে আসার ডাক দেন। তিনি বলেন, ‘‘আপনারা, ছাত্ররা আন্দোলন করুন, আমরা পাশে আছি।’’

জামিয়া মিলিয়া বিশ্ববিদ্যালয়ে সিএএ বিরোধিতায় আন্দোলন হওয়ায় ক্যাম্পাসে পুলিশ ঢুকে পড়ুয়াদের পেটানোর অভিযোগ ওঠে। ওই বিশ্ববিদ্যালয়ের নাম না-করে প্রসঙ্গ তুলে নিন্দা করেন মুখ্যমন্ত্রী। যাদবপুর বিশ্ববিদ্যালয়-সহ কলকাতার কলেজগুলিতে এনআরসি এবং সিএএ-র বিরোধিতায় ছাত্র আন্দোলনের প্রতি তাঁর যে সমর্থন রয়েছে, তা বুঝিয়ে দিয়েছেন। মুখ্যমন্ত্রী এ দিন শিলিগুড়িতে মিছিলের সূচনা মঞ্চ থেকে বলেন, ‘‘ছাত্ররা আন্দোলন করলে সেখানে গিয়ে হুমকি দেওয়া হচ্ছে। বিশ্ববিদ্যালয়ের ভিতরে ঢুকে ছাত্রদের পেটানো হচ্ছে। ওদের বাধা দেওয়া হচ্ছে। হস্টেল ছুটি দিয়ে দিচ্ছে। বলছে, এটা হবে না, ওটা করা যাবে না। এ রকম কী কখনও করা যায়?’’

মুখ্যমন্ত্রী জানিয়ে দেন, শান্তি বজায় রেখেই আন্দোলন চলছে। এবং এই আন্দোলনকে যে দেশের প্রতিটি কোণে নিয়ে যেতে হবে, তা-ও স্পষ্ট করে দিলেন। দেশের বিভিন্ন রাজ্যে বিভিন্ন ছাত্র সংগঠন ইতিমধ্যেই এনআরসি-র বিরোধিতায় সরব হচ্ছে। রাজনৈতিক দলগুলির পাশাপাশি ছাত্রসমাজকে আরও বেশি করে আন্দোলনমুখী করতে এ দিন ডাক দেন মুখ্যমন্ত্রী। তিনি বলেন, ‘‘সমস্ত রাজনৈতিক দল, স্বেচ্ছাসেবী সংগঠনের পাশাপাশি সমস্ত ছাত্র সংগঠনের কাছে অনুরোধ যে, আপনারা বাইরে বেরিয়ে আসুন। শান্তি বজায় রেখে আন্দোলন করুন। আপনারা এগিয়ে না এলে এরা সমস্ত হিন্দুস্থানকে বরবাদ করে দেবে।’’ একই সঙ্গে তিনি বলেন, ‘‘আজাদিকে বরবাদ করতে দেবেন না। স্বাধীনতা রক্ষা করা আমাদের ধর্ম। আমাদের পরম্পরা, আমাদের কাজ।’’ তাঁর দাবি, এখন দ্বিতীয় স্বাধীনতার যুদ্ধ চলছে। চক্রান্ত, ভাগাভাগি আর দেশের নাগরিক অধিকার কেড়ে নেওয়ার হাত থেকে বাঁচাতে এই লড়াই, বলেন তিনি।

কলকাতা, তার আশপাশের অঞ্চলে ছাত্রেরা যে ভাবে সিএএ এবং এনআরসি-র বিরুদ্ধে পথে নেমেছেন, উত্তরবঙ্গে সে ভাবে নামেননি। তৃণমূল নেতারা অনেকেই ঘরোয়া আলোচনায় এই ঘাটতির কথা মেনেও নিয়েছেন। তা পূরণ করতে এ দিন শিলিগুড়ি এবং জলপাইগুড়ি থেকে ছাত্র-যুবদের মিছিলে আনার প্রস্তুতি নেয় টিএমসিপি। সে লক্ষ্যে তারা যে অনেকাংশে সফল, এ দিন মিছিলে পড়ুয়াদের ভিড় তা স্পষ্ট করে দিয়েছে। মুখ্যমন্ত্রীর বার্তাও ছিল সেই ছাত্র-যুবদের জন্য।

দল সূত্রে খবর, এ দিন মিছিলে শামিল হয়েছেন উত্তরবঙ্গ বিশ্ববিদ্যালয় থেকে শুরু করে শিলিগুড়ি বিভিন্ন কলেজের টিএমসিপি সদস্য সমর্থকেরা। জলপাইগুড়ির আনন্দচন্দ্র কলেজ, মালবাজারের পরিমল মিত্র স্মৃতি মহাবিদ্যালয়, বানারহাট হিন্দি কলেজ, ময়নাগুড়ি কলেজ থেকে আসা পড়ুয়াদেরও মিছিলে পা মেলাতে দেখা গিয়েছে। শিলিগুড়ি, জলপাইগুড়ি দুই জায়গারই দলের যুব সংগঠনের তরফে এ দিন লোক আনা হয়েছিল। ভিড়ের জেরে অনেকে শুরুর জায়গায় পৌঁছতে পারেনি। মাঝ পথে মিছিলে শামিল হন।

শিলিগুড়ির বিজেপি নেতা তথা দলের রাজ্য সাধারণ সম্পাদক রথীন বসু বলেন, ‘‘ছাত্রদের ভুল বোঝাচ্ছেন মুখ্যমন্ত্রী। তবে তাঁরা বোকা নন। দেশের প্রচুর ২০-২৫টি শিক্ষা প্রতিষ্ঠানে বিরোধিতা হচ্ছে। অধিকাংশই পক্ষে। মানুষ ধীরে হলেও বুঝতে পারছে।’’

সবচেয়ে আগে সব খবর, ঠিক খবর, প্রতি মুহূর্তে। ফলো করুন আমাদের মাধ্যমগুলি:
Advertisement

Share this article

CLOSE

Log In / Create Account

We will send you a One Time Password on this mobile number or email id

Or Continue with

By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy