অভিযুক্ত গ্রাম প্রধান সোনামণি সাহা। —নিজস্ব চিত্র।
বছর পাঁচেক আগে বন্যাদুর্গতদের জন্য বরাদ্দ ত্রাণের লক্ষ লক্ষ টাকা আত্মসাতের অভিযোগ উঠেছিল তৃণমূলের পঞ্চায়েত প্রধানের বিরুদ্ধে। এ বিষয়ে পদক্ষেপে প্রশাসনের গড়িমসির অভিযোগে আদালতের দ্বারস্থ হয় কংগ্রেস। মাস দুয়েক আগে আদালতের নির্দেশে মালদহের হরিশ্চন্দ্রপুরের বরুই গ্রাম পঞ্চায়েতের অভিযুক্ত প্রধান সোনামণি সাহার বিরুদ্ধে এফআইআর করে প্রশাসন। তবে অভিযুক্তকে ধরতে পারেনি পুলিশ। এ বার ফেরার অভিযুক্তকে ধরতে হুলিয়া জারি করল আদালত। সোমবার আদালতের ওই নির্দেশ অভিযুক্ত প্রধানের বাড়িতে ঝুলিয়ে দেয় পুলিশ।
জেলা প্রশাসন ও পঞ্চায়েত সূত্রে খবর, ২০১৭ সালে মহকুমা জু়ড়ে ভয়াবহ বন্যায় ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ৭০ হাজার এবং আংশিক ক্ষতিগ্রস্থদের জন্য ৩,৩০০ টাকা করে ক্ষতিপূরণ ঘোষণা করেছিল প্রশাসন। বরুইয়ে ক্ষতিগ্রস্থ হয়েছিলেন ৭ হাজার ৩৯৪ জন। কিন্তু ত্রাণের তালিকায় নাম থাকলেও সে টাকা পাননি বলে দুর্গতদের অনেকেই প্রশাসনের দ্বারস্থ হয়েছিলেন। তদন্তে নেমে প্রশাসন জানতে পারে, তালিকায় দুর্গতদের নামের পাশে অন্য অ্যাকাউন্ট দেখিয়ে দিয়ে ত্রাণের টাকা তোলা হয়েছে। এই ঘটনার তদন্তে ত্রাণের ৭৬ লক্ষ টাকা আত্মসাৎ করা হয়েছে বলে অভিযোগ ওঠে। এর পর প্রশাসনিক নিষ্ক্রিয়তার অভিযোগে মামলা করেন পঞ্চায়েতে বিরোধী দলনেতা কংগ্রেসের আব্দুল মান্নান। সোনামণির বিরুদ্ধে প্রতারণা, বিশ্বাসভঙ্গের মতো জামিন অযোগ্য একাধিক ধারায় মামলা হতেই গা-ঢাকা দেন তিনি। কিন্তু প্রধানকে ‘নিখোঁজ’ বলে আদালতে জানায় পুলিশ। তার পরেই তাঁর বিরুদ্ধে হুলিয়া জারি করে আদালত। এক মাসের মধ্যে আত্মসমর্পণ না করলে প্রধানের সম্পত্তি বাজেয়াপ্ত করার মতো প্রক্রিয়াও শুরু হতে পারে বলে পুলিশ ও আদালত সূত্রে খবর। হুলিয়া জারির পাশাপাশি ফেরার প্রধানের বাড়ির সামনে পুলিশও মোতায়েন করা হয়েছে।
শাসকদলের প্রধানের হুলিয়া জারি হতেই শাসক ও বিরোধীদের মধ্যে জোর তরজা শুরু হয়েছে। বন্যাত্রাণের টাকা লুঠের অভিযোগে হরিশ্চন্দ্রপুর-১ পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি কোয়েল দাস-সহ আরও কয়েক জনের বিরুদ্ধে পুলিশে অভিযোগ জানানো হয়েছে। ওই সভাপতিও অধরা। তাঁর বিরুদ্ধেও সোনামণির মতোই আইনি প্রক্রিয়া শুরু হতে পারে বলে পুলিশ সূত্রে খবর। হরিশ্চন্দ্রপুর-১ ব্লক তৃণমূল সভাপতি মানিক দাস বলেন, ‘‘আমাদের দল দুর্নীতি সমর্থন করে না। বিষয়টি আদালতের বিচারাধীন। ফলে আলাদা করে বলার কিছু নেই। আইন আইনের পথেই চলবে।’’ যদিও বিজেপি-র মণ্ডল সভাপতি রূপেশ আগরওয়াল বলেন, ‘‘শুধু একটি গ্রাম পঞ্চায়েতের প্রধান বা পঞ্চায়েত সমিতির সভাপতি নয়। দুর্নীতির যথাযথ তদন্ত হলে তৃণমূল নেতা, জনপ্রতিনিধিদের অনেককেই জেলে থাকতে হবে। প্রশাসন শাসকদলের নেতা, জনপ্রতিনিধিদের বাঁচানোর চেষ্টা করলেও আদালতের উপরে আমাদের পূর্ণ আস্থা রয়েছে।’’
Or
By continuing, you agree to our terms of use
and acknowledge our privacy policy
We will send you a One Time Password on this mobile number or email id
Or Continue with
By proceeding you agree with our Terms of service & Privacy Policy